জুবায়ের হাসান
খুলনা জেলা প্রতিনিধিঢাকা মহানগরের জন্য প্রণীত বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ)–এর সংশোধনের খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী ধাপে অনুমোদনের জন্য এটি প্রধান উপদেষ্টা পরিষদ কমিটিতে পাঠানো হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে এক মাসের মধ্যেই সংশোধিত ড্যাপের গেজেট প্রকাশ হতে পারে।
রবিবার (১১ আগস্ট) সচিবালয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে ঢাকা ইমারত নির্মাণ বিধিমালা–২০২৫ এবং ড্যাপ (২০২২–২০৩৫)–এর গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী নিয়ে আলোচনা হয়।
এ সময় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)–এর চেয়ারম্যান, বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স ও আর্কিটেক্টসের সভাপতি, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের সহ-সভাপতি, গণপূর্ত অধিদপ্তর ও সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এফএআর ও জনঘনত্বে পরিবর্তন
বৈঠকে বিদ্যমান রাস্তার ভিত্তিতে ফ্লোর এরিয়া রেশিও (এফএআর), এলাকা ভিত্তিক এফএআর ও জনঘনত্ব নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়। গ্রামীণ এলাকার (যেমন দাসেরকান্দি, কাচপুর, ময়নারটেক, আলীপুর, রুহিতপুর, বিরুলিয়া, বনগ্রাম ইত্যাদি) ১৬টি জনঘনত্ব ব্লকে সামান্য এফএআর সমন্বয় করা হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ও নগর এলাকায় পূর্বের এফএআর অপরিবর্তিত থাকবে।
এছাড়া ২০১১ সালের বিবিএস হাউজহোল্ড সাইজের ভিত্তিতে আবাসন ইউনিট নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়।
পাঁচ বছরে একবার হালনাগাদ
ড্যাপ নীতিমালায় প্রতি পাঁচ বছর অন্তর পরিকল্পনা হালনাগাদের বিধান থাকায় আগামী এক বছরের মধ্যে একটি কারিগরি কমিটি গঠন করে উন্নয়ন ও আপগ্রেডেশন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই কমিটি ঢাকার বাসযোগ্যতা বৃদ্ধিতে রাজউককে নীতি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে।
রাজউকের বক্তব্য
রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ আশরাফুল ইসলাম বলেন,
আজকের বৈঠকে ড্যাপ সংশোধনের খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। এখন প্রধান উপদেষ্টা পরিষদ কমিটিতে পাঠানো হবে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য। অনুমোদনের পর গেজেট প্রকাশ করা হবে।
তিনি আরও জানান, ছোট-বড় সব জায়গাতেই কিছু না কিছু এফএআর বৃদ্ধি পাবে, যা ডেভেলপার, জমির মালিক ও সাধারণ মানুষের জন্য উপকারী হবে।
পটভূমি
২০২২ সালের ২৪ আগস্ট নতুন ড্যাপের গেজেট প্রকাশের পর থেকেই আবাসন খাতের উদ্যোক্তা ও জমির মালিকদের পক্ষ থেকে সংশোধনের দাবি ওঠে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমলেও এই দাবি অব্যাহত থাকে।
সর্বশেষ ২০ মে ঢাকা সিটি ল্যান্ড অনার্স অ্যাসোসিয়েশন রাজউক ভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে এবং দাবি পূরণ না হলে রাজউকের কার্যক্রম বন্ধের হুমকি দেয়। এরপর সরকার সংশোধন প্রক্রিয়া শুরু করে।