ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক ব্যর্থ হলে ভারতের ওপর আরও শুল্ক চাপাবে যুক্তরাষ্ট্র

সংগৃহীত ছবি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের উপর আরোপিত শুল্ক বৃদ্ধির হুমকি দিয়েছে, যা রাশিয়ার সাথে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্কের কারণে উদ্ভূত হয়েছে। এই সতর্কতা এসেছে এমন এক সময়ে যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে আলাস্কায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট সম্প্রতি ব্লুমবার্গ টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করে বলেছেন, "রাশিয়ার কাছ থেকে তেল ক্রয়ের জন্য আমরা ইতিমধ্যে ভারতের উপর সেকেন্ডারি শুল্ক প্রয়োগ করেছি। যদি আলোচনায় ইতিবাচক ফলাফল না আসে, তাহলে আরও কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।"
বর্তমানে ভারতের উপর মার্কিন শুল্কের হার ৫০ শতাংশে পৌঁছেছে, যা গত কয়েক সপ্তাহে ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই নতুন শুল্ক আগামী ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে বলে জানা গেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই মাত্রার শুল্ক প্রকৃতপক্ষে বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞার সমতুল্য।
আলাস্কার অ্যাঙ্কোরেজে অনুষ্ঠিতব্য ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের ফলাফল এই শুল্ক নীতিকে প্রভাবিত করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মার্কিন প্রশাসনের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, "রাশিয়া যদি শান্তি আলোচনায় সম্মত না হয়, তাহলে ভারতসহ অন্যান্য দেশের উপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে।"
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ভারত রাশিয়ার সস্তা অপরিশোধিত তেল আমদানি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়িয়েছে। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২১ সালে ভারতের মোট তেল আমদানিতে রাশিয়ার অংশ ছিল মাত্র ৩ শতাংশ, কিন্তু ২০২৪ সালে তা বেড়ে ৩৫-৪০ শতাংশে পৌঁছেছে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তাদের এই সিদ্ধান্তকে ন্যায্য প্রমাণ করতে বলেছে, "জ্বালানির দাম বৃদ্ধি থেকে সাধারণ জনগণকে রক্ষা করতে সস্তা তেল ক্রয় আমাদের একমাত্র বিকল্প ছিল।"
এই শুল্ক বৃদ্ধি ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ককে নতুন করে জটিলতার মুখে ফেলেছে। আগামী ২৫ আগস্ট দিল্লিতে দুই দেশের মধ্যে নতুন一轮 বাণিজ্য আলোচনা শুরু হতে যাচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে, কৃষি ও দুগ্ধজাত পণ্যে শুল্ক কমানো নিয়ে ভারতের অনীহার কারণে এই আলোচনা থেকে ইতিবাচক ফলাফল আসা কঠিন হবে।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, এই শুল্ক বৃদ্ধি ভারতের টেক্সটাইল, গহনা এবং অন্যান্য রপ্তানিমুখী শিল্পে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। কিছু গবেষণায় ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, এটি ভারতের বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধিকে ০.৫ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে।
মার্কিন প্রশাসন তাদের এই সিদ্ধান্তকে ন্যায্য প্রমাণ করতে বলেছে যে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যে ন্যায্যতা আনতে帮助他们 পরিকল্পনার অংশ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বারবার ভারতকে "শুল্কের অপব্যবহারকারী" বলে অভিহিত করেছেন এবং দুই দেশের মধ্যে ৪৫ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।