কুষ্টিয়ায় আটার বাজারে হঠাৎ অস্থিরতা, বস্তাপ্রতি দাম বেড়েছে ২০০ টাকা পর্যন্ত

কুষ্টিয়ায় আটার বাজারে হঠাৎ অস্থিরতা, বস্তাপ্রতি দাম বেড়েছে ২০০ টাকা পর্যন্ত
কুষ্টিয়ায় হঠাৎ করেই আটার বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। গমের দামে সামান্য বৃদ্ধিকে কারণ দেখিয়ে মিল মালিকরা বস্তাপ্রতি ১৩০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন, যা ভোক্তাদের মাঝে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
জেলা শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, লাহিনী বটতলানগর মোহাম্মদপুরে সাব্বির অটো ফ্লাওয়ার মিল ৩৭ কেজির এক বস্তা আটা বিক্রি করছে ১,৪০০ টাকায়। একই ওজনের আটা বড় বাজারের সি আর পি ফ্লাওয়ার মিলে বিক্রি হচ্ছে ১,৪২০ টাকায় এবং সাতরানী ফ্লাওয়ার মিলের ‘সাতরানী’ ব্র্যান্ডের বস্তা মিলছে ১,৪৩০ টাকায়। অথচ মাত্র এক সপ্তাহ আগেও এসব আটার দাম ছিল ২০০ টাকা কম।
গমের বাজারে প্রতি মণে দাম বেড়েছে মাত্র ৫০-৬০ টাকা। কিন্তু মিলগুলো কেজিপ্রতি ৫ থেকে সাড়ে ৫ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়িয়ে দিয়েছে, যা বাস্তবতার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
জেলার পরিচিত গম ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ মোল্লা বলেন, “গমের দাম সামান্য বেড়েছে, তবে একইসঙ্গে ভুসির দাম বস্তাপ্রতি ৫০-৬০ টাকা কমেছে। সব মিলিয়ে কেজিপ্রতি দাম ২-৩ টাকার বেশি বাড়ার কথা নয়। এর বেশি দাম বৃদ্ধি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।”
ভুসি ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, “এটি বাজারের ওপর সরাসরি অরাজকতা। যথাযথ মনিটরিং না থাকায় মিলমালিকরা নিজেদের ইচ্ছেমতো দাম নির্ধারণ করছে।”
সি আর পি ফ্লাওয়ার মিলের একজন কর্মকর্তা দাম কিছুটা বাড়ার কথা স্বীকার করলেও অতিরিক্ত দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে আর কোনো উত্তর না দিয়ে ফোন কেটে দেন।
জেলা কৃষি বিপণন ও বাজার কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান জানান, গমে কেজিপ্রতি এক থেকে দেড় টাকা পর্যন্ত মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। ভুসির চাহিদা কমে যাওয়ায় মিলগুলো আটার উৎপাদন কিছুটা বাড়িয়েছে। ফলে আটা সামান্য বেশি দামে বিক্রি হতে পারে। তবে তার দাবি, কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ দুই টাকা পর্যন্তই দাম বাড়ানো হয়েছে।
তবে বাজারে বাস্তব চিত্র বলছে ভিন্ন কথা—যেখানে দাম বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি হারে। সাধারণ মানুষ তাই প্রশ্ন তুলছে, এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পেছনে আসলেই কি কেবল গমের দামের প্রভাব, নাকি এর পেছনে লুকিয়ে আছে বাজার নিয়ন্ত্রণে গাফিলতি ও অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি?