| ২৭ জুলাই ২০২৫
শিরোনাম:

মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনার ট্রমা কাটাতে কাউন্সেলিং সেন্টারে ভিড় শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের

মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনার ট্রমা কাটাতে কাউন্সেলিং সেন্টারে ভিড় শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের

মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনার ট্রমা কাটাতে কাউন্সেলিং সেন্টারে ভিড় শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের

ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা এখনো বিমানের দুর্ঘটনার ভয়াবহ স্মৃতি ভুলতে পারেনি। সহপাঠীদের সামনে দগ্ধ হতে দেখে শিশুমনগুলো মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। অনেকেই রাতে ঘুমাতে পারছে না, বিকট শব্দে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে, খাওয়ার রুচি কমে গেছে—এই মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা এখন ভরসা রাখছে স্কুলের কাউন্সেলিং সেন্টারে।

রোববার (২৭ জুলাই) সকালে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, মূল ফটকের পাশেই তিনটি কক্ষে চালু করা হয়েছে এই কাউন্সেলিং সেন্টার। সকাল থেকে অভিভাবকের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। ভেতরে চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে, যাদের মধ্যে শিক্ষকও আছেন।

কাউন্সেলিং সেন্টারে তিনজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ দায়িত্ব পালন করছেন—এর একজন প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব চিকিৎসক এবং বাকি দুইজন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট থেকে আসা বিশেষজ্ঞ। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত তারা সেবা দিচ্ছেন।

সেন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. শাহপারনেওয়াজ ইশা জানান, গতকাল প্রায় ২৫-৩০ জন শিক্ষার্থী এসেছিল, আর আজ প্রায় ৫০ জন চিকিৎসা নিয়েছে। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই ট্রমার বিভিন্ন উপসর্গে ভুগছে—যেমন বিকট শব্দে ভয় পাওয়া, দম বন্ধ হয়ে আসা, অনিদ্রা, উচ্চ রক্তচাপ, কান্না বা হঠাৎ আতঙ্কে ভেঙে পড়া।

এক শিক্ষার্থীর মা জানান, দুর্ঘটনার সময় তার ছেলে ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে মাঠে ছিল। বিমানের ধ্বংসস্তূপ তার মাথার ওপর দিয়ে গিয়েছিল। কয়েকদিন কানে শুনতে পায়নি, এখন কিছুটা স্বাভাবিক হলেও ঘুমাতে পারছে না এবং খাওয়া-দাওয়া কমে গেছে। কাউন্সেলিং সেন্টারে সেবা নিয়ে কিছুটা ভালো অনুভব করছে।

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল মোহাম্মদ মাসুদ আলম বলেন, “আমাদের আগে থেকেই কাউন্সেলিং সেন্টার ছিল। দুর্ঘটনার পর সেটার পরিসর বাড়ানো হয়েছে। চিকিৎসক বাড়ানো হবে এবং নিয়মিত শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের মানসিক সহায়তা দেওয়া হবে।”

এ উদ্যোগে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাচ্ছে আতঙ্কগ্রস্ত শিশুরা। তবে মানসিক সুস্থতায় দীর্ঘমেয়াদি সহায়তা অব্যাহত রাখার তাগিদও উঠে এসেছে অভিভাবক ও চিকিৎসকদের কাছ থেকে।

“নিজেরা পরিষ্কার না হলে জাতি পরিষ্কার হবে না” — পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনার ট্রমা কাটাতে কাউন্সেলিং সেন্টারে ভিড় শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের

"নিজেরা পরিষ্কার না হলে জাতি পরিষ্কার হবে না" — পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, “পরিচ্ছন্নতা আমাদের জাতীয় অভ্যাসে পরিণত না হলে, কোনো জাতি সত্যিকার অর্থে পরিচ্ছন্ন হতে পারে না।” তিনি বলেন, “আমরা নিজেরা যদি পরিবেশের প্রতি দায়িত্বশীল না হই, তাহলে দেশ পরিচ্ছন্ন রাখা কঠিন হবে।”

