| ৭ আগস্ট ২০২৫
শিরোনাম:

ঈদুল আজহা ২০২৫: জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ শেষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা প্রধান উপদেষ্টার

ঈদুল আজহা ২০২৫: জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ শেষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা প্রধান উপদেষ্টার

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আজ শনিবার (৭ জুন) উদযাপন করছেন ইসলাম ধর্মের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। সারা দেশের মতো রাজধানীতেও সকাল থেকেই ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে।

 

প্রথা অনুযায়ী রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় দেশের প্রধান ঈদের জামাত। এ জামাতে অংশগ্রহণ করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নামাজ শেষে তিনি দেশবাসীর প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন।

 

তিনি বলেন,

ঈদুল আজহা আমাদের শেখায় ত্যাগ, সহমর্মিতা ও মানবিকতার অনুপম শিক্ষা। এই দিনে আমাদের অঙ্গীকার হোক—একজন মানুষ হিসেবে আমরা যেন অন্য মানুষের কষ্টের পাশে দাঁড়াই। ঈদের আনন্দ কেবল নিজের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে তা সমাজের সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেই।

 

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন,

জাতি হিসেবে আমাদের মধ্যে যেন পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সহনশীলতা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় থাকে। একে অপরের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা একটি মানবিক ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি।

 

ঈদের নামাজ শেষে তার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন উপস্থিত মুসল্লিরা। অনেকেই এই মানবিক নেতার সঙ্গে ছবি তোলেন এবং শুভেচ্ছা জানান।

 

জাতীয় ঈদগাহের এই প্রধান জামাতে অংশ নেন সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা, কূটনীতিক, রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্ট নাগরিকরা। নামাজ শেষে দেশ, জাতি এবং মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনায় বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়।

 

সারাদেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও গ্রামে শান্তিপূর্ণভাবে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও ঈদের দিন নির্বিঘ্নে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।

সাটুরিয়ায় সাংবাদিক আবুবকর সিদ্দিকের সম্মানহানির অপচেষ্টা, কুচক্রী মহলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ

ঈদুল আজহা ২০২৫: জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ শেষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা প্রধান উপদেষ্টার

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় এক সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় স্থানীয় জনমনে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এশিয়ান টেলিভিশনের প্রতিনিধি সাংবাদিক আবুবকর সিদ্দিক জানান, শুধু হামলার শিকারই হননি, হামলার পর শুরু হয়েছে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও সম্মানহানির অপচেষ্টা।

 

সম্প্রতি ধামরাই থেকে আসা এক কথিত পল্লী চিকিৎসক কাশেম তার ওপর হামলা চালান। আবুবকর থানায় মামলা করলে পুলিশ অভিযুক্ত কাশেমকে গ্রেপ্তার করে। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

 

কিন্তু এখানেই শেষ নয়। অভিযোগ উঠেছে, কাশেমকে রক্ষা করতে গিয়ে একটি কুচক্রী মহল সাংবাদিক আবুবকরের বিরুদ্ধে সামাজিক ও প্রশাসনিক মহলে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করছে। এমনকি তাকে জড়ানোর চেষ্টা চলছে বিভিন্ন ভিত্তিহীন মামলায়।

 

সাংবাদিক আবুবকর বলেন, আমি শুধু পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছি। কিন্তু এখন আমার পরিবারকে নিয়েও আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতি একজন সাংবাদিকের জন্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক।

 

তিনি প্রশাসনের কাছে দাবি জানান, শুধু গ্রেপ্তারই নয়, হামলার সঙ্গে জড়িত সব ব্যক্তিকে আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

 

স্থানীয় বাসিন্দারাও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তারা বলেন, একজন সাংবাদিককে ভয়ভীতি দেখিয়ে থামানো যাবে না। আমরা তারপাশে আছি।

 

ঘুরতে গিয়েছিলাম, ভাবছিলাম ভবিষ্যৎ”—সাগরপাড়ে বসে আত্মচিন্তার কথা বললেন নাসীরুদ্দীন

ঈদুল আজহা ২০২৫: জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ শেষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা প্রধান উপদেষ্টার

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জানিয়েছেন, তিনি কক্সবাজারে ঘুরতে গিয়েছিলেন ঠিকই, তবে উদ্দেশ্য ছিল একান্তে বসে দেশের ভবিষ্যৎ, রাজনীতি এবং গণতন্ত্র নিয়ে গভীর চিন্তা করা।

গত ৫ আগস্ট কক্সবাজার সফরের পর সামাজিক মাধ্যমে নানা গুজব ছড়ায় এবং দলীয়ভাবে তাকে শোকজ করা হয়। বৃহস্পতিবার শোকজের জবাবে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে তিনি বলেন, “ঘুরতে যাওয়া অপরাধ নয়। ইতিহাস সব সময় শুধু সভায় নয়, কখনো সাগরপাড়েও জন্ম নেয়।”

ওই দিনটি ছিল এনসিপির ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ ও স্বৈরাচার পতনের বার্ষিকী। এ উপলক্ষে দলের কয়েকজন নেতা কক্সবাজারে অবস্থান করলে গুজব রটে, তারা সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস–এর সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন। যদিও পরে স্পষ্ট হয়, ওই সময়ে পিটার হাস যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন।

