কক্সবাজার ও গোপালগঞ্জের সহিংসতা: দায় কার? বিশ্লেষণ করলেন মঞ্জুরুল আলম পান্না

মঞ্জুরুল আলম পান্না : ছবি-সংগৃহীত
সাম্প্রতিক সময়ে কক্সবাজার ও গোপালগঞ্জে ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক সহিংসতা নিয়ে নিজের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্না। তিনি বলেছেন, কোনো সহিংস ঘটনার দায় এককভাবে কোনো পক্ষের ওপর চাপিয়ে না দিয়ে রাজনৈতিক বাস্তবতা, প্রতিক্রিয়ার কারণ ও পরিস্থিতির গভীরে নজর দিতে হবে।
পান্না বলেন, ‘কক্সবাজারে যে সমাবেশে ভাঙচুর হয়েছে, তা আওয়ামী লীগের কেউ করেননি। বিএনপির নেতাকর্মীরাই মূলত এই হামলায় জড়িত ছিলেন, কারণ সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়েছিল।’
তিনি আরো বলেন, ‘একজন বিএনপি নেতাকে নিয়ে এমন মন্তব্যে যদি এত বড় প্রতিক্রিয়া হয়, তাহলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কেউ কটূক্তি করলে আওয়ামী লীগের কর্মীরা কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবে, সেটাও ভাবা উচিত।’
ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে তিনি বলেন, কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরি চত্বরে অনুষ্ঠিত এক সভায় এনসিপি নেতা নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদকে ‘নব্য গডফাদার’ আখ্যা দিয়ে জমি দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলেন। এরপরই সভাস্থলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, বিএনপির নেতাকর্মীরা মঞ্চ ভাঙচুর করেন।
গোপালগঞ্জ প্রসঙ্গে মঞ্জুরুল আলম পান্না বলেন, ‘গোপালগঞ্জে যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও এনসিপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনার পর বিএনপি শেখ হাসিনাকে দায়ী করছে। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, শেখ হাসিনা বাকস্বাধীনতা চান না, রাজত্ব কায়েম করতে চান। কিন্তু যারা নিহত বা আহত হলেন, সেই মানবিক দিকটা নিয়ে বিএনপির কোনো কথা নেই কেন?’
তিনি আরও বলেন, ‘গোপালগঞ্জে এখন ১৪৪ ধারা জারি, কারফিউ চলছে, এলাকা ফাঁকা হয়ে গেছে। অথচ বিএনপি এসব নিয়ে কোনো বক্তব্য দিচ্ছে না।’
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার যে নির্বাচন চায় না, তা সবারই জানা। সাধারণ মানুষও বুঝে গেছে। অথচ বিএনপি সেটা বুঝেও না বোঝার ভান করছে। কখনো সরকারপন্থী, কখনো সরকারবিরোধী অবস্থান নিয়ে তারা নিজেরাই নিজেদের দুর্বল করছে। ফলে দলটি বারবার রাজনৈতিক ট্র্যাপে পা দিচ্ছে।’
তার মন্তব্য, ‘বিএনপি চাইলে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারত। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, ১৮ বছর তো দূরের কথা, তারা আর কত বছর পর ক্ষমতায় ফিরতে পারবে, তা বলা মুশকিল।’