পাকিস্তানে ভারি বৃষ্টি ও বজ্রপাতে মৃ’তের সংখ্যা ২২১

পাকিস্তানে টানা মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২১ জনে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) এক বিবৃতিতে দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ) জানিয়েছে, নতুন করে বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ি অঞ্চলে আকস্মিক বন্যা, ভূমিধস ও বজ্রপাতে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি আরও বেড়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে দুইজন পুরুষ ও তিনজন শিশুসহ আরও পাঁচজন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। এনডিএমএ-র তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত ৫৯২ জন আহত হয়েছেন — যাদের মধ্যে ৭৭ জন পুরুষ, ৪০ জন নারী ও ১০৪ জন শিশু।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঞ্জাব প্রদেশ, যেখানে এখন পর্যন্ত ১৩৫ জন মারা গেছে এবং ৪৭০ জন আহত হয়েছেন। খাইবার পাখতুনখোয়ায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪০ জন, সিন্ধে ২২ জন, বেলুচিস্তানে ১৬ জন এবং ইসলামাবাদে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আজাদ কাশ্মীরে একজন নিহত ও ছয়জন আহত হয়েছেন, গিলগিট-বালতিস্তানে তিনজন আহত হয়েছেন।
এনডিএমএ জানিয়েছে, অধিকাংশ প্রাণহানি হয়েছে ভবনধস, নদীতে ডুবে যাওয়া, ভূমিধস, আকস্মিক বন্যা, বজ্রপাত ও বিদ্যুৎস্পৃষ্টের কারণে। মৌসুমের শুরু থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৮০৪টি বাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছে এবং ২০০টিরও বেশি গবাদি পশু মারা গেছে।
টানা বৃষ্টিতে বাবুসর এলাকায় জরুরি অবস্থা জারি করেছে এনডিএমএ। সেখানে ৭ থেকে ৮ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধস দেখা দিয়েছে, অন্তত ১৪ থেকে ১৫টি রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ রাস্তাগুলো থেকে আটকে পড়া পর্যটকদের নিরাপদে চিলাস শহরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তান আবহাওয়া বিভাগ (পিএসডি) জানিয়েছে, কাশ্মীর, খাইবার পাখতুনখোয়া, ইসলামাবাদ, পাঞ্জাব ও গিলগিট-বালতিস্তানের কিছু অংশে আরও ভারি বৃষ্টিপাত, বজ্রপাত ও দমকা হাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার জলবায়ুর স্বাভাবিক অংশ হিসেবে মৌসুমি বৃষ্টি কৃষি ও পানির উৎস পুনরুজ্জীবনে গুরুত্বপূর্ণ হলেও নগরায়ণ, দুর্বল নিষ্কাশনব্যবস্থা ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই বৃষ্টি দিন দিন প্রাণঘাতী দুর্যোগে রূপ নিচ্ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বাসিন্দাদের, বিশেষ করে বন্যাপ্রবণ ও নিচু এলাকার মানুষদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে।