

সজীব চন্দ্র দাস
উত্তরের আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতিতে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। বৃহস্পতিবার সকালে তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানির স্তর রেকর্ড করা হয়েছে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপরে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উজানের পাহাড়ি ঢল এবং টানা বৃষ্টিপাতের কারণে নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে, তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে হাতীবান্ধা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট এবং রোপা আমন ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পানির স্তর দ্রুত বাড়ায় তারা নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। গবাদি পশুর খাদ্য সংকটও দেখা দিয়েছে।
তিস্তা ব্যারাজের পানি পরিমাপক নুরুল ইসলাম জানান, বর্তমানে ব্যারাজের ৪৪টি গেট সম্পূর্ণ খোলা রয়েছে। তিনি বলেন, "উজান থেকে আসা পানি এবং অবিরাম বৃষ্টিপাতের কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে।" ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের সতর্ক অবস্থানে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
এদিকে, পানিবন্দি এলাকাগুলোতে ত্রাণ বিতরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, "আমরা ইতিমধ্যেই উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য প্রস্তুত রয়েছি। প্রয়োজন হলে সামরিক বাহিনীর সহায়তা নেওয়া হবে।"
স্থানীয় কৃষকরা জানান, পানিতে তলিয়ে যাওয়া রোপা আমন ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেক কৃষক তাদের একমাত্র ফসলটি হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন। এদিকে, নদীভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ মেরামতের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। তারা জানান, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় আরও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, যা বন্যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।