
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে এক হৃদয়ছোঁয়া মানবিক আয়োজন করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।
ঈদের আনন্দ শুধুই বাইরের জগতে সীমাবদ্ধ নয়—এবার সেই আনন্দ ছুঁয়ে গেল লোহার গেটের ওপারেও।
৮ জুন থেকে ১০ জুন, ঈদের তিন দিন ধরে বন্দীরা পাচ্ছেন বাড়ির রান্না করা খাবার গ্রহণের সুযোগ। প্রিয়জনেরা নিজেদের হাতে তৈরি করা খাবার নিয়ে আসছেন, আর কারাগারের গেটে ফুল হাতে দাঁড়িয়ে থাকা কর্মীরা তাদের দিচ্ছেন উষ্ণ অভ্যর্থনা।
এই আয়োজন যেন এক অনন্য নজির—যেখানে শাস্তির প্রাচীরেও ভালোবাসা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে।
তপ্ত দুপুরে ক্লান্ত হয়ে পড়া দর্শনার্থীদের জন্য রাখা হয়েছে বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা। কারা প্রাঙ্গণে ফুল, ঠাণ্ডা পানি আর প্রিয়জনের মুখ—সব মিলিয়ে যেন ঈদের আনন্দ ঘনিয়ে এসেছে বন্দীদের জীবনেও।এখানেই শেষ নয়। ঈদের এই তিন দিনের যেকোনো একদিন, বন্দীরা পাচ্ছেন প্রিয়জনের সঙ্গে বিনামূল্যে ৫ মিনিটের মুঠোফোন কথোপকথনের সুযোগ। এই ছোট সময়টুকু যেন হয়ে উঠছে এক জীবন্ত উৎসব।
খাবার তালিকায় রয়েছে মৌসুমী ফল — লিচু ও কাঁঠাল, যা বাড়িয়ে তুলছে এই আয়োজনে প্রাণের ছোঁয়া।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারের জেলার এজি মামুদ বলেন,
ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর ঈদুল আজহায় আমরা বন্দীদের জন্য সর্বোচ্চ মানবিকতা প্রদর্শনের চেষ্টা করছি। তারা বাড়ির খাবার পাচ্ছেন, ফল পাচ্ছেন, আর দর্শনার্থীদের আমরা ভালোবাসা দিয়ে বরণ করছি।
তিনি আরও জানান,
বাইরের খাবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তবেই তা বন্দীদের পরিবেশন করা হচ্ছে। নিয়মিত সাক্ষাৎসূচির বাইরে ঈদের এই তিন দিনে অতিরিক্ত সাক্ষাতের সুযোগও রাখা হয়েছে।
বর্তমানে কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে মোট ৩১০ জন বন্দী রয়েছেন। এই উদ্যোগে কারা অভ্যন্তরে এক প্রশান্তি ও মানবিকতার আবহ বিরাজ করছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।