Site Logo | সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ব্রেকিং নিউজ

রাঙামাটি জেলা ক্রীড়া সংস্থার নতুন এ্যাডহক কমিটি: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ

রাঙামাটি জেলা ক্রীড়া সংস্থার নতুন এ্যাডহক কমিটি: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ
Advertisement

পার্বত্য চট্টগ্রামের তরুণ সমাজের প্রাণের স্পন্দন খেলাধুলা। পাহাড়ি-বাঙালি মিলে এ জেলার ছেলে-মেয়েরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন খেলায় নিজেদের প্রতিভা দেখিয়ে আসছে। কিন্তু অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা, পরিকল্পনার ঘাটতি আর আর্থিক সংকটে রাঙামাটির ক্রীড়াঙ্গন অনেক সময় পিছিয়ে থেকেছে। এই প্রেক্ষাপটে আজ রবিবার বিকেলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হলো রাঙামাটি জেলা ক্রীড়া সংস্থার নতুন এ্যাডহক কমিটির প্রথম সভা।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ (মারুফ)। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ অনুযায়ী গঠিত এ্যাডহক কমিটির সদস্যরা হলেন— মো. সফিকুল ইসলাম চৌধুরী, নির্মল বড়ুয়া মিলন, আবু সাদাত মো. সায়েম, মোহাম্মদ আলী পাটোয়ারী, সৈয়দ হেফাজত-উল-বারী (সবুজ), হৃদয় চাকমা এবং জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা ও সদস্য সচিব হারুন অর রশিদ।

প্রথম সভার আলোচ্যসূচি থেকেই বোঝা যায় জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাজ কতটা গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে। খেলোয়াড়দের জন্য হোস্টেল নির্মাণ, দোকান ভাড়ার চুক্তি নবায়ন, পুকুর লিজ, সংস্থার কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি এসবের পাশাপাশি ক্রীড়া কার্যক্রমের গতি বাড়ানোর ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে খেলোয়াড় হোস্টেল নির্মাণ বাস্তবায়িত হলে বাইরের উপজেলা ও প্রত্যন্ত এলাকার প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা আরও ভালোভাবে প্রশিক্ষণ ও সুযোগ পাবেন।

Advertisement

সভায় সহযোগিতা ও মতামত দিতে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রুহুল আমীন হওলাদার, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সহসভাপতি ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ মামুন, জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি আবুল বাসেত অপু, ছদক ক্লাবের সভাপতি প্রীতিময় চাকমা, ছাত্র প্রতিনিধি শরিফুল ইসলাম শাকিল এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থার অফিস সচিব আব্দুল করিম লালু প্রমুখ। রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিদের উপস্থিতি প্রমাণ করে খেলাধুলা আর রাজনীতি-সমাজ আসলে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত।

সভা শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম অংশগ্রহণকারী রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাকিব হাসানের নেতৃত্বে খেলোয়াড়রা ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান নবগঠিত এ্যাডহক কমিটিকে। সভাপতি মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ (মারুফ) খেলোয়াড়দের শুভেচ্ছা গ্রহণ করেন। তরুণদের এই অংশগ্রহণ যেন ক্রীড়া উন্নয়নের প্রতি তাদের প্রত্যাশা আর আস্থার প্রতীক।

রাঙামাটি সবসময়ই প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের ভান্ডার। ফুটবল, ভলিবল, অ্যাথলেটিকস কিংবা আঞ্চলিক খেলা সব ক্ষেত্রেই আছে বিপুল সম্ভাবনা। তবে চ্যালেঞ্জও কম নয়। মাঠের অভাব, অবকাঠামো ঘাটতি, পর্যাপ্ত বাজেট না থাকা এবং ধারাবাহিক ক্রীড়া কার্যক্রমের অভাবে অনেক প্রতিভাই হারিয়ে যাচ্ছে।

নতুন এ্যাডহক কমিটির সামনে তাই সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হবে এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো। খেলোয়াড়দের জন্য টেকসই অবকাঠামো তৈরি, গ্রামীণ পর্যায়ে প্রতিযোগিতা আয়োজন, স্কুল-কলেজভিত্তিক খেলাধুলাকে উৎসাহিত করা এবং জেলা পর্যায়ে টুর্নামেন্ট নিয়মিত করা এসব বাস্তবায়ন করতে পারলেই রাঙামাটি দেশের ক্রীড়া মানচিত্রে আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠতে পারে।

Advertisement

রাঙামাটি জেলা ক্রীড়া সংস্থার নতুন যাত্রা শুরু হলো আজকের এ্যাডহক কমিটির সভার মধ্য দিয়ে। খেলোয়াড় ও ক্রীড়াপ্রেমীরা এখন তাকিয়ে আছেন কীভাবে এই কমিটি তাদের প্রত্যাশা পূরণ করবে। পাহাড়ি-বাঙালি তরুণদের মেধা ও শক্তিকে খেলাধুলার মাধ্যমে একত্রিত করা গেলে রাঙামাটিই হতে পারে দেশের অন্যতম ক্রীড়া সম্ভাবনার জেলা।

Advertisement
Advertisement
Advertisement
Loading...
×