সফরের ব্যাখ্যায় নাসীরুদ্দীন জানান, এটি ছিল তার ব্যক্তিগত সফর। সফরসঙ্গী ছিলেন তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন। দল থেকে কোনো সাংগঠনিক বা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব না থাকায় তিনি মানসিক বিশ্রাম ও আত্মপ্রস্তুতির জন্য ওই ভ্রমণে যান।

তিনি আরও বলেন, “আমার সফরের সঙ্গে দলের কোনো প্রোগ্রামের সম্পর্ক ছিল না। কেউ চাইলে একে ঘোরাফেরা বলতে পারে, তবে আমি একে বলি আত্মচিন্তা। আমি কক্সবাজারে বসেই ভাবছিলাম গণতন্ত্র, নাগরিক কমিটি, গণপরিষদ এবং একটি নতুন সংবিধান নিয়ে।”

ভ্রমণকে ঘিরে ছড়ানো গুজবকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন দাবি করে তিনি বলেন, হোটেল কর্তৃপক্ষও নিশ্চিত করেছে যে পিটার হাস সেখানে ছিলেন না।

সবশেষে, দলের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শোকজের জবাবে তিনি লেখেন, আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে দায়িত্বশীল চিন্তা করেছি। ঘুরতে যাওয়াকে অপরাধ ভাবার কিছু নেই। অনেক সময় নির্জনতা থেকেই ইতিহাস জন্ম নেয়।

নরেন্দ্র মোদির কড়া প্রতিক্রিয়া: “কৃষকের স্বার্থে কোনো আপস নয়, চরম মূল্য দিলেও”

ঈদুল আজহা ২০২৫: জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ শেষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা প্রধান উপদেষ্টার

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার পর কড়া সুরে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে মোদি বলেন, “দেশের কৃষক, দুগ্ধ খাত ও মৎস্যজীবীদের স্বার্থ রক্ষায় আমরা কোনো আপস করবো না, প্রয়োজন হলে চরম মূল্যও দিতে প্রস্তুত আছি।”

 

ট্রাম্পের শুল্ক সিদ্ধান্ত এবং ভারতের উদ্বেগঃ

এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন জানায়, ভারতের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে, যা আগের ২৫ শতাংশের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মোট ৫০ শতাংশে পৌঁছাবে। এটি আমদানি শুল্কের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে কোনো বাণিজ্য অংশীদারের ওপর আরোপিত অন্যতম সর্বোচ্চ হার।

 

যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তকে “ভারতের রাশিয়ান তেল কেনার শাস্তিস্বরূপ ব্যবস্থা” বলেই দাবি করেছে হোয়াইট হাউজ। এই শুল্ক কার্যকর হবে ২৮ আগস্ট থেকে।

 

মোদির বার্তা: জাতীয় স্বার্থে অটল থাকা হবে

প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, আমাদের কৃষকদের কল্যাণই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। ভারত কখনোই বিদেশি চাপের কাছে মাথানত করবে না। আমরা নিজেদের স্বার্থে যা কিছু করা দরকার, তাই করবো। যদিও তিনি সরাসরি ট্রাম্প বা ব্যর্থ বাণিজ্য আলোচনা নিয়ে মন্তব্য করেননি, তবে তার বার্তা ছিল স্পষ্ট—ভারত আত্মমর্যাদার প্রশ্নে আপস করবে না।

 

কূটনৈতিক অচলাবস্থা ও সম্ভাব্য মিত্র পরিবর্তনঃ

ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পাঁচ দফা বাণিজ্য আলোচনা ইতিমধ্যেই ভেস্তে গেছে। মূল বাধা ছিল ভারতের কৃষি ও দুগ্ধ খাত উন্মুক্ত করা এবং রাশিয়া থেকে তেল আমদানি ইস্যু। এই পরিস্থিতিতে ভারত এখন বিকল্প কৌশলগত অংশীদারিত্বের দিকেও তাকাতে শুরু করেছে।

 

মোদি আগামী মাসে চীন সফরে যাবেন, যা সাত বছরের মধ্যে তার প্রথম চীন সফর। এই সফরকে বিশ্লেষকরা সম্ভাব্য মিত্রতান্ত্রিক পুনর্গঠনের ইঙ্গিত হিসেবেই দেখছেন।

 

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়াঃ

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা ইতিমধ্যে জানিয়েছেন, তিনি এই শুল্ক মোকাবিলায় বিকাশমান অর্থনীতির জোট ‘ব্রিকস’-এর সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করবেন। তিনি মোদিকে ফোন করে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে কথা বলবেন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংসহ অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করবেন।

 

ভারতের অবস্থানঃ

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই শুল্ক বৃদ্ধিকে “চরম দুর্ভাগ্যজনক” বলে আখ্যায়িত করেছে এবং জানিয়েছে, “জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপই নেবে ভারত।” পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা দাম্মু রবি বলেন, “এই সিদ্ধান্তের পেছনে কোনো যৌক্তিকতা নেই। এটি সাময়িক সমস্যা, আমরা নিশ্চিত যে বিশ্ব এর সমাধান খুঁজে পাবে।”

×