Site Logo | সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ব্রেকিং নিউজ

রাজউকের নির্দেশ অমান্য করে অনুমোদনের বাইরে জমি বিক্রির প্রচারণায় আশিয়ান সিটি

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে মাত্র ৩৩ একরের অনুমোদন পেলেও প্রকল্প এলাকায় এখনো চলছে এক হাজার একরের প্রচারণা

রাজউকের নির্দেশ অমান্য করে অনুমোদনের বাইরে জমি বিক্রির প্রচারণায় আশিয়ান সিটি

আশিয়ান গ্রুপ

Advertisement

রাজধানীর উত্তরা ও বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত আশিয়ান সিটি প্রকল্প আবারও আলোচনায় এসেছে। আদালতের রায় এবং রাজউকের নির্দেশনা অমান্য করে প্রতিষ্ঠানটি অনুমোদিত এলাকার বাইরে জমি বিক্রির প্রচারণা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।


রাজউক সূত্রে জানা যায়, সুপ্রিম কোর্ট গত বছরের ডিসেম্বরে আশিয়ান ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডকে মাত্র ৩৩ একর জমিতে কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দেয়। আদালতের রায়ের পরপরই রাজউক অনুমোদনবিহীন এলাকায় জমি বিক্রি, বিজ্ঞাপন এবং প্রচারণা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

Advertisement


তবে বাস্তবে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি অনুমোদিত সীমানার বাইরে গিয়ে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ একর জমিতে কার্যক্রম চালাচ্ছে। শুধু তাই নয়, এক হাজার একরেরও বেশি জমিকে প্রকল্পের অংশ হিসেবে দেখিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।


রাজউকের উপ-নগর পরিকল্পনাবিদ মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আদালতের রায়ে আশিয়ান সিটি কেবল ৩৩ একরে সীমাবদ্ধ থাকার কথা। কিন্তু পরিদর্শনে দেখা গেছে তারা সীমার বাইরে গিয়ে কাজ করছে। নথিপত্র যাচাই-বাছাই চলছে, তবে শেষ পর্যন্ত ৩৩ একরের অনুমোদনও তারা পাবে কিনা সন্দেহ রয়েছে।

Advertisement


রাজউক এর আগে ৪ আগস্ট এক নোটিশে জানায়, অনুমোদন ছাড়া জমি বিক্রি বা বিজ্ঞাপন প্রচার করলে রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন আইন ২০১০ অনুযায়ী ন্যূনতম ১০ লাখ টাকা জরিমানা, সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে।


তবে প্রতিষ্ঠানটির মিডিয়া প্রধান শফিকুল ইসলাম শাওন দাবি করেছেন, আমরা আদালতের অনুমোদিত ৩৩ একরের মধ্যেই কাজ করছি। অনুমোদনহীন এলাকার বিজ্ঞাপন ইতিমধ্যে বন্ধ করেছি। তবে আমাদের প্রকল্পের মোট জমি প্রায় এক হাজার একর, ধাপে ধাপে ক্রয় করে যুক্ত করা হচ্ছে।


অন্যদিকে রাজউক বলছে, তাদের পাঠানো নোটিশের কোনো জবাব প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে পাওয়া যায়নি। অথচ গত ১৪ আগস্ট আশিয়ান সিটির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে নতুন করে প্লট বিক্রির বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্প এলাকায়ও এখনো বিলবোর্ড ও সাইনবোর্ড টাঙানো রয়েছে।


প্রকল্পটির দীর্ঘ বিতর্কিত ইতিহাস রয়েছে। ২০০৫ সালে মাত্র ৪৩ একর অনুমোদন পেলেও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তা এক হাজার ১৯৭ একর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এর বিরুদ্ধে পরিবেশ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর রিটে হাইকোর্ট একসময় প্রকল্পটিকে অবৈধ ঘোষণা করেছিল। নানা আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সর্বশেষ সুপ্রিম কোর্ট শুধু ৩৩ একর এলাকায় কার্যক্রমের অনুমতি দেয়।

Advertisement


এদিকে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া-এর বিরুদ্ধে খিলক্ষেত, উত্তরা ও ভাটারা থানায় অন্তত ১২টি হত্যা মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে জামিন জালিয়াতির অভিযোগও আছে এবং বর্তমানে তিনি পলাতক।


আইন, আদালতের নির্দেশনা এবং রাজউকের নোটিশ উপেক্ষা করেই আশিয়ান সিটি প্রকল্পের প্রচারণা চলতে থাকায় নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে—আসলে কে দিচ্ছে এই প্রভাবশালী আবাসন কোম্পানিকে রক্ষাকবচ?

Advertisement
Advertisement
Advertisement
Loading...
×