তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পঞ্চদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সময়ে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের যে বিধান করা হয়েছিল, তা অবৈধ ঘোষণা করে হাই কোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর স্বাক্ষরের পর ১৩৯ পৃষ্ঠার এই বহুল আলোচিত রায় প্রকাশিত হয়।
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা দুইটি রিটের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর আদালত রায় দেন। রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার পক্ষে রায় দেন আদালত। একইসঙ্গে সংবিধানে গণভোটের বিধান পুনর্বহাল করার কথাও বলা হয়েছে।
রায়ে আদালত পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেছেন, ‘গণতন্ত্র হচ্ছে সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর অংশ। এটি বিকশিত হয় অবাধ, সুষ্ঠু ও প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের মাধ্যমে। দলীয় সরকারের অধীনে বিগত তিনটি সংসদ নির্বাচনে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেনি। ফলে জনগণের মধ্যে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের আস্থা তৈরি হয়নি, যার ফলে জুলাই গণঅভ্যুত্থান হয়েছে।’
রায়ে বলা হয়, জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ীই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে যুক্ত হয়েছিল এবং এটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর অংশ হয়ে গেছে।
২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের ৫৪টি ধারা সংশোধন করা হয়েছিল। এর মধ্যে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলসংক্রান্ত সংশোধনী আইন ২০ ও ২১ ধারা এবং ৭ক, ৭খ, ৪৪ (২) অনুচ্ছেদ সংবিধানবিরোধী ঘোষণা করা হয়েছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি গত বছর আগস্টে এই সংশোধনীকে চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি শেষে হাই কোর্ট রুল জারি করে এবং রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানির পর এই রায় দেন আদালত।