গাজা যু’দ্ধ বন্ধের আহ্বান ২৭ দেশের মানবিক সংকটের গভীরতা নিয়ে তীব্র বার্তা

গাজায় চলমান যুদ্ধের অবসানের জন্য দুই ডজনেরও বেশি দেশ জোরালোভাবে আহ্বান জানিয়েছে। সোমবার (২১ জুলাই) স্থানীয় সময় এক যৌথ বিবৃতিতে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ২৭টি দেশ গাজায় মানবিক সংকটকে ‘নতুন গভীরতা’তে পৌঁছেছে বলে উল্লেখ করেছে।
এই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে এবং যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি ও জরুরি ত্রাণ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। স্বাক্ষরকারী দেশগুলো জানিয়েছে, বেসামরিক নাগরিকদের দুর্ভোগ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং খাবার, পানি ও চিকিৎসা সরঞ্জাম আটকে রাখা অমানবিক।
জাতিসংঘ ও গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, মে মাসের শেষ থেকে খাদ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে অন্তত ৮৭৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ইসরায়েলের দুই মাসের অবরোধ কিছুটা শিথিল করার পরও খাদ্যের জন্য মানুষের সংগ্রাম থামেনি।
যৌথ বিবৃতিতে দেশগুলো জানায়, ‘ইসরায়েলের সহায়তা বিতরণের পদ্ধতি বিপজ্জনক, অস্থিতিশীলতা বাড়ায় এবং গাজাবাসীকে মানবিক মর্যাদা থেকে বঞ্চিত করছে। আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুযায়ী ইসরায়েলকে তার দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
আল জাজিরা জানিয়েছে, গাজা যুদ্ধের বিষয়ে ইসরায়েলের মিত্র দেশগুলোর এমন কঠোর বিবৃতি এটিই প্রথম, যা ইউরোপের বাইরেও বিস্তৃত আন্তর্জাতিক ঐক্যমতের ইঙ্গিত দেয়।
অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা, জাপানসহ একাধিক দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ল্যামি সংসদে ভাষণ দিয়ে যুদ্ধবিরতির জন্য যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিশরকে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এই যুদ্ধের কোনো সামরিক সমাধান নেই। পরবর্তী যুদ্ধবিরতিই চূড়ান্ত যুদ্ধবিরতি হতে হবে।’
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। ওই হামলায় অন্তত ১,১২৯ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়, যাদের মধ্যে এখনও ৫০ জন গাজায় আটক রয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। তবে তাদের মধ্যে অর্ধেকেরও কম জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৯,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।