মঙ্গলবার, ১৩ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সন্ত্রাসে জড়িত ব্যক্তি ও সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিধান যুক্ত করে ‘সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুমোদন

আবাসন নিউজ২৪| নিয়োজ ডেস্কঃ

 

সন্ত্রাসে জড়িত ব্যক্তি ও সংগঠনের কার্যক্রম

সন্ত্রাসবিরোধী আইনকে আরও কার্যকর ও সময়োপযোগী করতে বড় ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে বর্তমান সরকার। সন্ত্রাসে জড়িত ব্যক্তি বা সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সুযোগ রেখে ‘সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।

রবিবার (১১ মে) রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই খসড়া অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

সংশোধিত অধ্যাদেশে কী থাকছে?

নতুন সংশোধনের মাধ্যমে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিধানটি যুক্ত হয়েছে, তা হলো—সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের কার্যক্রম সরকার এখন প্রয়োজন মনে করলে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারবে। তবে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণে যুক্তিসংগত কারণ উল্লেখপূর্বক সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করতে হবে।

এছাড়াও, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রচার, বিশেষ করে অনলাইন বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন প্রচার চালানো হলে, তাও নিষিদ্ধ ঘোষণার সুযোগ থাকছে সংশোধিত অধ্যাদেশে।

আইনের পেছনের প্রেক্ষাপট

২০০৯ সালে প্রণীত সন্ত্রাসবিরোধী আইনটির মূল উদ্দেশ্য ছিল সন্ত্রাস দমন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। তবে তখনকার আইনে কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল না। ফলে অনেক সময় সন্ত্রাসে জড়িত সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে সরাসরি ব্যবস্থা নিতে আইনগত জটিলতা তৈরি হতো।

এই আইনি দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতেই এবার এই সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংশোধনের ফলে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জাতীয় নিরাপত্তা জোরদারে নতুন অধ্যায়ের সূচনা

সরকারের মতে, এই সংশোধন জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো আরও কার্যকরভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে। পাশাপাশি দেশের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও উন্নত হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরাও মনে করছেন, বাংলাদেশ বর্তমানে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টার অংশীদার হওয়ায়, এই অধ্যাদেশ সময়োপযোগী এবং গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।

শিগগিরই জারি হতে পারে গেজেট

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলে সোমবার (১২ মে) অধ্যাদেশটি সরকারি গেজেটে প্রকাশ করা হতে পারে। তখন থেকেই এটি কার্যকর হবে।

এটি সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা দেশের নিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

পাঠক প্রিয়,

আপনিও আবাসননিউজ২৪.কম-এ ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি নিয়ে লিখতে পারেন।

আপনার লেখা পাঠানোর ঠিকানাঃ [email protected]