| ২৬ জুলাই ২০২৫
শিরোনাম:

গাজীপুরে অনুমোদনবিহীন মারমেইড গ্রীন সিটি: সরকারি জমি দেখিয়ে কোটি টাকার প্রতারণা, গ্রাহকদের ক্ষোভে তোলপাড়

গাজীপুরে অনুমোদনবিহীন মারমেইড গ্রীন সিটি: সরকারি জমি দেখিয়ে কোটি টাকার প্রতারণা, গ্রাহকদের ক্ষোভে তোলপাড়

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে ‘পূর্বাচল মারমেইড গ্রীন সিটি’ নামে একটি প্রকল্পের আড়ালে চলছে ভয়াবহ প্রতারণা। জমির মালিকানা, সরকারি অনুমোদন ও মৌজা সংক্রান্ত ভুয়া তথ্য দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মারমেইড গ্রুপের বিরুদ্ধে।

 

কথিত কোম্পানির দাবিঃ

১,৫০০ বিঘার আবাসিক প্রকল্প, পাঁচটি ব্লক (এ, বি, সি, ডি ও ভিআইপি ব্লক), বিদ্যুৎ ও আধুনিক অবকাঠামোসহ একটি আদর্শ নগরী। তবে বাস্তবতা ভিন্ন। গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মতে, এই প্রকল্পের কোনো অনুমোদন নেই।

 

প্রকল্পের অবস্থান ও অনুমোদনের অবস্থাঃ

মারমেইড গ্রুপের বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে প্রকল্পটি গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের পুবাইল এলাকায়, চঙ্গের বাইদ ও নন্দীবাড়ি মৌজায়। কিন্তু স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই এলাকায় উল্লেখিত মৌজা সমূহে বেশিরভাগ জমি সরকারি এবং কবরস্থানের জন্য ক্রয়কৃত জমি অন্তর্ভুক্ত করে মারমেইড গ্রুপ প্লট বিক্রির প্রচারণা চালাচ্ছে।

 

প্রশাসনের বক্তব্যঃ

গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল মান্নান আবাসন নিউজ২৪-কে বলেন,

“মারমেইড গ্রুপ বা মারমেইড গ্রীন সিটি নামে কোনো প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। অনুমোদন ছাড়া প্রকল্প চালানো অবৈধ। আমরা শিগগিরই ব্যবস্থা নেব এবং সাধারণ মানুষকে প্রতারণা থেকে সাবধান থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।”

 

গাজীপুর জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীন বলেন,

“হাউজিং প্রকল্পের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে অনুমোদন বাধ্যতামূলক। মারমেইড গ্রুপ কোনো আবেদনই জমা দেয়নি। অনুমোদন ছাড়া প্রকল্প চললে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

 

গ্রাহকদের ক্ষোভ

প্রকল্পে বিনিয়োগ করা তিনজন গ্রাহক আবাসন নিউজ২৪-কে বলেন—

 

উত্তরার সাইফুল ইসলাম জানান,

আমি ৩ কাঠার প্লটের জন্য বুকিং দিই। টাকা দেওয়ার পর কাগজপত্র চাইলে তারা নানা অজুহাত দেখায়। এখন বলছে অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন, কিন্তু তিন মাস হয়ে গেছে।

 

মিরপুরের রুবিনা আক্তার বলেন,

সাইট ভিজিট করতে গেলে দেখি শুধু সাইনবোর্ড আর সাইনবোর্ড। আমাকে বিক্রয় প্রতিনিধি জানায়, সকল জমি কোম্পানি অনেক আগেই ক্রয় করে রেখেছে।আমি বিশ্বাস করে তিন কাঠা জমির সকল মূল্য পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করি কিন্তু ৬ মাস হয়ে গেল কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন দিচ্ছে না। আমি যার মাধ্যমে প্লট ক্রয় করেছি তিনিও এখন এই কোম্পানিতে নেই। বিক্রয় প্রতিনিধি বলেছেন দুই মাসের বেতন না দেওয়ার কারণে তিনি চাকুরি ছেড়ে চলে গিয়েছেন অন্য কোম্পানিতে।তিনি এটাও বলেছেন আমার টাকা রিফান্ড নেওয়ার জন্য।

 

পুরান ঢাকার আরেক গ্রাহক ইমরান হোসেন বলেন,

ভালো জায়গায় প্লট পাওয়ার আশায় বুকিং দিই। পরে বুঝতে পারি অনুমোদন নেই। ফোন করলে তারা ঘুরিয়ে কথা বলে। আমি এখন আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার চিন্তা করছি।

 

জমির মালিকদের অভিযোগঃ

স্থানীয় জমির মালিকরা জানান, কোম্পানি সাইট অফিসের জন্য জমি ভাড়া নিয়েছিল প্রতিমাসে টাকা দেওয়ার শর্তে। কিন্তু সেই টাকা আজও তারা পাননি। শামসুল আলম, আক্কাস আলী ও গেনদু মিয়া বলেন,

সাইনবোর্ড বসানোর জন্য আমাদের জমি ভাড়া নেয়। কিন্তু এক টাকাও দেয়নি। উল্টো আমাদের জমি দেখিয়ে অন্যের কাছে প্লট বিক্রি করছে। প্রশাসনকে অনুরোধ করছি এই প্রতারণার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।

মারমেইড গ্রুপের মারমেইড গ্রীন সিটিতে যদি না কিনে জমির মালিকদের কাছ থেকে ফসলের সমপরিমাণ টাকা দিয়ে ভাড়া নিয়ে বাউন্ডারি দেওয়া হচ্ছে
মারমেইড গ্রীন সিটিতে জমির মালিকদের ফসলি জমি ভাড়া নিয়ে বাউন্ডারি দিচ্ছে। ফসলের দিগুন টাকা দিয়ে এই প্রতারণা করে আসছে।

কোম্পানির কর্মীদের অভিযোগঃ

মারমেইড গ্রুপের সাবেক বিক্রয় প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, গ্রাহকরা বুকিং দেওয়ার পর কাগজ চাইলে কোম্পানি তা দিতে পারে না। কর্মকর্তারা বলতেন—কিস্তিতে বিক্রি হয়েছে, কাগজ লাগবে না।

তাদের দাবি, প্রায় ২০ জন বেতন না পেয়ে একসাথে চাকরি ছাড়ি। পরে লেবার কোর্টে মামলা করে বেতন পাই। তারা আরও যোগ করেন আমাদের বেতন দিতেই যদি কোম্পানি এরকম করে তাহলে গ্রাহকদের তো প্লট দিবে না এটাই প্রমাণ হয়।

 

কোম্পানির প্রতিক্রিয়া ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নীরবতাঃ

মারমেইড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল হুদার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি প্রকল্পের অনুমোদনের ব্যাপারে প্রশ্ন করাতে ফোন কেটে দেন, পরে আর ফোন ধরেননি।

তবে উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) রাকিবুল হাসান বলেন,

“আমরা বৈধভাবে ব্যবসা করছি। কিছু রেজিস্ট্রিতে দেরি হয়েছে, শিগগিরই সমাধান হবে।”

তবে সরকারি অনুমোদন না থাকার বিষয়ে তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট জবাব দেননি।

 

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শঃ

রিয়েল এস্টেট বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, অনুমোদনপত্র যাচাই না করে বিনিয়োগ করা ঝুঁকিপূর্ণ। গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা জেলা প্রশাসনের অনুমোদন ছাড়া কোনো প্রকল্পে টাকা দিলে প্রতারণার শিকার হওয়ার ঝুঁকি শতভাগ।

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির আহ্বানে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কাছে ২২০ এমপির চিঠি

গাজীপুরে অনুমোদনবিহীন মারমেইড গ্রীন সিটি: সরকারি জমি দেখিয়ে কোটি টাকার প্রতারণা, গ্রাহকদের ক্ষোভে তোলপাড়

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বানে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারকে চিঠি দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রায় ২২০ জন আইনপ্রণেতা। নয়টি রাজনৈতিক দলের এই আইনপ্রণেতাদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি লেবার পার্টির সদস্য, যা বিষয়টিকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “আমরা বুঝি, যুক্তরাজ্যের একার পক্ষে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তবে, যুক্তরাজ্য যদি ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তাহলে তা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবে এবং ভবিষ্যতের কূটনৈতিক কাঠামো গঠনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”

এই আহ্বান এমন এক সময়ে এসেছে, যখন ফ্রান্স আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ওপর এই চিঠি রাজনৈতিক চাপ বাড়াচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বিষয়টি নিয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরন এবং জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিক মের্জ-এর সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন। স্টারমার জানান, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, তবে সেটি হবে একটি বৃহৎ রাজনৈতিক কৌশলের অংশ, যার মাধ্যমে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

