Site Logo | মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ব্রেকিং নিউজ

ভারত পানি ছাড়ায় চার দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা পাঞ্জাবে

ভারত পানি ছাড়ায় চার দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা পাঞ্জাবে

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মারিয়াম আওরঙ্গজেব জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত পাঞ্জাবে অন্তত ১২ জন বন্যাজনিত ঘটনায় মারা গেছেন। ছবি: সংগৃহীত

Advertisement

ভারত কর্তৃক বিভিন্ন নদী থেকে পানি ছাড়ার পাশাপাশি টানা মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ফলে প্রায় চার দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয়েছে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশ।

শুক্রবার (২৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে সামা টিভি।

প্রদেশের ঝাং জেলায় প্রবল ঢল চেনাব নদীতে প্রবেশ করেছে। এ কারণে জেলা প্রশাসন সব দপ্তরকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রেখেছে। আতহারা হাজারি তহসিলে প্রতিরক্ষা বাঁধের কাছে দোকানপাট সরিয়ে নেওয়ার জন্য মাইকিং চলছে। ২০১৪ সালের ভয়াবহ বন্যায়ও একই বাঁধ কেটে পানি চাপ কমাতে বাধ্য হয়েছিল প্রশাসন।

Advertisement

রাভি নদীতে পানির প্রবাহ ২ লাখ কিউসেক ছাড়িয়েছে

প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (পিডিএমএ) জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাভি নদীতে পানির প্রবাহ অত্যন্ত উচ্চমাত্রায় পৌঁছেছে। রাভি সাইফনে পানির প্রবাহ দাঁড়িয়েছে ২,০২,৪২৮ কিউসেক, আর শাহদরায় ২,০১,৪০০ কিউসেক। নিম্নাঞ্চলগুলোতে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

চেনাব নদীতে পানির চাপ আরও বাড়লে বাঁধ কেটে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে বলে সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ। ঝাং জেলার ডেপুটি কমিশনার জানিয়েছেন, দোকানপাট ও বাড়িঘর খালি করার জন্য মাইকিং চলছে এবং জীবন রক্ষার স্বার্থে নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

লাহোর-মুলতানে সতর্কতা, বাঁধ কেটে শহর রক্ষার সিদ্ধান্ত

Advertisement

মুলতানে শহর রক্ষায় দুটি বাঁধ কেটে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। অন্যদিকে লাহোরে শাহদরায় রাভি নদীতে পানির প্রবাহ দুপুরের মধ্যে ২ লাখ কিউসেক ছাড়াবে বলে সতর্ক করা হয়েছে। যদিও নদী সর্বোচ্চ ২ লাখ ৫০ হাজার কিউসেক পর্যন্ত পানি বহন করতে সক্ষম, তবুও পানি ক্রমশ বাড়ছে। ইতিমধ্যে উদ্ধার নৌকা মোতায়েন ও নিম্নাঞ্চল থেকে মানুষ সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

লাহোর কমিশনার জানিয়েছেন, রাভি সাইফনে পানির প্রবাহ স্থিতিশীল হয়েছে এবং শাহদরাতেও শিগগিরই স্থিতিশীল হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে নদীতীরবর্তী মানুষদের সরিয়ে নেওয়া অব্যাহত রয়েছে।

লাহোরের ডেপুটি কমিশনার মুসা রাজা জানান, শাহদরায় রাভি নদীতে বর্তমানে পানির প্রবাহ ২ লাখ ১১ হাজার কিউসেকে পৌঁছেছে, যা ১০ ঘণ্টার মধ্যে কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত লাহোরে কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। প্রায় ২ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং ১৮টি ত্রাণ শিবিরে তাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বিভিন্ন জেলায় প্রাণহানি ও ফসলহানির খবর

পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মারিয়াম আওরঙ্গজেব জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত পাঞ্জাবে অন্তত ১২ জন বন্যাজনিত ঘটনায় মারা গেছেন। সব সরকারি সংস্থা সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

বাহাওয়ালপুরে সুতলেজ নদীর পানির চাপ সাময়িক বাঁধ ভেঙে দিয়েছে। ইউসুফওয়ালা ও আহমদওয়ালার গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে। শত শত একর তুলা ও ধানের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। তীব্র ভাঙনে বহু পরিবার বাড়িঘরে আটকা পড়েছে।

সারগোধা জেলার কোট মোমিন এলাকায় চেনাব নদীতে ৬ লাখ কিউসেক প্রবাহ ঢুকেছে, যা গ্রাম ও কৃষিজমি প্লাবিত করছে। পানি প্রবাহ ১০ লাখ কিউসেক ছাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন। জেলা প্রশাসন জরুরি প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।

রোজহানেও নতুন ঢল, বিপর্যস্ত ইন্দাস তীরবর্তী মানুষ

Advertisement

রোজহান অঞ্চলে নতুন বন্যার ঢল নামার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন বাসিন্দাদের অবিলম্বে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় শিবির খোলা হয়েছে। পাঞ্জাব পুলিশ ও প্রশাসন বারবার ঘোষণা দিয়ে মানুষকে বিপদসীমার ভেতর থেকে বের হয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছে।

ডেরা গাজী খান, রাজনপুর ও আশপাশের জেলায় মন্ত্রী, কমিশনার ও ডেপুটি কমিশনার সরাসরি তদারকি করছেন।

Advertisement
Advertisement
Advertisement
Loading...
×