| ১৫ জুলাই ২০২৫
শিরোনাম:

শ্যামনগরে চিংড়ি ঘের দখলের অভিযোগে জমির মালিকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি

শ্যামনগরে চিংড়ি ঘের দখলের অভিযোগে জমির মালিকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় চিংড়ি ঘের দখলের অভিযোগে ক্ষুব্ধ জমির মালিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা মানববন্ধন করেছেন।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুর ১২টায় শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

 

অভিযোগে জানা যায়, প্যান্ডামিক ফিজারিজের মালিক এ.এম. সাইদুর রহমান ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে প্রায় ১০০০ বিঘা জমির লিজের টাকা পরিশোধ না করে দখল করে রেখেছেন। জমির মালিকরা পাওনা টাকা চাইলে তাদের নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে, এমনকি মিথ্যা মামলায় হয়রানি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।

 

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘লিজ চুক্তির মেয়াদ শেষ হলেও আমাদের জমি ফেরত দেওয়া হচ্ছে না। উল্টো টাকা চাইলে মামলা আর হুমকি ধামকি! আমরা আমাদের পৈত্রিক জমি ফেরত চাই, ন্যায্য পাওনা বুঝে পেতে চাই।’

 

মানববন্ধনে অংশ নেন মুন্সিগঞ্জ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মোড়ল, মো. আব্দুল হালিম, রফিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ আবু হামজা, ওমর ফারুক, হাবিবুর রহমান, সিরাজুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, আরশাদ আলীসহ অনেকে।

 

পরে ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছে লিখিতভাবে স্মারকলিপি প্রদান করেন এবং দ্রুত দখলমুক্তির দাবি জানান।

আবাসন নিউজ২৪-এর অনুসন্ধানে ‘মেগা টাউন’ প্রকল্প বন্ধ, প্লট কিনে প্রতারিত না হতে রাজউক চেয়ারম্যানের কড়া সতর্কবার্তা

শ্যামনগরে চিংড়ি ঘের দখলের অভিযোগে জমির মালিকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) অবশেষে বহুল আলোচিত ‘মেগা টাউন’ প্রকল্পের সকল কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে। আবাসন নিউজ২৪-এর একের পর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে আসে অনুমোদনহীন প্লট বিক্রি, ভুয়া জমির মালিকানা ও গ্রাহক প্রতারণার চাঞ্চল্যকর তথ্য—যার প্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নেয় রাজউক।

 

রাজউক-এর স্মারক নং-২৫.৩৯.০০০০.০৩১.২৭.০০১.২১-৭৯১, তারিখ ১৫/০৭/২০২৫ ইং, স্বাক্ষরিত নবায়ন খীসা, উপনগর পরিকল্পনাবিদ-২, নগর পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন শাখা, রাজধানী উন্নয়ন কর্পোরেশন থেকে এ নির্দেশনা জারি করা হয়।

রাজউক কর্তৃপক্ষ মেগা বিল্ডার্সের "মেগা টাউন" প্রকল্প বন্ধের জন্য চিঠি দিয়েছে।
রাজউক থেকে অবৈধ অনুমোদনহীন “মেগা টাউন” বন্ধের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।

বিশ্বাস বিল্ডার্সের জমিতে মেগা টাউনের সাইনবোর্ড’

স্থানীয় দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক শিকদার আবাসন নিউজ২৪-কে বলেন—

ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এই প্রকল্পের কোনো অনুমোদন দেওয়া হয়নি। উপরন্তু বিশ্বাস বিল্ডার্সের ক্রয়কৃত জমিতে মেগা টাউনের সাইনবোর্ড বসিয়ে মানুষকে প্রতারিত করা হচ্ছে—এটা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।

রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্টের হুঁশিয়ারি

রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট হাজী দেলোয়ার হোসেন বলেন—

রিহ্যাবের সদস্য হলেই কোনো কোম্পানি দুর্নীতি করবে না—এটা ভুল ধারণা। মেগা বিল্ডার্স লিমিটেডের কোনো ল্যান্ড প্রজেক্ট সম্পর্কে আমরা অবগত নই। রাজউক যখন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে, তার মানেই এখানে প্রতারণার প্রমাণ আছে। সকল গ্রাহককে অনুরোধ করব—ভুলেও অনুমোদনহীন প্রকল্পে বিনিয়োগ করবেন না, বৈধ কাগজপত্র যাচাই করে তবেই টাকা দেবেন।

 

বিএলডিএ ও ভূমি অফিসের সাফ বক্তব্য

বাংলাদেশ ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিএলডিএ)-এর তথ্য অনুযায়ী মেগা বিল্ডার্স লিমিটেড তাদের সদস্য নয়।

নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা, খ অঞ্চল) টিএম রাহসিন কবির বলেন—

মেগা বিল্ডার্স কোনো জমি অধিগ্রহণের আবেদন করেনি বা অনুমোদন নেয়নি। অনুমোদন ছাড়া কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া সম্পূর্ণ বেআইনি—এ অভিযোগ পেলে সাথে সাথেই আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

বন অধিদপ্তরের পদক্ষেপ

নারায়ণগঞ্জের বন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এ এইচ এম রাশেদ বলেন—

লিখিত অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেব। রাজউক যখন প্রকল্প বন্ধ করেছে, তখন আমাদের দায়িত্বও নিশ্চিত করা যে আর কোনো অবৈধ কর্মকাণ্ড এখানে না চলে।

 

আইনজীবীর পরামর্শ

ব্যারিস্টার এস এম শাকিল পারভেজ বলেন—

রাজউকের নির্দেশেই প্রমাণিত, প্রকল্পটি অবৈধ। গ্রাহকদের উচিত দ্রুত টাকা ফেরতের উদ্যোগ নেয়া, নইলে কোম্পানি ‘প্রকল্প বন্ধ’ অজুহাতে অর্থ আত্মসাৎ করতে পারে।

 

‘বিশ্বাস বিল্ডার্স’ বলছে কী?

