২০২৬ সালের নির্বাচনের তারিখ নিয়ে অনিশ্চয়তা প্রধান উপদেষ্টার সুনির্দিষ্ট ঘোষণার দাবি বিএনপি-জামায়াতসহ রাজনৈতিক দলগুলোর

২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ইঙ্গিত পাওয়া গেলেও, এখনো নির্বাচন কমিশন কিংবা প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো ঘোষণা আসেনি।
সম্প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকেও নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার বিষয়টি আলোচনায় আসে। যদিও প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে আশ্বস্ত করেছেন, তবুও দলগুলোর মধ্যে সংশয় কাটেনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “আমরা আশাবাদী, রোজার শুরু হওয়ার এক সপ্তাহ আগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং এজন্য নির্বাচন কমিশনকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় নির্দেশনা দেওয়া হবে।” তিনি আরও জানান, ৫ আগস্ট পর্যন্ত অপেক্ষা করবে বিএনপি।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, “নির্বাচন কমিশনকে এখনই রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা দেওয়া জরুরি। তবেই সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে যে প্রশ্ন উঠছে, তা দূর হবে।”
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী সরকারের নির্বাচনী প্রস্তুতির সমালোচনা করলেও সুনির্দিষ্ট ঘোষণার দাবি করেনি। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, “সরকার বলছে সেরা নির্বাচন দেবে। কিন্তু দেশে এখনও নির্বাচন উপযোগী পরিবেশ নেই।”
এছাড়াও, রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে গঠন ও বিতর্কিত উপদেষ্টাদের অপসারণের দাবি জানায়।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদে এমন কিছু ব্যক্তি আছেন, যারা নিরপেক্ষতা হারানোর কারণ হতে পারেন। তাদের অপসারণ জরুরি।”
জামায়াতের আযাদ বলেন, “যাদের মন্ত্রণালয়ে সাফল্য আছে তারা থাকুক, বাকিদের পরিবর্তন করা হোক।”
সাইফুল হক বলেন, “১০-১২ সদস্যের অন্তর্বর্তী সরকারকে সত্যিকার অর্থে তত্ত্বাবধায়ক চরিত্রে কাজ করতে হবে—কোনো দলীয় সহানুভূতি বা পক্ষপাত বাদ দিয়ে।”
🔍 রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট:
রাজনৈতিক দলগুলোর মতে, জুলাই সনদ ও গণহত্যার বিচারে অগ্রগতি হয়েছে। তাই নির্বাচন আয়োজনের কোনো আইনি বা কাঠামোগত বাধা নেই। এখন শুধু দরকার প্রধান উপদেষ্টার স্পষ্ট ও নির্ভরযোগ্য ঘোষণা। অন্যথায়, আস্থার সংকট সৃষ্টি হতে পারে এবং নতুন করে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি জোরালো হতে পারে।