অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ বন্ধ না করায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি তার উপদেষ্টাদের নির্দেশ দিয়েছেন, নেতানিয়াহুকে জানাতে যে যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে এখনই।

মঙ্গলবার (২০ মে) অ্যাক্সিওস নিউজ সূত্রে হোয়াইট হাউজের দুই কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানানো হয়।

ওই কর্মকর্তারা জানান, গাজার শিশু ও সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের ছবি দেখে হতাশ হয়েছেন ট্রাম্প।

এর আগে একাধিক সূত্রে দাবি করা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল যে, যুদ্ধ বন্ধ না হলে তাদেরকে একপ্রকার “পরিত্যক্ত” করা হবে। যদিও পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্র এ দাবি অস্বীকার করে। তবে এটা নিশ্চিত— ট্রাম্প গাজা যুদ্ধ দ্রুত শেষ করতে চান। বিপরীতে নেতানিয়াহু যুদ্ধ আরও বিস্তৃত করছেন, যা তাদের মধ্যে মতপার্থক্য স্পষ্ট করছে।

এক হোয়াইট হাউজ কর্মকর্তা জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গাজায় চলমান পরিস্থিতি নিয়ে হতাশ। তিনি যুদ্ধের অবসান চান, সব জিম্মি মুক্ত হোক, গাজায় সহায়তা প্রবেশ করুক এবং পুনর্গঠন কাজ শুরু হোক— এটিই তার বার্তা।

গেল সপ্তাহে ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্য সফরে গেলে তার বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ হামাস ও ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দেন। তিনি নেতানিয়াহু ও হামাস নেতাদের সঙ্গে "ব্যাক চ্যানেল" যোগাযোগও করেন। তবে সেই চাপেও ফল আসেনি।

এদিকে, ইসরায়েলি সেনারা এখনো ২২ লাখ গাজাবাসীকে উচ্ছেদ করে অন্যত্র সরিয়ে নিতে তৎপর। তারা গাজার বেশিরভাগ অঞ্চল মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে চায় বলে জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।

এছাড়া, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স তার ইসরায়েল সফর স্থগিত করেছেন— কারণ, ইসরায়েল এখনো হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে পারেনি।

তবে ট্রাম্প সবচেয়ে বেশি চাপ দিয়েছেন গাজায় সহায়তা প্রবেশের বিষয়ে। শিশু ও সাধারণ মানুষের দুর্দশার ছবি দেখে তিনি ক্ষুব্ধ হয়েছেন বলে জানানো হয়।

এক কর্মকর্তা বলেন, গাজা যুদ্ধ ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য পরিকল্পনায় বিঘ্ন সৃষ্টি করছে— এ কারণেই তিনি যুদ্ধ থামাতে চান।

ইসরায়েলে ক্ষুব্ধ হয়ে, নেতানিয়াহুর অনুমতি ছাড়াই হামাসের সঙ্গে আলোচনায় গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলি-আমেরিকান জিম্মি ইদান আলেক্সান্ডারকে মুক্ত করে— এমন তথ্যও উঠে এসেছে।

হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভেটি সোমবার সাংবাদিকদের জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হামাসকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন— তিনি চান সব জিম্মি মুক্ত হোক। অন্যদিকে, তিনি ইসরায়েলকে বলেছেন— এই যুদ্ধ থামাতে হবে।