আবুধাবি অ্যাওয়ার্ডজয়ী ডা. আতরাকের শিশু নিরাপত্তা মিশন: বাধ্যতামূলক শিশুর আসন ও সিপিআর প্রশিক্ষণ

প্রখ্যাত শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. তাইসির আতরাক ২০১১ সালে ‘আবুধাবি অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছিলেন শিশুদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় অনন্য ভূমিকা রাখার জন্য। যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ২০০৮ সালে আবুধাবিতে আসার পর থেকে তিনি নবজাতক থেকে শুরু করে শিশুদের সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
সম্প্রতি আবুধাবি অ্যাওয়ার্ডের ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে খালিজ টাইমস-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, সংযুক্ত আরব আমিরাতে শিশুর নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে তিনি এমন নীতিমালার জন্য কাজ করছেন, যাতে নবজাতককে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্রের আগে গাড়িতে শিশু আসন (কার সিট) বাধ্যতামূলকভাবে স্থাপন করতে হয়।
ডা. আতরাক বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে কোনো নবজাতককে সঠিকভাবে শিশু আসনে না বসালে হাসপাতাল ছাড়তে দেয় না। আমি চাই, আমাদের দেশেও এ ব্যবস্থা চালু হোক। শিশুর প্রথম যাত্রা হোক সবচেয়ে নিরাপদ।’
আবুধাবি অ্যাওয়ার্ড জেতার পর তার কাজের পরিধি আরও বেড়ে যায়। স্বাস্থ্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পে যুক্ত হয়ে শিশু সুরক্ষা নিয়ে তিনি কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
তার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হলো নবজাতকের ছাড়পত্রের আগে বাবা-মাকে বাধ্যতামূলক সিপিআর প্রশিক্ষণ দেওয়ার নিয়ম প্রবর্তন। শুরুতে কেউ আগ্রহী হবে না বলে ধারণা করা হলেও, এক বছর পর দেখা যায়, অভিভাবকরাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন এবং বাস্তবে তা অনেক শিশুর প্রাণ বাঁচাতে সহায়ক হয়েছে।
চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি ডা. আতরাক গৃহকর্মী, অভিভাবক ও বাসচালকদের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা ও সচেতনতামূলক কর্মশালাও পরিচালনা করেন।
আবুধাবি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে আরেক অনুপ্রেরণার নাম জাফারানা আহমেদ খামিস। ১১ সন্তানের মা জাফারানা ‘পিপল অব ডিটারমিনেশন’-এর জন্য দীর্ঘদিন ধরে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন। তার দুই মেয়ে স্পেশাল অলিম্পিকসে স্বর্ণপদক জিতেছেন।
২০০৭ সাল থেকে আবুধাবি স্পোর্টস ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তিনি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কিশোরীদের অনুশীলনে আনা-নেওয়ার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। ২০২১ সালে তার অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনিও ‘আবুধাবি অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন।
এ বছর শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের পৃষ্ঠপোষকতায় ২২ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে নতুন আসর।