| ৭ আগস্ট ২০২৫
শিরোনাম:

কুড়িগ্রাম কারাগারে ঈদ আয়োজন: বন্দীদের জন্য মানবিক সুবিধা

কুড়িগ্রাম কারাগারে ঈদ আয়োজন: বন্দীদের জন্য মানবিক সুবিধা

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে এক হৃদয়ছোঁয়া মানবিক আয়োজন করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।

ঈদের আনন্দ শুধুই বাইরের জগতে সীমাবদ্ধ নয়—এবার সেই আনন্দ ছুঁয়ে গেল লোহার গেটের ওপারেও।

৮ জুন থেকে ১০ জুন, ঈদের তিন দিন ধরে বন্দীরা পাচ্ছেন বাড়ির রান্না করা খাবার গ্রহণের সুযোগ। প্রিয়জনেরা নিজেদের হাতে তৈরি করা খাবার নিয়ে আসছেন, আর কারাগারের গেটে ফুল হাতে দাঁড়িয়ে থাকা কর্মীরা তাদের দিচ্ছেন উষ্ণ অভ্যর্থনা।

 

এই আয়োজন যেন এক অনন্য নজির—যেখানে শাস্তির প্রাচীরেও ভালোবাসা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে।

তপ্ত দুপুরে ক্লান্ত হয়ে পড়া দর্শনার্থীদের জন্য রাখা হয়েছে বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা। কারা প্রাঙ্গণে ফুল, ঠাণ্ডা পানি আর প্রিয়জনের মুখ—সব মিলিয়ে যেন ঈদের আনন্দ ঘনিয়ে এসেছে বন্দীদের জীবনেও।এখানেই শেষ নয়। ঈদের এই তিন দিনের যেকোনো একদিন, বন্দীরা পাচ্ছেন প্রিয়জনের সঙ্গে বিনামূল্যে ৫ মিনিটের মুঠোফোন কথোপকথনের সুযোগ। এই ছোট সময়টুকু যেন হয়ে উঠছে এক জীবন্ত উৎসব।

খাবার তালিকায় রয়েছে মৌসুমী ফল — লিচু ও কাঁঠাল, যা বাড়িয়ে তুলছে এই আয়োজনে প্রাণের ছোঁয়া।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারের জেলার এজি মামুদ বলেন,

ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর ঈদুল আজহায় আমরা বন্দীদের জন্য সর্বোচ্চ মানবিকতা প্রদর্শনের চেষ্টা করছি। তারা বাড়ির খাবার পাচ্ছেন, ফল পাচ্ছেন, আর দর্শনার্থীদের আমরা ভালোবাসা দিয়ে বরণ করছি।

তিনি আরও জানান,

বাইরের খাবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তবেই তা বন্দীদের পরিবেশন করা হচ্ছে। নিয়মিত সাক্ষাৎসূচির বাইরে ঈদের এই তিন দিনে অতিরিক্ত সাক্ষাতের সুযোগও রাখা হয়েছে।

 

বর্তমানে কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে মোট ৩১০ জন বন্দী রয়েছেন। এই উদ্যোগে কারা অভ্যন্তরে এক প্রশান্তি ও মানবিকতার আবহ বিরাজ করছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

সাটুরিয়ায় সাংবাদিক আবুবকর সিদ্দিকের সম্মানহানির অপচেষ্টা, কুচক্রী মহলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ

কুড়িগ্রাম কারাগারে ঈদ আয়োজন: বন্দীদের জন্য মানবিক সুবিধা

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় এক সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় স্থানীয় জনমনে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এশিয়ান টেলিভিশনের প্রতিনিধি সাংবাদিক আবুবকর সিদ্দিক জানান, শুধু হামলার শিকারই হননি, হামলার পর শুরু হয়েছে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও সম্মানহানির অপচেষ্টা।

 

