ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বেই ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হ’ত্যা : ডিএমপি’

রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে প্রকাশ্যে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁন ওরফে সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যার মূল কারণ ‘ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব’ বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, সোহাগ এক সময় সাবেক সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ভাগ্নে পিল্লুর ছত্রছায়ায় পল্লী বিদ্যুতের চোরাই তারের ব্যবসা করতেন। সেসব চোরাই তার কিনে অ্যালুমিনিয়ামের ফ্যাক্টরিতে সরবরাহ করতেন। তবে সরকারের পরিবর্তনের পর তিনি রাজনৈতিক অবস্থান বদলে নতুন গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত হন। এতে ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধ তৈরি হয়, যা শেষ পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডে গড়ায়।
প্রকাশ্যে পাথর নিক্ষেপে হত্যাকাণ্ড গত ৯ জুলাই বিকেলে রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ৩নং গেটের সামনে কয়েকজন দুর্বৃত্ত দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সোহাগকে কুপিয়ে ও পাথর ছুঁড়ে হত্যা করে। পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা মবের মতো জমায়েত ঠেকানোর চেষ্টা করে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন মাহমুদুল হাসান মহিন ও রবিনকে তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার করা হয়। পরে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আরও সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পাথর নিক্ষেপকারীরও পরিচয় মিলেছে ঘটনার সময় পাথর নিক্ষেপকারীর পরিচয় অজানা থাকলেও পরবর্তীতে পুলিশের বিশেষ টিমের সহায়তায় তার নাম-পরিচয় শনাক্ত হয়। অভিযুক্ত রেজওয়ান উদ্দিন অভিকে পটুয়াখালী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, তিনি ধর্মান্তরিত মুসলিম।
ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় মোট ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের ধরতে অভিযান চলছে।
এজাহার নিয়ে বিভ্রান্তি এজাহার সংক্রান্ত বিভ্রান্তির বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার জানান, সোহাগের সাবেক স্ত্রী, সৎ ভাই ও বড় বোনের মধ্যে একাধিকবার খসড়া এজাহার তৈরি হয়। বাদীর মেয়ে থানা থেকে সেই খসড়া ছবি তোলায় পরে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত নিহতের বড় বোন মঞ্জু আরা বেগম ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে চূড়ান্ত এজাহার দাখিল করেন।
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির প্রতিশ্রুতি ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘‘আমরা সবাইকে আইনের আওতায় আনব। এমন জঘন্য হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, তার জন্য অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।’’
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহমেদ, লালবাগ বিভাগের ডিসি মো. জসিম উদ্দিন ও মিডিয়া বিভাগের ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।