
সারাদেশে সরকারি হাসপাতালে নার্স সংকট দূর করতে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল সরকার। সিনিয়র স্টাফ নার্স পদে ৩ হাজার ৫১২ জন প্রার্থীকে নিয়োগের জন্য সাময়িকভাবে সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। মঙ্গলবার (২১ মে) পিএসসি তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত ফলাফল প্রকাশ করে।
২০২৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের অধীনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে দশম গ্রেডের সিনিয়র স্টাফ নার্স পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত বছরের ৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় লিখিত পরীক্ষা। এতে মোট ৪ হাজার ৫৫২ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হন।
অবশেষে কঠোর বাছাইয়ের পর প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে ৩ হাজার ৫১২ জনকে। তবে এখানেই শেষ নয়। এখনো তাদের অপেক্ষা করতে হবে চূড়ান্ত নিয়োগের জন্য।
সব সনদের যাচাই শেষে চূড়ান্ত নিয়োগ
পিএসসি স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, “সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীদের নিয়োগের আগে সংশ্লিষ্ট নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ প্রার্থীদের সকল সনদ, কাগজপত্র ও অন্যান্য ডকুমেন্টস যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যাচাই করে দেখবে। যদি কোনো ধরনের অসঙ্গতি, জালিয়াতি, মিথ্যা তথ্য প্রদান কিংবা সনদ ঘাটতির প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে ওই প্রার্থীর সাময়িক মনোনয়ন বাতিল বলে বিবেচিত হবে।”
এছাড়াও কমিশন সতর্ক করে বলেছে, “দুর্নীতি বা জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রার্থীকে শুধু মনোনয়ন বাতিল করেই ক্ষান্ত হওয়া হবে না, প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার পদক্ষেপও নেওয়া যেতে পারে। এমনকি কেউ যদি চাকরিতে যোগদানের পর এসব অপরাধে জড়িত থাকার প্রমাণ দেয়, তাহলে তাকেও চাকরি থেকে বরখাস্তসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
নার্স পদের প্রতি ব্যাপক আগ্রহ
সারাদেশে নার্স পদের গুরুত্ব ও চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে করোনাকালীন সময়ে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় নার্সদের ভূমিকা সামনে আসায় এ পেশার প্রতি আগ্রহ বেড়েছে বহুগুণে। সেই কারণে প্রতিটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বিপুল সংখ্যক প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন।
স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে নার্সদের দক্ষতা, মানবিকতা এবং পেশাদারিত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এবারের নিয়োগেও সেই বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পিএসসি।
নতুন নিয়োগে স্বপ্ন দেখছেন হাজারো পরিবার
প্রাথমিকভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত এই ৩ হাজার ৫১২ জনের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে এসেছেন। তাদের পরিশ্রম, অধ্যবসায় আর স্বপ্নের ফসল এই সুপারিশ। এখন শুধু অপেক্ষা চূড়ান্ত নিয়োগের।
নতুন এই নিয়োগ স্বপ্ন দেখাচ্ছে হাজারো পরিবারকে—একটি নিশ্চিত জীবনের, একটি সম্মানজনক পেশার, আর দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখার।