বরিশালে টানা ৬ষ্ঠ দিনের সড়ক অবরোধ: স্বাস্থ্যখাতের সংস্কার দাবিতে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ

বরিশালে ছাত্র-জনতার ব্লকেড কর্মসূচির চিত্র
বরিশালে স্বাস্থ্যখাতের সংস্কার দাবিতে ছাত্র-জনতার সড়ক অবরোধ কর্মসূচি টানা ষষ্ঠ দিনেও অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বেলা ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা।
প্রধান দাবিসমূহ:
১. শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ সব সরকারি হাসপাতালের সিন্ডিকেট ব্যবস্থা ভেঙে দেওয়া
২. স্বাস্থ্যখাতে চলমান অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ করা
৩. জরুরি ভিত্তিতে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার সংস্কার করা
পরিস্থিতির বিবরণ:
অবরোধের ফলে ঢাকার সঙ্গে বরিশালসহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে
শতাধিক যানবাহন সড়কে আটকে থাকে, হাজার হাজার যাত্রী ভোগান্তির শিকার হন
পুলিশ বিকল্প রুটে যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করলেও স্কুল শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে সেসব পথও বন্ধ হয়ে যায়
আন্দোলনকারীরা জরুরি যানবাহনের জন্য বিশেষ লেন খুলে দেন
Advertisement
নেতাদের বক্তব্য:
আন্দোলনের
নেতা মহিউদ্দিন রনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, "স্বাস্থ্য উপদেষ্টা শেবাচিম
হাসপাতাল পরিদর্শনে না এলে এবং আমাদের দাবিগুলো পূরণের লিখিত আশ্বাস না
দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। প্রয়োজনে আমরা সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল অচল করে
দেব।"
অনশনরত শিক্ষার্থীদের অবস্থা:
বরিশাল
সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী তাহমিদ ইসলাম দাইয়ান ও
সাফিন মাহমুদ গত ৪৮ ঘণ্টা ধরে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের শারীরিক
অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটেছে:
শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে
হাত-পা অবশ হয়ে আসছে
কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে
বর্তমানে অনশনস্থলেই স্যালাইন ও অক্সিজেন দিয়ে তাদের চিকিৎসা করা হচ্ছে
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া:
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মশিউল মুনীর জানান:
আগামী তিন মাসের মধ্যে হাসপাতালে এমআরআই মেশিন, ক্যাথ ল্যাব ও সি-আম মেশিন আসবে
Advertisementশিগগিরই ৩ হাজার নতুন চিকিৎসক ও ৩,২০০ নার্স নিয়োগ দেওয়া হবে
অনশনরত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের কেবিনে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে
পরবর্তী কর্মসূচি:
আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দিয়েছেন, যদি তাদের দাবি পূরণ না হয় তবে তারা:
বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলায় একযোগে অবরোধ পালন করবেন
ধাপে ধাপে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল অচল করে দেবেন
আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন
বর্তমানে স্থানীয় প্রশাসন ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি চাইলেও দীর্ঘদিনের এই অবরোধে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।