সম্প্রতি ধামরাই থেকে আসা এক কথিত পল্লী চিকিৎসক কাশেম তার ওপর হামলা চালান। আবুবকর থানায় মামলা করলে পুলিশ অভিযুক্ত কাশেমকে গ্রেপ্তার করে। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

 

কিন্তু এখানেই শেষ নয়। অভিযোগ উঠেছে, কাশেমকে রক্ষা করতে গিয়ে একটি কুচক্রী মহল সাংবাদিক আবুবকরের বিরুদ্ধে সামাজিক ও প্রশাসনিক মহলে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করছে। এমনকি তাকে জড়ানোর চেষ্টা চলছে বিভিন্ন ভিত্তিহীন মামলায়।

 

সাংবাদিক আবুবকর বলেন, আমি শুধু পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছি। কিন্তু এখন আমার পরিবারকে নিয়েও আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতি একজন সাংবাদিকের জন্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক।

 

তিনি প্রশাসনের কাছে দাবি জানান, শুধু গ্রেপ্তারই নয়, হামলার সঙ্গে জড়িত সব ব্যক্তিকে আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

 

স্থানীয় বাসিন্দারাও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তারা বলেন, একজন সাংবাদিককে ভয়ভীতি দেখিয়ে থামানো যাবে না। আমরা তারপাশে আছি।

 

ঘুরতে গিয়েছিলাম, ভাবছিলাম ভবিষ্যৎ”—সাগরপাড়ে বসে আত্মচিন্তার কথা বললেন নাসীরুদ্দীন

কুড়িগ্রাম কারাগারে ঈদ আয়োজন: বন্দীদের জন্য মানবিক সুবিধা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জানিয়েছেন, তিনি কক্সবাজারে ঘুরতে গিয়েছিলেন ঠিকই, তবে উদ্দেশ্য ছিল একান্তে বসে দেশের ভবিষ্যৎ, রাজনীতি এবং গণতন্ত্র নিয়ে গভীর চিন্তা করা।

গত ৫ আগস্ট কক্সবাজার সফরের পর সামাজিক মাধ্যমে নানা গুজব ছড়ায় এবং দলীয়ভাবে তাকে শোকজ করা হয়। বৃহস্পতিবার শোকজের জবাবে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে তিনি বলেন, “ঘুরতে যাওয়া অপরাধ নয়। ইতিহাস সব সময় শুধু সভায় নয়, কখনো সাগরপাড়েও জন্ম নেয়।”

ওই দিনটি ছিল এনসিপির ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ ও স্বৈরাচার পতনের বার্ষিকী। এ উপলক্ষে দলের কয়েকজন নেতা কক্সবাজারে অবস্থান করলে গুজব রটে, তারা সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস–এর সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন। যদিও পরে স্পষ্ট হয়, ওই সময়ে পিটার হাস যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন।

সফরের ব্যাখ্যায় নাসীরুদ্দীন জানান, এটি ছিল তার ব্যক্তিগত সফর। সফরসঙ্গী ছিলেন তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন। দল থেকে কোনো সাংগঠনিক বা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব না থাকায় তিনি মানসিক বিশ্রাম ও আত্মপ্রস্তুতির জন্য ওই ভ্রমণে যান।

তিনি আরও বলেন, “আমার সফরের সঙ্গে দলের কোনো প্রোগ্রামের সম্পর্ক ছিল না। কেউ চাইলে একে ঘোরাফেরা বলতে পারে, তবে আমি একে বলি আত্মচিন্তা। আমি কক্সবাজারে বসেই ভাবছিলাম গণতন্ত্র, নাগরিক কমিটি, গণপরিষদ এবং একটি নতুন সংবিধান নিয়ে।”

ভ্রমণকে ঘিরে ছড়ানো গুজবকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন দাবি করে তিনি বলেন, হোটেল কর্তৃপক্ষও নিশ্চিত করেছে যে পিটার হাস সেখানে ছিলেন না।

