বুধবার, ১৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

গলদা চিংড়ি চাষের আধুনিক পদ্ধতি – ধাপে ধাপে নির্দেশিকা

আবাসন নিউজ ২৪ অনলাইন ডেস্কঃ

গলদা চিংড়ি চাষের আধুনিক পদ্ধতি – ধাপে ধাপে নির্দেশিকা

গলদা চিংড়ি চাষ বাংলাদেশে একটি লাভজনক ব্যবসা। এখানে আধুনিক চাষ পদ্ধতির ধাপে ধাপে গাইড দেওয়া হলো:


১. উপযুক্ত স্থান নির্বাচন

  • এমন স্থান নির্বাচন করুন যেখানে ভাল পানি প্রবাহপর্যাপ্ত নিষ্কাশন ব্যবস্থা রয়েছে।

  • পুকুরের গভীরতা ৩-৫ ফুট হওয়া উচিত এবং তলার মাটি কাদাযুক্ত হলে ভালো হয়।

  • জলাভূমি বা উপকূলীয় এলাকায় গলদা চিংড়ি চাষ সবচেয়ে বেশি উপযোগী।

২. পুকুর প্রস্তুতি

  • পুকুরের নিচু স্থান ভরাট করুন ও বাঁধগুলো মজবুত করুন।

  • পানির pH মাত্রা ৬.৫-৮.৫ এর মধ্যে থাকতে হবে।

  • চুন (লাইম) ও জৈব সার প্রয়োগ করে জলজ জীবাণুর ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।

৩. রেণু সংগ্রহ ও পোনা চাষ

  • চিংড়ির রেণু পোনা সরকারি বা বেসরকারি হ্যাচারি থেকে সংগ্রহ করুন।

  • রেণুগুলোকে ৭-১০ দিন আলাদা ট্যাংকে acclimatization (পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানো) করান।

  • প্রতি ৪০০-৫০০টি পোনা প্রতি শতাংশে ছাড়া যায়।

৪. খাদ্য সরবরাহ ও যত্ন

  • উন্নতমানের চিংড়ি খাদ্য ব্যবহার করুন, যাতে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ও মিনারেলস থাকে।

  • দিনে ২-৩ বার খাদ্য সরবরাহ করুন (সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যায়)।

  • অতিরিক্ত খাদ্য না দেওয়া ভালো, কারণ এটি পানির গুণগত মান নষ্ট করতে পারে।

৫. পানির গুণগত মান নিয়ন্ত্রণ

  • পানির pH, অক্সিজেন, অ্যামোনিয়া ও নাইট্রেট নিয়মিত পরীক্ষা করুন।

  • প্রতি ১৫-২০ দিন অন্তর ৩০% পানি পরিবর্তন করুন।

  • পানিতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহের জন্য অ্যারেটর (Aerator) ব্যবহার করতে পারেন।

৬. রোগ প্রতিরোধ ও যত্ন

  • ব্যাকটেরিয়াল ও ফাঙ্গাস ইনফেকশন প্রতিরোধে পানির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন।

  • চিংড়ির শরীরে লালচে দাগ, খোলস নরম হওয়া বা অস্বাভাবিক আচরণ দেখা দিলে দ্রুত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

৭. সংগ্রহ ও বিপণন

  • ৩-৪ মাস পর চিংড়ি বাজারজাত করার জন্য প্রস্তুত হয়।

  • মুনাফা বাড়ানোর জন্য স্থানীয় বাজার, সুপারশপ ও বিদেশে রপ্তানির ব্যবস্থা করুন।

  • ভালো মানের চিংড়ির দাম বেশি পাওয়া যায়, তাই সঠিক যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুন  শ্যামনগরে বোরো ধানের ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

উপসংহার

গলদা চিংড়ি চাষ একটি লাভজনক ব্যবসা যা সঠিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে সফল হতে পারে। সরকারি প্রশিক্ষণ ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করলে আরও ভালো উৎপাদন সম্ভব।

WhatsApp
Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
Telegram