
পবিত্র ঈদুল আজহা ও সরকারি ছুটিকে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরার শ্যামনগরের আকাশলীনা ইকোট্যুরিজম সেন্টার পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। সুন্দরবনের গা ঘেঁষে গড়ে ওঠা এই ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র ঈদের পর থেকেই পরিণত হয়েছে এক প্রাণচাঞ্চল্যময় আনন্দভূমিতে।
ছুটি উপভোগ করতে আসা শিশু থেকে শুরু করে মধ্যবয়সী ও প্রবীণরাও এখানে এসে প্রকৃতির কোলে হারিয়ে যাচ্ছেন। কেউ ছবি তুলছেন, কেউ নৌকা ভ্রমণে মেতে উঠছেন, আবার কেউ ছায়ায় বসে বাদাম খেয়ে উপভোগ করছেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
সাতক্ষীরা, খুলনা, যশোরসহ আশপাশের জেলা থেকে পর্যটকরা ছুটে আসছেন এই এলাকায়। যশোর থেকে আসা কলেজছাত্র হাফিজুর রহমান বলেন, “এখানে শিশুদের জন্য আরও খেলাধুলার ব্যবস্থা থাকলে খুব ভালো হতো। তবে এখনকার সৌন্দর্যও মন জয় করে নিয়েছে।”
রহমান দম্পতি জানান, আকাশলীনার ওয়াচ টাওয়ারে উঠে তারা অপার বিস্ময়ে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করেছেন। স্কুলপড়ুয়া রানা জানায়, সে আশা করেছিল এখানে সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী দেখতে পাবে, তবে প্রকৃতির অপরূপ রূপ তাকে মুগ্ধ করেছে।
পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ দিনরাত কাজ করছে। প্রতিটি বিনোদন কেন্দ্রে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বন্যপ্রাণির প্রজনন মৌসুমে সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশ ১ জুন থেকে ৯২ দিনের জন্য বন্ধ রয়েছে। ফলে অনেকে সুন্দরবনে ঢুকতে না পারলেও আকাশলীনা ইকোট্যুরিজমে এসে নিরাশ হচ্ছেন না।
আকাশলীনা ইকোট্যুরিজম সেন্টারের ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম জানান, “ঈদের পরের দিন আমাদের এখানে ২,৪২৬ জন পর্যটক প্রবেশ করেছে, যার থেকে আয় হয়েছে ৪৮ হাজার ৫২০ টাকা। আশা করছি ছুটির বাকি দিনগুলোতে পর্যটকের সংখ্যা আরও বাড়বে।”
কালিঞ্চি ম্যানগ্রোভ ভিলেজের প্রধান কর্মকর্তা গোপাল মুণ্ডা জানান, তার কেন্দ্রেও ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের ব্যাপক আনাগোনা লক্ষ করা যাচ্ছে। অনেকেই এখান থেকে নৌকায় চড়ে পাঁচ নদীর মোহনায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
তবে পর্যটকদের একটি সাধারণ অভিযোগ—মুন্সিগঞ্জ-শ্যামনগর সড়কটির দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন, নইলে সুন্দরবন সংলগ্ন এই অনন্য দর্শনীয় স্থানগুলোতে যাতায়াত দুর্বিষহ হয়ে উঠবে।