মাইলস্টোন স্কুল আরও দুই দিনের জন্য বন্ধ শিক্ষার্থীদের জন্য থাকছে কাউন্সেলিং

গাজীপুরে অনুমোদনবিহীন মারমেইড গ্রীন সিটি: সরকারি জমি দেখিয়ে কোটি টাকার প্রতারণা, গ্রাহকদের ক্ষোভে তোলপাড়

রাজধানীর দিয়াবাড়িতে অবস্থিত মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ আগামী রোববার (২৭ জুলাই) ও সোমবার (২৮ জুলাই) বন্ধ থাকবে। শনিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রিন্সিপাল মোহাম্মদ জিয়াউল আলম।

তিনি বলেন, “সম্প্রতি ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার কারণে শিক্ষার্থীরা এখনও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের ক্লাসে ফেরাতে চাই, তবে তার আগে পর্যাপ্ত মানসিক কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজন রয়েছে। অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে এবং তাদের সহযোগিতায় শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার চেষ্টা করছি।”

প্রিন্সিপাল আরও জানান, নিখোঁজ থাকার খবর পাওয়া পাঁচজনের মধ্যে তিনজন শিক্ষার্থীসহ সবার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে আর কোনো শিক্ষার্থী নিখোঁজ নেই বলেও নিশ্চিত করেছেন তিনি।

এদিকে, শনিবার সকালেও মাইলস্টোন স্কুল গেটের সামনে সাধারণ মানুষের ভিড় দেখা গেছে। অনেকে গেটের ফাঁক দিয়ে স্কুল প্রাঙ্গণের ভেতর দেখার চেষ্টা করলেও দর্শনার্থীদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে।

স্কুল পুনরায় কখন চালু হবে তা পরবর্তী সময়ে জানানো হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

সাংবাদিকের মোবাইল ছি’ন’তা’ই ও পুলিশের অসদাচরণ চার পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার

গাজীপুরে অনুমোদনবিহীন মারমেইড গ্রীন সিটি: সরকারি জমি দেখিয়ে কোটি টাকার প্রতারণা, গ্রাহকদের ক্ষোভে তোলপাড়

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সাংবাদিক আহমাদ ওয়াদুদের মোবাইল ছিনতাই ও পরবর্তী পুলিশি অসদাচরণের ঘটনায় চার পুলিশ সদস্যকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। একইসঙ্গে এই ঘটনায় আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখও প্রকাশ করেছে তারা।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ পুলিশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে বলা হয়, সাংবাদিক আহমাদ ওয়াদুদের “মোহাম্মদপুর থানা পুলিশের সঙ্গে এক ঘণ্টা” শীর্ষক ফেসবুক পোস্ট পুলিশের নজরে এসেছে। ওই পোস্টে উত্থাপিত অভিযোগ আমলে নিয়ে চার পুলিশ সদস্য—এসআই জসিম, এএসআই আনারুল, কনস্টেবল নুরুন্নবী ও কনস্টেবল মাজেদুল ইসলামকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে ডিপিএস অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, পুলিশ সদস্যদের অসদাচরণের জন্য বাংলাদেশ পুলিশ আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে। এ ছাড়া ছিনতাইকৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজন আসামিকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাত ১১টার দিকে মোহাম্মদপুর তিন রাস্তার মোড়ে একদল সশস্ত্র দুর্বৃত্তের হামলার শিকার হন সাংবাদিক আহমাদ ওয়াদুদ। তার মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ ও টাকা ছিনতাই করা হয়। তিনি চাপাতির আঘাতে সামান্য আহত হন, তবে তার স্ত্রী নিরাপদে ছিলেন।

ঘটনার পরপরই ওয়াদুদ ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন, যেখানে পুলিশের দায়িত্বহীনতা ও দুর্ব্যবহার নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তার এই পোস্ট মুহূর্তেই ভাইরাল হয় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।

ঘটনার প্রতিবাদে ‘ঐক্যবদ্ধ মোহাম্মদপুর’ ব্যানারে শুক্রবার বিকালে মোহাম্মদপুর থানার সামনে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভকারীরা থানার ওসি আলী ইফতেখার হাসানের অপসারণের দাবিও জানান।

×