রোববার (২৭ জুলাই) বন অধিদপ্তরের কার্যালয়ে আয়োজিত জাতীয় বৃক্ষমেলা ২০২৫-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি জানান, এবারের বৃক্ষমেলায় বন বিভাগের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবকদের (ভলান্টিয়ার) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তবে তারা কতটা নিয়মিতভাবে কাজ করেছে তা নিশ্চিতভাবে বলা কঠিন। “পরশু মেলায় গিয়েও দেখেছি, অনেকে খাওয়ার উচ্ছিষ্ট যত্রতত্র ফেলে যাচ্ছেন—এটা খুবই দুঃখজনক,” বলেন তিনি।

বৃক্ষমেলায় স্টল বরাদ্দ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা এবার লটারির মাধ্যমে স্টল বরাদ্দ দিয়েছি। পুরো প্রক্রিয়াটি ছিল স্বচ্ছ, এবং এতে বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞদের সম্পৃক্ত করা হয়েছিল। অনেকে দুর্লভ দেশি ও কিছু বিদেশি গাছ এনেছেন, এজন্য আপনাদের ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই।”

নার্সারি মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনারা যেভাবে গাছের মাধ্যমে মানুষকে প্রকৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। তবে অনুরোধ করব—চারাগাছ পলিথিনের ব্যাগে না দিয়ে পরিবেশবান্ধব উপায়ে বিতরণ করুন। কারণ পলিথিন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা এবারের মেলায় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী ও পূর্ববর্তী বছরগুলোর বিজয়ীদের নিয়ে একটি ভলান্টিয়ার গ্রুপ গঠনের পরিকল্পনা করছি। সরকারি বাহিনী দিয়ে নয়, জনগণের অংশগ্রহণে এমন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে চাই। দেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে লোকবলের তো অভাব হবার কথা নয়।”

পরিবেশ রক্ষায় সকলে মিলে সম্মিলিত উদ্যোগের আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “শুধু আইন দিয়ে নয়, সচেতনতা ও নৈতিক দায়িত্ব থেকেই প্রকৃতিকে ভালোবাসতে শিখতে হবে।”

বৃক্ষমেলায় পৌনে ১৫ কোটি টাকার গাছ বিক্রি

মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনার ট্রমা কাটাতে কাউন্সেলিং সেন্টারে ভিড় শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের

বৃক্ষমেলায় পৌনে ১৫ কোটি টাকার গাছ বিক্রি

মাসব্যাপী জাতীয় বৃক্ষমেলায় এবার ১৬ লাখ ৯১ হাজার ৪২৩টি চারা বিক্রি হয়েছে। এসব চারার মোট বিক্রয়মূল্য ১৪ কোটি ৭৯ লাখ ৯ হাজার ৪৭৪ টাকা। চলতি বছরের ২৫ জুন থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত চলে এ বৃক্ষমেলা। এবারের মেলা চলাকালে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত রাজধানীতে জমজমাট পরিবেশে চলে চারা বেচাকেনা। মোট ১১২টি স্টল অংশ নেয় মেলায়। এর মধ্যে সরকারি স্টল ছিল ৮টি, বেসরকারি স্টল ৮টি, নার্সারির একক স্টল ৯২টি এবং ডাবল স্টল ১৮টি।

রোববার (২৭ জুলাই) জাতীয় বৃক্ষমেলা-২০২৫ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা দীপংকর বর।

তিনি জানান, এবারের মেলায় চারা বিক্রির মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল শোভাবর্ধনকারী গাছের চারা। মেলায় মোট ৪ লাখ ৫৪ হাজার ৫৭৪টি শোভাবর্ধনকারী চারা বিক্রি হয়।

এছাড়া ফলদ গাছ বিক্রি হয় ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৬৪০টি, বনজ ২ লাখ ৪৮ হাজার ২৭৪টি, ঔষধি এক লাখ ১৪ হাজার ৫১৫টি, মসলাজাতীয় গাছ এক লাখ ৪৪৯টি, ক্যাকটাস এক লাখ ২ হাজার ৮৯টি, অর্কিড ৭৪ হাজার ৫৪১টি।

