|
মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বন্যা নিয়ন্ত্রণে বাঁধ উড়িয়ে দিলো পাকিস্তান
পাকিস্তানে ছবি বিস্ফোরিত বাঁধ ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলজুড়ে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের মতে, তিনটি আন্তঃসীমান্ত নদীর পানির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং উজানে ভারতের বাঁধ থেকে পানি ছাড়ার কারণে পরিস্থিতি মারাত্মক হয়ে উঠেছে। পানি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই পাকিস্তান জরুরি পদক্ষেপ হিসেবে একটি নদীর বাঁধ বিস্ফোরক দিয়ে ভেঙে দিয়েছে।
ফ্রান্স টোয়েন্টি ফোর জানায়, ভারত উপচে পড়া বাঁধ ও উত্তাল নদী থেকে নিচু সীমান্ত এলাকায় পানি ছাড়তে শুরু করেছে। এর প্রভাবে পাকিস্তানের ঘনবসতিপূর্ণ পাঞ্জাব প্রদেশজুড়ে বন্যার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। চেনাব, রাভি ও শতদ্রু নদীর আশপাশের গ্রাম থেকে মানুষ ও গবাদিপশু সরিয়ে নিতে সেনাবাহিনীকে নামানো হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত অন্তত ২ লাখ ১০ হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছে। তবে পানির স্রোত বাড়তে থাকায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) চেনাব নদীর কাদিরাবাদ বাঁধে পানির চাপ বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছালে স্থানীয় প্রশাসন বাধ্য হয়ে প্রান্তিক বাঁধে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ ঘটায়। পাঞ্জাব দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র মাজহার হুসেন জানান, “মূল বাঁধ রক্ষার জন্য ডান দিকের প্রান্তিক বাঁধটি উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে পানির প্রবাহ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসবে।”
এদিকে শিখ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম পবিত্র স্থান কর্তারপুর মন্দিরও পানিতে তলিয়ে গেছে। গুরু নানক ১৫৩৯ সালে এখানে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। মন্দিরে আটকে পড়া শতাধিক মানুষকে উদ্ধারে ইতোমধ্যে পাঁচটি নৌকা পাঠানো হয়েছে।
পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে, ভারত উজানের বাঁধ থেকে পানি ছেড়ে দিয়েছে, যার ফলে পাকিস্তানের নদীগুলোতে প্রবাহ বেড়েছে। তবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পানি ছাড়ার আগে ভারত কূটনৈতিকভাবে সতর্ক করেছিল। এ বিষয়ে ভারতীয় কর্মকর্তারা এখনও মন্তব্য করেননি।
পাঞ্জাব প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রধান ইরফান আলী জানিয়েছেন, বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত বন্যার ঢেউ লাহোর অতিক্রম করতে পারে। এ কারণে নগরজুড়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, জুনের শেষ দিক থেকে পাকিস্তানে চলমান বন্যায় ইতোমধ্যে অন্তত ৮০০ জন মারা গেছেন। পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির সংখ্যা দ্রুত বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
