গলদা চিংড়ি চাষ বাংলাদেশে একটি লাভজনক ব্যবসা। এখানে আধুনিক চাষ পদ্ধতির ধাপে ধাপে গাইড দেওয়া হলো:
এমন স্থান নির্বাচন করুন যেখানে ভাল পানি প্রবাহ ও পর্যাপ্ত নিষ্কাশন ব্যবস্থা রয়েছে।
পুকুরের গভীরতা ৩-৫ ফুট হওয়া উচিত এবং তলার মাটি কাদাযুক্ত হলে ভালো হয়।
জলাভূমি বা উপকূলীয় এলাকায় গলদা চিংড়ি চাষ সবচেয়ে বেশি উপযোগী।
পুকুরের নিচু স্থান ভরাট করুন ও বাঁধগুলো মজবুত করুন।
পানির pH মাত্রা ৬.৫-৮.৫ এর মধ্যে থাকতে হবে।
চুন (লাইম) ও জৈব সার প্রয়োগ করে জলজ জীবাণুর ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।
চিংড়ির রেণু পোনা সরকারি বা বেসরকারি হ্যাচারি থেকে সংগ্রহ করুন।
রেণুগুলোকে ৭-১০ দিন আলাদা ট্যাংকে acclimatization (পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানো) করান।
প্রতি ৪০০-৫০০টি পোনা প্রতি শতাংশে ছাড়া যায়।
উন্নতমানের চিংড়ি খাদ্য ব্যবহার করুন, যাতে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ও মিনারেলস থাকে।
দিনে ২-৩ বার খাদ্য সরবরাহ করুন (সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যায়)।
অতিরিক্ত খাদ্য না দেওয়া ভালো, কারণ এটি পানির গুণগত মান নষ্ট করতে পারে।
পানির pH, অক্সিজেন, অ্যামোনিয়া ও নাইট্রেট নিয়মিত পরীক্ষা করুন।
প্রতি ১৫-২০ দিন অন্তর ৩০% পানি পরিবর্তন করুন।
পানিতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহের জন্য অ্যারেটর (Aerator) ব্যবহার করতে পারেন।
ব্যাকটেরিয়াল ও ফাঙ্গাস ইনফেকশন প্রতিরোধে পানির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন।
চিংড়ির শরীরে লালচে দাগ, খোলস নরম হওয়া বা অস্বাভাবিক আচরণ দেখা দিলে দ্রুত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
৩-৪ মাস পর চিংড়ি বাজারজাত করার জন্য প্রস্তুত হয়।
মুনাফা বাড়ানোর জন্য স্থানীয় বাজার, সুপারশপ ও বিদেশে রপ্তানির ব্যবস্থা করুন।
ভালো মানের চিংড়ির দাম বেশি পাওয়া যায়, তাই সঠিক যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
গলদা চিংড়ি চাষ একটি লাভজনক ব্যবসা যা সঠিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে সফল হতে পারে। সরকারি প্রশিক্ষণ ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করলে আরও ভালো উৎপাদন সম্ভব।