আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণের সব পথ বন্ধ শেখ হাসিনার
পলাতক শেখ হাসিনা, ছবি: সংগৃহীত
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কারও বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল হলে তিনি আর কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না— এমনই বিধান যুক্ত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। একই সঙ্গে যদি তিনি জনপ্রতিনিধি হয়ে থাকেন, তবে সেই পদে থাকার যোগ্যতাও হারাবেন। ফলে অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সব সুযোগ আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ হয়ে গেল
১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন সংশোধন করে নতুন করে ২০(সি) ধারা যুক্ত করা হয়েছে। এক বছরের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো এই আইন সংশোধন করা হলো। সোমবার (৬ অক্টোবর) রাতে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (তৃতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ নামে এটি অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়।
এর আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ সংশোধনের প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিল।
নতুন ধারায় বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গৃহীত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সংসদ সদস্য, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি (চেয়ারম্যান, মেয়র, কমিশনার বা প্রশাসক) কিংবা প্রজাতন্ত্রের কোনো সরকারি চাকরির জন্য অযোগ্য বলে গণ্য হবেন।
তবে ট্রাইব্যুনালের রায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি অব্যাহতি বা খালাস পান, তাহলে এই অযোগ্যতা তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।
আইন সংশোধনের মূল উদ্দেশ্য— যাতে বিচারাধীন কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রের দায়িত্বে বা নির্বাচিত পদে থাকতে না পারেন, তা নিশ্চিত করা।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। সে দিন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। বর্তমানে দলের অনেক শীর্ষ নেতা কারাগারে, কেউ আত্মগোপনে বা বিদেশে রয়েছেন। তাদের অনেকেই বিভিন্ন হত্যা ও দমন–পীড়নের মামলার আসামি।
২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার যুদ্ধাপরাধের বিচার চালু করতে যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছিল, এখন সেই আদালতেই শেখ হাসিনা ও তার সরকারের বিরুদ্ধে গণঅত্যাচার ও গণহত্যার অভিযোগে মামলা চলছে। ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একটি মামলার বিচার কার্যক্রম বর্তমানে শেষ পর্যায়ে রয়েছে।