সকালে ঘুম থেকে উঠতে কষ্ট হয়? মেনে চলুন এই ৬ টিপস

ছবি: সংগৃহীত
রাতভর জেগে কাজ করা, সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করা বা সিরিজ দেখতে দেখতে কখন যে ভোর হয়ে যায়, তা হয়তো অনেকেই খেয়াল করেন না। আর এর ফল ভোগ করতে হয় পরের দিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার সময়। অ্যালার্ম বাজলেও মনে হয়, আরেকটু ঘুমিয়ে নিই। বিশেষজ্ঞদের মতে, পর্যাপ্ত ও ভালো ঘুম শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। এটি শুধু কর্মক্ষমতাই বাড়ায় না বরং মস্তিষ্ককে সচল রাখে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে।
কিন্তু কীভাবে প্রতিদিন সকালে সহজেই ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস গড়ে তোলা যায়? এই অভ্যাসের জন্য কিছু সহজ টিপস অনুসরণ করতে পারেন।
একটি নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করুন: আমাদের শরীরের জৈব ঘড়িকে বলা হয় সার্কাডিয়ান চক্র। এটি শরীরের বিভিন্ন জৈব প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস এই চক্রকে সচল রাখে। ছুটির দিনেও এই রুটিন বজায় রাখার চেষ্টা করুন। এতে আপনার শরীর একটি নির্দিষ্ট প্যাটার্নে অভ্যস্ত হয়ে যাবে।
রাতে হালকা শরীরচর্চা: অনেকে মনে করেন, রাতে শরীরচর্চা করলে ঘুম আসে না। কিন্তু ঘুমের ৩০ মিনিট আগে ১৫ মিনিটের হালকা ব্যায়াম করলে সহজেই ঘুম আসে। ঘুম যত গভীর হবে, সকালে ঘুম থেকে ওঠা তত সহজ হবে। রাতের খাবার খাওয়ার পর কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করলেও ঘুম ভালো হয়।
ঘুমানোর আগে মোবাইল দূরে রাখুন: স্মার্টফোন বা ল্যাপটপ থেকে নির্গত নীল আলো ঘুমের জন্য প্রয়োজনীয় মেলাটোনিন হরমোনের উৎপাদন কমিয়ে দেয়। তাই ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট আগে সব ধরনের ডিজিটাল স্ক্রিন ব্যবহার বন্ধ করুন। এর বদলে বই পড়তে পারেন বা হালকা গান শুনতে পারেন।
সকালে সূর্যের আলোতে আসুন: ঘুম থেকে ওঠার পর সূর্যের প্রাকৃতিক আলো শরীরে পড়লে কর্টিসল হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। সকালে এই হরমোনের সামান্য বৃদ্ধি শরীরকে সতেজ করে তোলে। তাই ঘুম থেকে উঠেই জানালার পর্দা সরিয়ে দিন অথবা কিছুক্ষণের জন্য বাইরে দাঁড়ান।
পর্যাপ্ত ঘুমের হিসাব রাখুন: একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। সকালে আপনি যখন ঘুম থেকে উঠতে চান, তার থেকে অন্তত ৮ ঘণ্টা আগে ঘুমাতে যান। এতে ঘুম পর্যাপ্ত হবে এবং সকালে ঘুম থেকে উঠতে কোনো সমস্যা হবে না।
সন্ধ্যায় চা-কফি নয়: সন্ধ্যা বা রাতে চা, কফি অথবা চকোলেট খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ এগুলোতে থাকা ক্যাফেইন ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। এতে সকালে ঘুম থেকে ওঠা কঠিন হয়ে পড়ে। রাতে হালকা ও কম মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত।
যদি পর্যাপ্ত ঘুমের পরও সকালে আপনার অতিরিক্ত ক্লান্তি বা মাথা ভার লাগে, তবে এটি স্লিপ অ্যাপনিয়া বা অন্য কোনো গুরুতর নিদ্রাজনিত সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। এমন অবস্থায় দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
এই সহজ অভ্যাসগুলো মেনে চললে আপনার সকালে ঘুম থেকে ওঠা সহজ হবে এবং আপনি দিনভর কর্মক্ষম ও সতেজ থাকতে পারবেন।
সূত্র: স্লিপ ফাউন্ডেশন