Site Logo | মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ব্রেকিং নিউজ

ষষ্ঠ দিনের মতো ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ, ভুক্তভোগীদের ক্ষোভ

ষষ্ঠ দিনের মতো ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ, ভুক্তভোগীদের ক্ষোভ

ছবি : সংগৃহীত

Advertisement

স্বাস্থ্য খাতের সিন্ডিকেট ভাঙাসহ তিন দফা দাবিতে আজ বুধবার দুপুরে আবারও বরিশাল নগরের নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেছেন আন্দোলনকারীরা। এতে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে হাজারো যাত্রী দুর্ভোগে পড়েছেন।

এ নিয়ে গত শুক্রবার থেকে গতকাল মঙ্গলবার পাঁচ দিনে সাড়ে ২৫ ঘণ্টা এই মহাসড়ক অবরোধ করা হয়েছে। এতে হাজারো যাত্রী প্রতিদিন মারাত্মক দুর্ভোগের কবলে পড়েছেন।

এই মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন বরিশাল ছাড়াও বিভাগের পাঁচ জেলা ও এর উপজেলাগুলোতে অন্তত এক লাখের বেশি যাত্রী যাতায়াত করেন। এ ছাড়া এসব গণপরিবহনে যুক্ত আছেন কয়েক হাজার চালক ও শ্রমিক। সড়ক অবরোধে দুর্ভোগের কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রী ও পরিবহনশ্রমিকেরা।

Advertisement

পটুয়াখালী থেকে রাজধানী ঢাকায় যাচ্ছিলেন আরিফুর রহমান নামের এক যাত্রী। তিনি বলেন, ‘এখানে এসে আটকে গেছি, খুব ভোগান্তি  হচ্ছে। একদিকে প্রচণ্ড গরম, অন্যদিকে যানজট—সব মিলিয়ে পরিস্থিতি অসহ্য।’ আন্দোলেনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘এত গুরুত্বপূর্ণ একটি মহাসড়ক অবরোধ করে এমন আন্দোলনের কী যুক্তি থাকতে পারে?’

তিন চাকার যানবাহন মাহিন্দ্রচালক আনিস মিয়া বলেন, ‘রাস্তাঘাট এই রহম দিনের পর দিন আটকাইয়্যা আন্দোলন করায় মোগো অবস্থা শ্যাষ। যেমন অয় মানুষের ভোগ, তেমন মোগো আয়রোজগারে ভাটা।’

শুক্রবার থেকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে স্বাস্থ্য খাতে সংস্কারসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন একদল শিক্ষার্থী। ছাত্র-জনতার ব্যানারে এই আন্দোলনের নেতৃত্বে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি।
গত শুক্রবার আন্দোলনকারীরা প্রায় সাড়ে সাত ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এরপর শনিবার সাড়ে চার ঘণ্টা, রোববার সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা এবং সোমবার সাড়ে চার ঘণ্টা এবং মঙ্গলবারও সাড়ে চার ঘণ্টা ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। আজ দুপুর ১২টার দিকে পুনরায় তাঁরা মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ প্রতিবেদন লেখার সময় বিকেল চারটায় এ কর্মসূচি চলছিল।

আন্দোলনকারীদের দাবি, স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে বরিশালে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যথায় লাগাতার বরিশাল ব্লকেড কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন সংগঠক মহিউদ্দিন রনি।

Advertisement

আন্দোলনকারীদের তিন দফা দাবি হলো শের–এ–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ দেশের সব সরকারি হাসপাতালে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পর্যাপ্ত দক্ষ জনবল নিয়োগ, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করা; স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ দেশের সব হাসপাতালে দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি, দলীয় লেজুড়বৃত্তিক চিকিৎসকদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, ডিজিটাল অটোমেশন ও স্বচ্ছ জবাবদিহিমূলক টাস্কফোর্স গঠন; স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনকে জনগণের ভোগান্তির বিষয় শুনে তদন্ত সাপেক্ষে আবার সুপারিশ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে জোরদার পদক্ষেপ নেওয়া।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) বরিশাল মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, স্বাস্থ্য খাত নিয়ে এই আন্দোলনের যথেষ্ট যৌক্তিকতা আছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এই আন্দোলন সাধারণ জনগণের জন্য। সেই আন্দোলন কোনোভাবেই জনগণের ভোগান্তি হয়, এমন হওয়া উচিত নয়। প্রশাসনের উচিত জনদুর্ভোগ রোধে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া।

এদিকে আজ দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু জাফর বরিশালে আসেন। তিনি বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের সম্মেলনকক্ষে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় মহানগর জামায়াতের আমির জহির উদ্দিন মুহাম্মদ (বাবর) ও নগর বিএনপির সদস্যসচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার প্রমুখ জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে চলমান ব্লকেড কর্মসূচির সমালোচনা করে বক্তব্য দেন। সভায় শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপতালের পরিচালক, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, চিকিৎসকদের সংগঠন ড্যাপের নেতারা ইন্টার্ন চিকিৎসকসহ অন্যরা যোগ দেন।

Advertisement
Advertisement
Advertisement
Loading...
×