জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ কেবলমাত্র জনআকাঙ্ক্ষা, নির্বাচন সংস্কার এবং কাঠামোগত পুনর্গঠনের ভিত্তিতেই টেকসই হতে পারে।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়ন ও প্রকাশ আজ সময়ের সবচেয়ে জরুরি দাবি। এই সনদ শুধু রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা নয়, বরং শহিদদের প্রতি নৈতিক দায়বদ্ধতার প্রতিফলন।
বুধবার (৪ জুন) দুপুরে রাজধানীতে চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এনসিপি আহ্বায়ক এসব কথা বলেন। নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বৈঠকে অংশ নেয়। বৈঠকে দেশের নির্বাচনপদ্ধতি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আগ্রহের প্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।
জুলাই আন্দোলনের চেতনাকে সনদে রূপ দেওয়ার আহ্বান
নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাই আন্দোলনের যারা রাস্তায় নেমে গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের স্বপ্নে প্রাণ দিয়েছেন, তাদের আত্মত্যাগকে মূল্যায়ন করতে হলে ‘জুলাই সনদ’ সময়ের দাবি। এই সনদ নির্বাচন সংস্কার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, এবং সব দলের অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার একটি বাস্তব রোডম্যাপ।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ আজ এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। যে কোনো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত দেশের ভবিষ্যৎ গণতন্ত্রের গতিপথ নির্ধারণ করে দেবে। এই প্রেক্ষাপটে জাতীয় নাগরিক পার্টি সরকারের পদক্ষেপ এবং অন্যান্য রাজনৈতিক শক্তির কার্যক্রম গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।”
‘জুলাই সনদ’ দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান
নাহিদ ইসলাম দৃঢ়ভাবে বলেন, “জুলাই সনদের প্রণয়ন ও ঘোষণা যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন হওয়া উচিত। এতে করে শুধু গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া গতিশীল হবে না, বরং শহিদদের আত্মত্যাগকেও যথার্থ মর্যাদা দেওয়া যাবে। রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে এই সনদ হতে পারে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ভিত্তিপ্রস্তর।”
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আগ্রহ এবং এনসিপির অবস্থান
চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “বাংলাদেশের চলমান গণতান্ত্রিক যাত্রা এবং নীতিগত সংস্কার নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে যে আগ্রহ রয়েছে, তা অত্যন্ত ইতিবাচক। আমরা চাই, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই প্রক্রিয়ায় গঠনমূলক সহযোগিতা করুক, যেন বাংলাদেশে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, গ্রহণযোগ্য ও ন্যায্য রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে ওঠে।”
এনসিপি আহ্বায়ক দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, “আমরা চাই একটি ন্যায়ভিত্তিক, স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে উঠুক, যেখানে জনগণের ইচ্ছা-অনিচ্ছাই হবে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ভিত্তি।”