ভোটের মাঠে ৭ প্যানেল, শীর্ষ পদে প্রার্থী প্রায় চূড়ান্ত

ভোটের মাঠে ৭ প্যানেল, শীর্ষ পদে প্রার্থী প্রায় চূড়ান্ত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। প্যানেল গঠনের কাজ জোরেশোরে চলছে। ছোট ছোট সংগঠনগুলোর মধ্যে জোটবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা দেখা যাচ্ছে, অন্যদিকে বড় সংগঠনগুলো নিজেদের প্যানেল নিয়ে আলোচনা করছে। এবারের নির্বাচনে সাতটি প্যানেল অংশ নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়াও শীর্ষ পদগুলোতে কিছু স্বতন্ত্র প্রার্থী দেখা যেতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত একটি সংগঠন ছাড়া কেউই তাদের প্যানেল ঘোষণা করতে পারেনি।
নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সম্ভাব্য প্যানেলগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়বাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। এছাড়াও ‘ডাকসু ফর চেঞ্জ’ নামে একটি নতুন প্যানেল গঠনের কাজ চলছে, আরও থাকতে পারে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্যানেল।
ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা এখনো ডাকসু নির্বাচন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি। নেতাকর্মীদের কোনো রকম নির্দেশনাও দেওয়া হয়নি। সংগঠনটির দাবি, তারা নির্বাচনকে ইতিবাচকভাবে দেখছে, কিন্তু তাদের কিছু দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পূরণ করেনি। যদিও দলীয়ভাবে কোনো সিদ্ধান্ত না থাকলেও, ছাত্রদলের কিছু নেতা ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষার্থীদের সাথে সম্পর্ক বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। এবার তাদের প্যানেলে ‘ক্লিন ইমেজ’ধারী নেতাদের রাখা হতে পারে। ছাত্রদলের প্যানেল চূড়ান্ত করতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পরামর্শ নেওয়া হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। ক্যাম্পাসের অনেক শিক্ষার্থীর মাঝে ছাত্রদলের কিছু নেতার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেখা গেছে।
ছাত্রদলের প্যানেল নিয়ে দুটি ফরম্যাটে আলোচনা চলছে। একদিকে ২০০৯-১০ ও ২০১১-১২ সেশন থেকে ভিপি প্রার্থী এবং ২০১৪-১৫, ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ সেশন থেকে জিএস ও এজিএস প্রার্থী দেওয়া হতে পারে। অন্যদিকে, এই তিন সেশন থেকেই ভিপি, জিএস ও এজিএস প্রার্থী আসতে পারেন।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ (বাগছাস) তাদের প্যানেলে ভিপি পদে ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের এবং জিএস পদে কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদারকে প্রার্থী করতে যাচ্ছে। তবে এজিএস ও অন্যান্য পদে কারা দাঁড়াবেন, তা এখনো ঠিক হয়নি। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব জাহিদ আহসান জানান, শীর্ষ দুই পদে প্রার্থী ঠিক হয়েছে, বাকিদের নিয়ে আলোচনা চলছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করা হবে।
ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্যানেলে ভিপি ও জিএস পদে প্রার্থী হতে পারেন কেন্দ্রীয় সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু সাদিক কায়েম এবং ঢাবি শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদ কিংবা সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন খান। তাদের প্যানেলে ছাত্রী সংগঠনের প্রতিনিধিরাও থাকতে পারেন। শিবিরের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন খান বলেন, প্যানেল চূড়ান্ত করার কাজ চলছে, দ্রুতই ঘোষণা করা হবে।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ইতিমধ্যে তাদের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছে। ভিপি পদে ইয়াছিন আরাফাত, জিএস পদে খায়রুল আহসান মারজান এবং এজিএস পদে সাইফ মোহাম্মদ আলাউদ্দিন প্রার্থী হচ্ছেন।
ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লার নেতৃত্বে ‘ডাকসু ফর চেঞ্জ’ নামে একটি নতুন প্যানেল গঠিত হচ্ছে। এতে ভিপি পদে বিন ইয়ামিন মোল্লা এবং জিএস পদে রাকিবুল ইসলাম প্রার্থী হচ্ছেন। তবে এখনো পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করা হয়নি।
বামধারার ছাত্র সংগঠনগুলোর জোট গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের প্যানেলে শীর্ষ পদে প্রার্থী হতে পারেন ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) ঢাবি শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমেদ জুবেল এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ঢাবি শাখার আহ্বায়ক মোজাম্মেল হক। তবে কে কোন পদে দাঁড়াবেন, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক নেত্রী উমামা ফাতেমার নেতৃত্বে একটি প্যানেল। তাদের প্যানেলে ভিপি পদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি এবং ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শামীম হোসেন থাকতে পারেন। তাদের প্যানেলের নাম ‘শিক্ষার্থী ঐক্য’ হতে পারে। এছাড়াও ভিপি পদে বেশ কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। ডাকসু নির্বাচন কমিশনের প্রধান রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন জানান, গতকাল পর্যন্ত ভিপি পদে ১০ জন, জিএস পদে ১ জন, এজিএস পদে ২ জন, সম্পাদক পদে ১৮ জন এবং সদস্য পদে ১১ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।