| ১ আগস্ট ২০২৫
শিরোনাম:

নামজারি করতে আর দালালের দরজায় নয়, ঘরে বসেই জমির মালিকানা পরিবর্তনের আবেদন

নামজারি করতে আর দালালের দরজায় নয়, ঘরে বসেই জমির মালিকানা পরিবর্তনের আবেদন

বাবার মৃত্যুর পর জমির নামজারি করাতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন নওগাঁর কৃষক মমিনুল ইসলাম। ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গেলেই দালাল ঘিরে ধরত—‘ভাই টাকা দিলে একদিনেই হবে, না হলে তিন মাসেও না’। প্রথমে কিছু না বুঝলেও পরে টের পান—এটাই ভূমি অফিসের বাস্তব চিত্র।

তবে এখন অনেক কিছু বদলেছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাল সেবায় ঘরে বসেই করা যাচ্ছে নামজারি, খতিয়ান ও দাগ অনুসন্ধানসহ জমি সংক্রান্ত নানা আবেদন। ফলে সময়, খরচ ও হয়রানি—সবই কমে এসেছে সাধারণ মানুষের জন্য।

জমির মালিকানা পরিবর্তনের প্রক্রিয়া, যেটিকে নামজারি বলা হয়, সেটি এখন অনলাইনে করা যাচ্ছে land.gov.bd ওয়েবসাইট অথবা ভূমি সেবা অ্যাপের মাধ্যমে। আবেদন করতে প্রয়োজন হবে আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জমির দলিল নম্বর ও স্ক্যান কপি, খাজনা রসিদ, ওয়ারিশদের তথ্য এবং প্রয়োজনে ওয়ারিশ সনদ। নির্ধারিত ফি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেই পরিশোধ করা যায়।

অনলাইনে নামজারি করতে প্রথমে www.land.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে “নামজারি” সেবায় যেতে হয়। সেখান থেকে একটি একাউন্ট খুলে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হয়। দলিলপত্র স্ক্যান করে আপলোডের পর আবেদন জমা দিতে হয় এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ফি পরিশোধ করতে হয়। এরপর আবেদন স্ট্যাটাস অনলাইনেই ট্র্যাক করা যায়।

এই অনলাইন সেবার সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে—কোনো দালালের সাহায্য ছাড়াই সাধারণ মানুষ নিজেরাই আবেদন করতে পারছেন। ফলে দুর্নীতি কমছে এবং সেবা সহজতর হয়েছে।

সাভারের গৃহবধূ রোকসানা আক্তার বলেন, তিনি বাবার বাড়ির জমির অংশ পাওয়ার পর নামজারি করতে গিয়ে দালালের কাছে আটকে যান। পরে ছেলে অনলাইনে আবেদন করে দেয়, এতে কম খরচে এবং ঝামেলা ছাড়াই কাজ হয়।
কিশোরগঞ্জের স্কুলশিক্ষক আরিফুল ইসলাম বলেন, সরকার যদি এই ডিজিটাল প্রক্রিয়াকে যথাযথভাবে পরিচালনা করে, তাহলে গ্রামের সাধারণ মানুষ জমি সংক্রান্ত হয়রানি থেকে মুক্তি পাবে।

তবে চ্যালেঞ্জ এখনও রয়ে গেছে। অনেক ইউনিয়ন ভূমি অফিসে এখনও ইন্টারনেট সংযোগ দুর্বল। কিছু জায়গায় কর্মকর্তারা অনলাইনে আবেদন না নিয়ে সরাসরি অফিসে আসতে বলছেন। কোথাও কোথাও দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মচারীরা প্রযুক্তির অপব্যবহার করেও সুবিধা নিচ্ছে। তবে ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ সংক্রান্ত অনিয়ম বন্ধে নতুন প্রযুক্তি ও তদারকি ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে।

নামজারি বা জমি সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য ও সহায়তার জন্য সরকারি হেল্পলাইনে ১৬১২২ নম্বরে যোগাযোগ করা যাচ্ছে। অভিযোগ জানানো যাচ্ছে www.land.gov.bd/complain ওয়েবসাইটেও।

