
নিম্নচাপ, প্রবল বৃষ্টিপাত এবং জলোচ্ছ্বাসের কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটেছে। এর প্রভাব পড়েছে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার ওপরও। সারাদেশে বহু টেলিকম সাইট বিকল হয়ে গেছে, বন্ধ হয়ে গেছে হাজার হাজার ওয়েবসাইট।
শুক্রবার (৩০ মে) সকালে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব ফেসবুকে জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবে দেশের টেলিযোগাযোগ সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। প্রবল বর্ষণ ও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে পাঁচ হাজারেরও বেশি ওয়েবসাইট ডাউন হয়ে গেছে।
তিনি জানান, দেশের বেশ কয়েকটি অঞ্চল—বরিশাল, সিলেট দক্ষিণ, টাঙ্গাইল, চাঁদপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা উত্তর, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ—টেলিযোগাযোগ ক্ষতির দিক থেকে সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত। এসব এলাকায় অনেক টাওয়ার বন্ধ হয়ে গেছে, ফলে মোবাইল নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট সেবা প্রায় অচল হয়ে পড়েছে।
ফয়েজ আহমেদ আরও বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পল্লী বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত সাইটগুলোতে পোর্টেবল জেনারেটর সরবরাহ করা হচ্ছে যাতে জরুরি ভিত্তিতে নেটওয়ার্ক সচল রাখা যায়।
বর্তমান পরিস্থিতির একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি জানান, মোট মেইনস বিকল হয়েছে ৮ হাজার ২৬২টি, যা ৪৪ শতাংশের বেশি। মোট সাইট ডাউন হয়েছে ৫ হাজার ৯০৪টি, যা ৩৫ দশমিক ৮ শতাংশ। এখন পর্যন্ত মোট ৬৪ দশমিক ২ শতাংশ সাইট চালু রয়েছে। ইতোমধ্যে ৬২৪টি পোর্টেবল জেনারেটর সংযুক্ত করা হয়েছে এবং আরও ৫০৪টি পথে রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় টেলিকম সাইট সচল রাখা কঠিন। দেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ না থাকায় টেলিযোগাযোগেও স্থায়িত্ব আনা যাচ্ছে না। তাদের মতে, টেকসই সমাধান না হলে ভবিষ্যতেও এমন দুর্যোগে বারবার একই পরিস্থিতি তৈরি হবে।
এদিকে, দুর্যোগকবলিত এলাকাগুলোর বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন, প্রয়োজনের সময় স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ ও নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।