আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
সোমবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনের প্রধান কার্যালয় আগারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম, আব্দুর রহমানেল মাছউদ, সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
এর আগে একই দিন সকালে বিদেশি একটি সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন সিইসি। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "যখন আকাশে সূর্য ওঠে, তখন সব কিছু স্পষ্ট হয়ে যায়। তাই একটু অপেক্ষা করুন।"
সাম্প্রতিক সময়ের বিভিন্ন অভিযোগ এবং আন্দোলনের প্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আওয়ামী লীগের সবধরনের কার্যক্রম সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলাগুলোর নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।
শনিবার রাতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বৈঠক শেষে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানান।
তিনি বলেন, "আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংশোধনী অনুযায়ী এখন থেকে ট্রাইব্যুনাল রাজনৈতিক দল বা তার অঙ্গ সংগঠনকে শাস্তির আওতায় আনতে পারবে।"
তিনি আরও জানান, দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা রক্ষার স্বার্থে, আন্দোলনরত 'জুলাই আন্দোলন' কর্মীদের নিরাপত্তা এবং সাক্ষীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় প্রজ্ঞাপন শিগগিরই জারি করা হবে।
এ বিষয়ে সিইসি বলেন, “গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। আমরা সরকারি প্রজ্ঞাপনের অপেক্ষায় আছি। প্রজ্ঞাপন পাওয়ার পর নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে পদক্ষেপ নেবে।”
উল্লেখ্য, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আওয়ামী লীগের বিচার দাবি করে সারাদেশে ছাত্রসমাজ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং নাগরিক সংগঠনগুলো ব্যাপক আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলনের মুখে সরকারের এ সিদ্ধান্ত দেশের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।