

রিফাত আলী
সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধিক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ দিকে পটুয়াখালী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনির গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মামলা হয়। বর্তমানে মামলাটির ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছে পুলিশ। কিন্তু রিপোর্ট দেওয়ার আগে তদন্তকারী কর্মকর্তা একটি বারের জন্য রনির সঙ্গে সাক্ষাৎ কিংবা তলব করেননি।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে গোলাম মাওলা রনি তার নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে তিনি বর্তমান ডিএমপি কমিশনারকে প্রশ্ন রেখে বলেছেন, ‘এ অবস্থায় তার এখন কী করা উচিত’।
সাবেক সংসদ সদস্য রনির স্ট্যাটাসে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর একটি ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘ছবির ভদ্রলোককে সালাম এবং শুভেচ্ছা! তার সঙ্গে ব্যাক্তিগত পরিচয় নেই তবে তিনি যেদিন ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশের কমিশনার হিসাবে নিয়োগ পেলেন তখন তার প্রাথমিক কথাবার্তা শুনে আমার মনে হয়েছে যে, তিনি সৎ, দক্ষ, অভিজ্ঞ এবং ভালো মানুষ! অথচ তার সময়কালে তারই অধীনস্থ অফিসের তুঘলকি কাণ্ডে আমি রীতিমত অপমানিত, বিব্রত এবং ক্ষতিগ্রস্ত! তাই সুবিচারের আশায় আমার বিষয়টি তার সমীপে পেশ করলাম!’
আওয়ামী লীগ জমানার শেষ দিকে অর্থাৎ ২০২৪ সালের মে মাসের ২১ তারিখ সকাল ১১টার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর হয়ে আমি অফিস আসছিলাম। আমার গাড়ি টিএসসি হয়ে জাতীয় চার নেতার মাজারের কাছাকাছি আসা মাত্র কয়েকজন সন্ত্রাসী হাতুড়ি এবং অন্যান্য অস্ত্র হাতে আমার গাড়ির গতিরোধ করে। তারা আমার গাড়ির উইন্ডশিটের গ্লাস ভেঙ্গে ফেলে এবং গাড়ির দরজা খুলে আমার উপর আক্রমণ চালায়!
রনি আরও লেখেন, আমার ড্রাইভার দ্রুত গাড়ি টান দিলে সন্ত্রাসীরা গাড়ির পিছনে ছুটতে থাকে। কিন্তু রাস্তা ফাঁকা থাকায় প্রাণ দিয়ে অফিসে পৌঁছাতে সক্ষম হই! ঘটনাটি সঙ্গে সঙ্গে মিডিয়াতে চলে যায়। নিউ মার্কেট থানা ঘটনা ঘটার ১৫ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ডিবি, সিআইডি পিআইবির টিমও ঘটনাস্থলে যায়।
ডিএমপি তখনকার কমিশনার, মহানগর ডিবি প্রধানসহ পুলিশের বড় কর্তাবৃন্দ আমাকে ফোন করেন! সবার অনুরোধে আমি শাহবাগ থানায় মামলা করি, যার নম্বর- ২৯ তারিখ ২১/০৫/২০২৪।
থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা আমার অফিস আসেন এবং ২/৩ দিন সর্বোচ্চ চেষ্টা তদবির করার পর তিনি জানান যে, মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে!
তখন ডিবি প্রধান জনাব হারুন একাধিক বার ফোন করেন! আজাদ নামে ডিবির একজন ইন্সপেকটর তদন্তের দায়িত্ব পান এবং তিনি প্রায় ২/৩ সপ্তাহ সর্বোচ্চ চেষ্টা করে মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত, তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেন। ইতোমধ্যে জুলাই বিপ্লব শুরু হয় এবং ইন্সপেকটর আজাদ বদলি হন!
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আমার আশা ছিল- স্বৈরাচারী আমলে একজন ভিন্নমতের বিরোধী রাজনৈতিক কর্মী হওয়া সত্ত্বেও পুলিশের কাছ থেকে যে সাহায্য পেয়েছিলাম তা হাল আমলে আরো সুন্দর হবে। কিন্তু আমার দুর্ভাগ্য- পুলিশ মামলার ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছে। আর পুলিশের দুর্ভাগ্য- মামলার ফাইনাল রিপোর্ট প্রদানকারী তদন্তকারী কর্মকর্তা একটি বারের জন্য আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি, ফোন করেননি কিংবা আমার সাক্ষ্য নেওয়ার জন্য আমাকে তলব করেননি!
উল্লেখিত অবস্থায় মান্যবর ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মহোদয়ের নিকট জিজ্ঞাসা-আমার এখন কি করা উচিত!