পাশাপাশি দেশীয় বিলুপ্তপ্রায় বা বিরল প্রজাতির গাছের চারা বিক্রি হয়েছে ৩৭ হাজার ৩২১টি এবং অন্যান্য প্রজাতির ২ লাখ ২২ হাজার ২০টি চারা বিক্রি হয়েছে বলে জানান দীপংকর বর।

কুষ্টিয়ায় আটার বাজারে হঠাৎ অস্থিরতা, বস্তাপ্রতি দাম বেড়েছে ২০০ টাকা পর্যন্ত

মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনার ট্রমা কাটাতে কাউন্সেলিং সেন্টারে ভিড় শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের

কুষ্টিয়ায় আটার বাজারে হঠাৎ অস্থিরতা, বস্তাপ্রতি দাম বেড়েছে ২০০ টাকা পর্যন্ত

কুষ্টিয়ায় হঠাৎ করেই আটার বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। গমের দামে সামান্য বৃদ্ধিকে কারণ দেখিয়ে মিল মালিকরা বস্তাপ্রতি ১৩০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন, যা ভোক্তাদের মাঝে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

জেলা শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, লাহিনী বটতলানগর মোহাম্মদপুরে সাব্বির অটো ফ্লাওয়ার মিল ৩৭ কেজির এক বস্তা আটা বিক্রি করছে ১,৪০০ টাকায়। একই ওজনের আটা বড় বাজারের সি আর পি ফ্লাওয়ার মিলে বিক্রি হচ্ছে ১,৪২০ টাকায় এবং সাতরানী ফ্লাওয়ার মিলের ‘সাতরানী’ ব্র্যান্ডের বস্তা মিলছে ১,৪৩০ টাকায়। অথচ মাত্র এক সপ্তাহ আগেও এসব আটার দাম ছিল ২০০ টাকা কম।

গমের বাজারে প্রতি মণে দাম বেড়েছে মাত্র ৫০-৬০ টাকা। কিন্তু মিলগুলো কেজিপ্রতি ৫ থেকে সাড়ে ৫ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়িয়ে দিয়েছে, যা বাস্তবতার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

জেলার পরিচিত গম ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ মোল্লা বলেন, “গমের দাম সামান্য বেড়েছে, তবে একইসঙ্গে ভুসির দাম বস্তাপ্রতি ৫০-৬০ টাকা কমেছে। সব মিলিয়ে কেজিপ্রতি দাম ২-৩ টাকার বেশি বাড়ার কথা নয়। এর বেশি দাম বৃদ্ধি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।”

ভুসি ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, “এটি বাজারের ওপর সরাসরি অরাজকতা। যথাযথ মনিটরিং না থাকায় মিলমালিকরা নিজেদের ইচ্ছেমতো দাম নির্ধারণ করছে।”

সি আর পি ফ্লাওয়ার মিলের একজন কর্মকর্তা দাম কিছুটা বাড়ার কথা স্বীকার করলেও অতিরিক্ত দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে আর কোনো উত্তর না দিয়ে ফোন কেটে দেন।

জেলা কৃষি বিপণন ও বাজার কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান জানান, গমে কেজিপ্রতি এক থেকে দেড় টাকা পর্যন্ত মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। ভুসির চাহিদা কমে যাওয়ায় মিলগুলো আটার উৎপাদন কিছুটা বাড়িয়েছে। ফলে আটা সামান্য বেশি দামে বিক্রি হতে পারে। তবে তার দাবি, কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ দুই টাকা পর্যন্তই দাম বাড়ানো হয়েছে।

তবে বাজারে বাস্তব চিত্র বলছে ভিন্ন কথা—যেখানে দাম বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি হারে। সাধারণ মানুষ তাই প্রশ্ন তুলছে, এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পেছনে আসলেই কি কেবল গমের দামের প্রভাব, নাকি এর পেছনে লুকিয়ে আছে বাজার নিয়ন্ত্রণে গাফিলতি ও অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি?

×