সোমবার, ১৬ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সকল গুঞ্জনের অবসান, থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফিরলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ

আবাসন নিউজ২৪ | নিউজ ডেস্কঃ

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, ফাইল ছবি

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে চিকিৎসা শেষে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। রবিবার (৮ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে তাকে বহনকারী থাই এয়ারওয়েজের একটি বিমান।

 

সম্প্রতি আব্দুল হামিদের বিদেশ গমনের ঘটনা রাজনৈতিক অঙ্গনে ও প্রশাসনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। অনেকে ধারণা করেছিলেন, বর্তমান অস্থির রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তিনি দেশত্যাগ করেছেন। তবে চিকিৎসার জন্যই তার এই সফর ছিল—এমনটাই জানিয়েছেন ঘনিষ্ঠরা।

 

আব্দুল হামিদের বিদেশযাত্রা ঘিরে যে প্রশাসনিক পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে, তা নজর কেড়েছে সর্বমহলে। কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীকে প্রত্যাহার করা হয়। একইসঙ্গে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনে দায়িত্বে থাকা একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং কিশোরগঞ্জে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এক উপপরিদর্শক ও এসবির এক সহকারী উপপরিদর্শককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পুরো ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে পুলিশ সদর দপ্তর।

 

এছাড়া, সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনায় সরকার গঠন করেছে উচ্চপর্যায়ের তিন সদস্যের একটি পরামর্শক কমিটি। অধ্যাপক সি আর আবরারকে সভাপতি করে এই কমিটিতে আরও রয়েছেন পরিবেশ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন।

 

আব্দুল হামিদ বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক উজ্জ্বল নাম। আটবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ডেপুটি স্পিকার, স্পিকার এবং সর্বশেষ রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন টানা দুই মেয়াদে—২০১৩ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত। বঙ্গভবন ছাড়ার পর থেকে রাজধানীর নিকুঞ্জে নিজ বাসায় অবস্থান করছিলেন।

 

তবে দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলে যায় ২০২৪ সালের আগস্টে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। তখন দলটির সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ শীর্ষ নেতারা দেশ ছাড়েন। পরে তাদের অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়।

 

এ প্রেক্ষাপটে ২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ থানায় এক তরুণ, তহমুল ইসলাম, সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদসহ ১২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২০২৩ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনরত অবস্থায় তিনি আহত হন। দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে বর্তমানে কিছুটা সুস্থ হয়ে তিনি আইনের আশ্রয় নিয়েছেন।

আরও পড়ুন  আ.লীগ নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে ‘জুলাই রিভাইভজ’র কর্মসূচি

 

এই মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, এবং অন্যান্য আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী।

WhatsApp
Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
Telegram