ভূমি নিয়ে হয়রানি যেন অনেকটাই কমে এসেছে ডিজিটাল সেবার কারণে। সচেতন নাগরিকদের অংশগ্রহণ এবং দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের আন্তরিকতায় এই পরিবর্তন আরও জোরদার হবে—এমনটাই প্রত্যাশা করছেন দেশের সাধারণ মানুষ।

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে গ্রীন ভয়েসের সাপ্তাহিক পাঠচক্র “প্রয়াস” অনুষ্ঠিত

নামজারি করতে আর দালালের দরজায় নয়, ঘরে বসেই জমির মালিকানা পরিবর্তনের আবেদন

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে অনুষ্ঠিত হলো পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রীন ভয়েসের সাপ্তাহিক পাঠচক্রের আসর “প্রয়াস”। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই ২০২৫) আয়োজিত এই পাঠচক্রে আলোচনার মূল বিষয় ছিল জুলাই গণঅভ্যুত্থান।

এই আয়োজনের উদ্দেশ্য ছিল সংগঠনের সদস্যদের মাঝে জুলাই অভ্যুত্থান সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা দেওয়া এবং ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতি তুলে ধরা। আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা জানান, বিগত স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে সংঘটিত আন্দোলন ছিল দেশের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।

আলোচনায় মুক্তচিন্তা ও ইতিহাসের স্পর্শ

পাঠচক্রের আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের দুই সদস্য আইরিন আক্তার এবং বন্যা আক্তার। তারা জুলাই গণঅভ্যুত্থান, তৎকালীন গণহত্যা ও নির্মম হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। বক্তারা আরও বলেন, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য মানুষের আত্মত্যাগের কথা আমাদের নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে, যাতে তারা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে পারে।

আলোচনা পর্বে অনেক সদস্য নিজেদের মতামত শেয়ার করেন, যা অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তোলে।

কুইজ প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ

পাঠচক্র শেষে অনুষ্ঠিত হয় একটি কুইজ প্রতিযোগিতা। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যারা সর্বাধিক সঠিক উত্তর দেন, তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন গ্রীন ভয়েসের নেতৃবৃন্দ।

উপস্থিতি ও উৎসাহ

এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন গ্রীন ভয়েস কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নুরনবী সরকার, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি তহ্নি বণিক, সাধারণ সম্পাদক সাদমান হাফিজ স্বপ্নসহ অন্যান্য সক্রিয় সদস্যরা।

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে গ্রীন ভয়েসের সাপ্তাহিক পাঠচক্র প্রয়াসে শিক্ষার্থীদের আলোচনার মুহূর্ত।
গ্রীন ভয়েস কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ শাখার সাপ্তাহিক পাঠচক্র “প্রয়াস”-এ জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে আলোচনা করছেন সদস্যরা।

আয়োজন শেষে সবার মধ্যে গ্রীন ভয়েসের সামাজিক ও পরিবেশ-সচেতন কার্যক্রমে অংশগ্রহণের নতুন উদ্দীপনা দেখা গেছে। উপস্থিত সদস্যরা জানান, এই ধরনের আয়োজন তাদের জ্ঞান বাড়ানোর পাশাপাশি সামাজিক দায়িত্ববোধও বৃদ্ধি করছে।

গ্রীন ভয়েসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামীতে আরও বিভিন্ন সমসাময়িক ও ইতিহাসভিত্তিক বিষয়ে পাঠচক্র আয়োজন করা হবে।

পবিপ্রবিতে পশুপালন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি, দাবির পক্ষে একাত্মতা জানালেন ভিসি

নামজারি করতে আর দালালের দরজায় নয়, ঘরে বসেই জমির মালিকানা পরিবর্তনের আবেদন

প্রাণিসম্পদ খাতের টেকসই উন্নয়ন ও সমান কর্মসংস্থানের সুযোগ নিশ্চিতের দাবিতে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) পশুপালন (অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি) ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীরা ভাইস চ্যান্সেলরের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।

 

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দ্বিতীয় দিনের মতো চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী রফিকুল ইসলামের হাতে তাদের দাবি-দাওয়ার বিবরণ তুলে ধরেন।