সবশেষে, দলের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শোকজের জবাবে তিনি লেখেন, আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে দায়িত্বশীল চিন্তা করেছি। ঘুরতে যাওয়াকে অপরাধ ভাবার কিছু নেই। অনেক সময় নির্জনতা থেকেই ইতিহাস জন্ম নেয়।

নরেন্দ্র মোদির কড়া প্রতিক্রিয়া: “কৃষকের স্বার্থে কোনো আপস নয়, চরম মূল্য দিলেও”

কুড়িগ্রাম কারাগারে ঈদ আয়োজন: বন্দীদের জন্য মানবিক সুবিধা

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার পর কড়া সুরে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে মোদি বলেন, “দেশের কৃষক, দুগ্ধ খাত ও মৎস্যজীবীদের স্বার্থ রক্ষায় আমরা কোনো আপস করবো না, প্রয়োজন হলে চরম মূল্যও দিতে প্রস্তুত আছি।”

 

ট্রাম্পের শুল্ক সিদ্ধান্ত এবং ভারতের উদ্বেগঃ

এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন জানায়, ভারতের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে, যা আগের ২৫ শতাংশের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মোট ৫০ শতাংশে পৌঁছাবে। এটি আমদানি শুল্কের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে কোনো বাণিজ্য অংশীদারের ওপর আরোপিত অন্যতম সর্বোচ্চ হার।

 

যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তকে “ভারতের রাশিয়ান তেল কেনার শাস্তিস্বরূপ ব্যবস্থা” বলেই দাবি করেছে হোয়াইট হাউজ। এই শুল্ক কার্যকর হবে ২৮ আগস্ট থেকে।

 

মোদির বার্তা: জাতীয় স্বার্থে অটল থাকা হবে

প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, আমাদের কৃষকদের কল্যাণই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। ভারত কখনোই বিদেশি চাপের কাছে মাথানত করবে না। আমরা নিজেদের স্বার্থে যা কিছু করা দরকার, তাই করবো। যদিও তিনি সরাসরি ট্রাম্প বা ব্যর্থ বাণিজ্য আলোচনা নিয়ে মন্তব্য করেননি, তবে তার বার্তা ছিল স্পষ্ট—ভারত আত্মমর্যাদার প্রশ্নে আপস করবে না।

 

কূটনৈতিক অচলাবস্থা ও সম্ভাব্য মিত্র পরিবর্তনঃ

ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পাঁচ দফা বাণিজ্য আলোচনা ইতিমধ্যেই ভেস্তে গেছে। মূল বাধা ছিল ভারতের কৃষি ও দুগ্ধ খাত উন্মুক্ত করা এবং রাশিয়া থেকে তেল আমদানি ইস্যু। এই পরিস্থিতিতে ভারত এখন বিকল্প কৌশলগত অংশীদারিত্বের দিকেও তাকাতে শুরু করেছে।

 

মোদি আগামী মাসে চীন সফরে যাবেন, যা সাত বছরের মধ্যে তার প্রথম চীন সফর। এই সফরকে বিশ্লেষকরা সম্ভাব্য মিত্রতান্ত্রিক পুনর্গঠনের ইঙ্গিত হিসেবেই দেখছেন।

 

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়াঃ

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা ইতিমধ্যে জানিয়েছেন, তিনি এই শুল্ক মোকাবিলায় বিকাশমান অর্থনীতির জোট ‘ব্রিকস’-এর সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করবেন। তিনি মোদিকে ফোন করে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে কথা বলবেন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংসহ অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করবেন।

 

ভারতের অবস্থানঃ

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই শুল্ক বৃদ্ধিকে “চরম দুর্ভাগ্যজনক” বলে আখ্যায়িত করেছে এবং জানিয়েছে, “জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপই নেবে ভারত।” পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা দাম্মু রবি বলেন, “এই সিদ্ধান্তের পেছনে কোনো যৌক্তিকতা নেই। এটি সাময়িক সমস্যা, আমরা নিশ্চিত যে বিশ্ব এর সমাধান খুঁজে পাবে।”

×