সিলেটে অবৈধ পাথর উত্তোলন রোধে যৌথ অভিযান: ১২ হাজার ঘনফুট সাদাপাথর উদ্ধার

সিলেটে চুরি ও লুট হওয়া সাদাপাথর উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযানে ফিরল প্রায় ১২ হাজার ঘনফুট পাথর।
সিলেটের প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় জোরদার অভিযান চলছে। সম্প্রতি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কালাইরাগ এলাকা থেকে অবৈধভাবে উত্তোলিত প্রায় ১২ হাজার ঘনফুট সাদাপাথর উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার রাত ১২টার পর থেকে যৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযানে এসব পাথর জব্দ করে পুনরায় নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। এ সময় পাথরবোঝাই বেশ কয়েকটি ট্রাকও আটক করা হয়।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সিলেট-ভোলাগঞ্জ সড়কের সিলেট ক্লাবের সামনে একটি বিশেষ চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া কলাবাড়ী এলাকায় অবৈধ পাথর ভাঙার কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। অভিযান চলাকালীন স্থানীয়দের সঙ্গে কোনো ধরনের অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়নি বলে জানান কোম্পানীগঞ্জ ইউএনও আজিজুন্নাহার।
গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং এলাকাতেও একই দিনে ব্যাপক অভিযান চালানো হয়। বল্লাঘাট, ঝুমপাহাড় ও জিরো পয়েন্টে অবৈধ পাথর ও বালু উত্তোলন রোধে প্রায় ১০০টি বারকি নৌকা ধ্বংস করা হয়। এছাড়া ১৩০ ফুট বালু জব্দ করে তা ফেরত দেওয়া হয়। সিলেট জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার পলি রানী দেব এ বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম জানান, প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় তাদের অবস্থান কঠোর। অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আক্তার মিতা বলেন, "এ ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে চলতে থাকবে। আমরা স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা পেলে অবৈধ কার্যকলাপ আরও দ্রুত বন্ধ করতে পারব।" তিনি আরও জানান, চুরি হওয়া পাথর উদ্ধারের পাশাপাশি দোষীদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে কিছু অসাধু ব্যক্তি রাতের অন্ধকারে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করছিল। এতে একদিকে যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছিল, অন্যদিকে নদীর তলদেশেও পরিবর্তন আসছিল। প্রশাসনের এই অভিযানকে তারা স্বাগত জানিয়েছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এ ধরনের অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধে নিয়মিত অভিযান চালানো হবে। প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় স্থানীয় জনগণকেও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।