 

শিক্ষার্থীরা জানান, দেশে বর্তমানে সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণী চিকিৎসা (ভেটেরিনারি সায়েন্স) ও প্রাণী উৎপাদন (অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি) একীভূত করে সমন্বিত বা কম্বাইন্ড ডিগ্রি চালু রয়েছে। এর ফলে সংশ্লিষ্ট গ্র্যাজুয়েটরা সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে প্রাণিসম্পদ খাতের প্রায় সব পদে আবেদন করার সুযোগ পাচ্ছেন। কিন্তু পবিপ্রবিতে এখনও পৃথক ডিগ্রি থাকায় পশুপালন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।

 

তাদের দাবি, একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন, যুগোপযোগী ও দক্ষতাভিত্তিক কম্বাইন্ড ডিগ্রি চালুর মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। এতে শুধু প্রাণিসম্পদ খাতের গুণগত উন্নয়নই নয়, দেশের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

 

ভিসির একাত্মতাঃ

স্মারকলিপি গ্রহণের পর ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন,

“তোমাদের এই দাবিটি সময়োপযোগী, যৌক্তিক ও বাস্তবভিত্তিক। প্রাণিসম্পদ খাতের টেকসই উন্নয়ন এবং দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে হলে ভেটেরিনারি সায়েন্স ও অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি ডিসিপ্লিনকে সমন্বয় করে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন কম্বাইন্ড ডিগ্রি চালু করা অত্যন্ত প্রয়োজন। আমি এই দাবির প্রতি সম্পূর্ণ একাত্মতা প্রকাশ করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহায়তা অব্যাহত থাকবে। তোমাদের স্মারকলিপিটি দ্রুত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হবে।”

 

তিনি শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান।

 

শিক্ষার্থীদের বক্তব্যঃ

শিক্ষার্থী তাহসিন হোসাইন বলেন,

“একজন খামারির যেমন দক্ষ প্রাণীচিকিৎসকের প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন উন্নত ব্যবস্থাপনার। এই দুই দিক একসঙ্গে শিখে দক্ষ গ্র্যাজুয়েট হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য কম্বাইন্ড ডিগ্রি চালু করা সময়ের দাবি।”

 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. এস.এম হেমায়েত জাহান, ট্রেজারার প্রফেসর আবদুল লতিফ, রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো: ইকতিয়ার উদ্দিন, বেসিক সায়েন্স বিভাগের প্রফেসর ড. মামুন অর রশীদ এবং জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর মাহফুজুর রহমান সবুজ।

শ্যামনগরে কোস্টগার্ডের অভিযানে একটি একনলা ব’ন্দু’ক ও তাজা কার্তুজ উদ্ধার

নামজারি করতে আর দালালের দরজায় নয়, ঘরে বসেই জমির মালিকানা পরিবর্তনের আবেদন

 সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় মাউন্দে নদী সংলগ্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে একটি একনলা বন্দুক ও দুই রাউন্ড তাজা কার্তুজ জব্দ করেছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সকালে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম উল হক।

তিনি জানান গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার(৩০ জুলাই) বিকাল ৪টার দিকে কোস্টগার্ড পশ্চিমজোন কৈখালীর একটি আভিযানিক দল শ্যামনগর উপজেলার মাউন্দে নদী সংলগ্ন এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানের সময় একজন সন্দেহ ভাজন ব্যক্তিকে থামার সংকেত দিলে তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তখন আভিযানিক দল আত্নসমপর্ণের আহব্বানে দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়েন। পালানো সময় ঐ ব্যক্তি সঙ্গে থাকা একটি ব্যাগ ফেলে পালিয়ে যায় সুন্দরবনের মধ্যে।

পরবর্তীতে ব্যাগটি তল্লাসি করে একটি একনলা ব্যক্তি ও দুই রাউন্ড তাজা কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানান।

লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম উল হক আরও জানান দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে। ভবিষ্যতেও এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

ছবি- বাংলাদেশ কোস্টগার্ড কৈখালীর অভিযানে উদ্ধারকৃত বন্ধুক ও তাজা কার্তুজ।

×