বিশ্বাস বিল্ডার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন—

এই জায়গা আমাদের বহু আগেই ক্রয়কৃত। কিছু অসাধু চক্র সাইনবোর্ড বসিয়ে প্রতারণা করছে। প্রকৃত মালিকানা যাচাই না করে কেউ যেন টাকা না দেন।

 

কেন অনুমোদন জরুরি?

আসল আবাসন প্রকল্প পরিচালনার জন্য ভূমি অফিস, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা, জেলা প্রশাসন ও বিএলডিএ থেকে  অনুমোদন ও NOC নিতে হয়। পাশাপাশি সাইট অফিস, বৈধ দলিলপত্র ও সঠিক ক্রয়-দখল নিশ্চিত করতে হয়—এসব ছাড়া কোনো প্রকল্পকে বৈধ ধরা যায় না। অথচ মেগা বিল্ডার্স লিমিটেডের মেগা টাউন প্রকল্পের কোনো অনুমোদন নেই। পাশাপাশি এক শতাংশ জমিও নেই।

 

রাজউক চেয়ারম্যানের স্পষ্ট বার্তা

রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোঃ রিয়াজুল ইসলাম আবাসন নিউজ২৪-কে বলেন—

রাজউক কখনো অনুমোদনহীন কোনো প্রকল্পের বৈধতা দেয় না। তাই মেগা টাউনের কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চকচকে বিজ্ঞাপন দেখে নয়—রাজউকের অনুমোদনপত্র যাচাই করে তবেই বিনিয়োগ করুন। নইলে প্রতারিত হবেন।

দুদকের নজরে হাসিনার ছেলে জয় ও মেয়ে পুতুলের দান-অনুদান, এনবিআরকে নথি তলবের চিঠি

শ্যামনগরে চিংড়ি ঘের দখলের অভিযোগে জমির মালিকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি

গণঅভ্যুত্থানের মুখে ভারত আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও মেয়ে—সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল—এখন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানের মুখে।

 

দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জয় প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) এবং পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশন যে বিপুল দান ও অনুদান পেয়েছে, তার হিসাব-নিকাশে জটিলতার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দিয়ে সব নথি ও ব্যাংক লেনদেনের তথ্য দ্রুত সরবরাহ করতে বলা হয়েছে।

 

দুদকের উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম রোববার এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, “রাষ্ট্রীয় অর্থের অপব্যবহার এবং ব্যাংকের সিএসআর তহবিল থেকে অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। এজন্য গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র জব্দ করা প্রয়োজন।”

 

দুদক বলছে, রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে রাষ্ট্রীয় অর্থ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও অভিযোগ এসেছে। একইসঙ্গে, পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধেও রয়েছে অনুদান আত্মসাতের অভিযোগ।

 

এ বিষয়ে সুষ্ঠু অনুসন্ধান করতে উপপরিচালক মনিরুল ইসলামকে প্রধান করে সাত সদস্যের অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়েছে। দলে রয়েছেন সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া, মুবাশ্বিরা আতিয়া তমা, এস এম রাশেদুল হাসান, এ কে এম মুর্তজা আলী সাগর, মনিরুল ইসলাম ও উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন।

 

উল্লেখ্য, গত মার্চে পুতুলের বিরুদ্ধে ৩৩ কোটি টাকার অনিয়ম ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অঞ্চলের পরিচালক পদ ‘বাগিয়ে নেওয়া’র অভিযোগে দুদক দুইটি মামলা করেছে। এর আগেও পূর্বাচলে তথ্য গোপন করে প্লট বরাদ্দের অভিযোগে জয় ও পুতুলের বিরুদ্ধে মামলা হয়।

হাইকোর্টে স্থগিত টিউলিপ সিদ্দিকের ফ্ল্যাট জালিয়াতি মামলা, আপিলের ঘোষণা দুদকের

শ্যামনগরে চিংড়ি ঘের দখলের অভিযোগে জমির মালিকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি

শেখ রেহানার কন্যা ও ব্রিটিশ সংসদ সদস্য টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দায়ের করা ফ্ল্যাট জালিয়াতির মামলার কার্যক্রম হাইকোর্ট তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন। তবে হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে শিগগিরই আপিল করবে দুদক।

 

গত ৮ জুলাই বিচারপতি মোহাম্মদ আলী ও বিচারপতি এস কে তাহসিন আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ আসামি শাহ মো. খসরুজ্জামানের আবেদনের শুনানি শেষে মামলাটির ওপর রুল জারি করে স্থগিতাদেশ দেন।

দুদকের আইনজীবী এম এ আজিজ খান জানিয়েছেন, এই মামলার স্থগিতাদেশ বাতিলের জন্য উচ্চ আদালতে আপিলের প্রস্তুতি চলছে।

 

প্রসঙ্গত, অভিযোগ আছে গুলশানের একটি প্লট নিয়ে ইস্টার্ন হাউজিংকে অনৈতিক সুবিধা দেওয়ার বিনিময়ে একই ভবনে বিনামূল্যে একটি ফ্ল্যাট পেয়েছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক। এ ঘটনায় দুদক গত ১৫ এপ্রিল টিউলিপের পাশাপাশি রাজউকের সাবেক দুই কর্মকর্তা শাহ খসরুজ্জামান ও সরদার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করে।

মামলার তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছিল বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে। এমন সময়ে আসামিপক্ষের এক চিঠিতে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের খবর জানতে পারে দুদক।

×