শুক্রবার, ২রা মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিশুর কান্নায় কেঁপে উঠেছিল এলাকাঃ অবশেষে গ্রেফতার সেই পাষণ্ড

আবাসন নিউজ২৪|নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

শিশুর কান্নায় কেঁপে উঠেছিল এলাকাঃ অবশেষে গ্রেফতার সেই পাষণ্ড

শিশুর কান্নায় কেঁপে উঠেছিল এলাকাঃ অবশেষে গ্রেফতার সেই পাষণ্ড
রাজধানীর কদমতলীতে এক মায়ের অসহায় জীবন সংগ্রামের মাঝেই ঘটে গেল এক মর্মান্তিক ঘটনা—যেখানে শিশুর নিষ্পাপ শৈশবকে ভেঙে দিয়েছিল এক নির্মম প্রলোভন। তবে নির্যাতনের পর বিচারের হাত থেকে রেহাই পায়নি সেই অপরাধী। ঢাকার সবুজবাগ এলাকা থেকে অবশেষে গ্রেফতার করা হয়েছে মামলার প্রধান অভিযুক্তকে।

ঘটনার শুরু একটি সাধারণ সকাল দিয়ে। পাঁচ বছরের একটি শিশু, যার জগৎজুড়ে এখনও কেবল মা, খেলা আর ছোট ছোট স্বপ্ন—সে সেদিন গিয়েছিল মায়ের সঙ্গে কাজে। মা কাজ করছিলেন প্লাস্টিক বাছাইয়ের একটি পুরনো ফ্যাক্টরিতে, মাথার ওপর খোলা আকাশ, পায়ের নিচে ধূলা-বালির মাঝেই চলছিল জীবনের লড়াই।

হঠাৎ করেই নিখোঁজ হয়ে যায় শিশুটি। কিছু সময় পর তার কান্নার শব্দ ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। দৌড়ে আসে আশপাশের মানুষ। চমকে ওঠে সবাই—এক শিশুর এমন কান্নার পেছনে যে লুকিয়ে ছিল নিষ্ঠুর এক বাস্তবতা, তা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। সেই মুহূর্তেই শুরু হয় প্রতিবাদ, সহানুভূতি আর বিচারের দাবি।

স্থানীয়দের সহায়তায় এক সহযোগীকে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করা সম্ভব হলেও, মূল অভিযুক্ত ব্যক্তি পালিয়ে যায়। তবে কদমতলী থানা পুলিশ থেমে থাকেনি। তারা প্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান শনাক্ত করে মঙ্গলবার ভোরে সবুজবাগের বাসাবো এলাকা থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর আদালতে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

পুলিশ আরও জানিয়েছে, এ ঘটনায় জড়িত আরও দুই ব্যক্তির একজনের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে, আরেকজন এখনো অজ্ঞাত। তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।

এই ঘটনার পর এলাকা জুড়ে নেমে আসে শোক, ক্ষোভ আর আতঙ্ক। সবচেয়ে বেশি ব্যথিত সেই মা, যিনি নিজের কাঁধে সংসারের ভার তুলে নিয়েছেন। যিনি চেয়েছিলেন, অন্তত তার মেয়ে একটা নিরাপদ ভবিষ্যৎ পাক। সমাজ হিসেবে এই প্রশ্ন আমাদের সামনে—শিশুদের জন্য আমরা কতটা নিরাপদ পরিবেশ দিতে পেরেছি?

ভুক্তভোগী শিশুটিকে চিকিৎসা ও কাউন্সেলিংয়ের আওতায় আনা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধুমাত্র শারীরিক চিকিৎসাই নয়, এই বয়সে মানসিক পুনরুদ্ধার সবচেয়ে জরুরি।

এই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়—শিশুরা কেবল ভবিষ্যতের কান্ডারি নয়, তারা আমাদের আজকের দায়িত্ব। আমাদের সমাজ, প্রশাসন এবং প্রতিটি সচেতন মানুষের সম্মিলিত দায়িত্ব—শিশুদের জন্য নিরাপদ, সুন্দর এবং মর্যাদাপূর্ণ একটি পৃথিবী গড়ে তোলা

পাঠক প্রিয়,

আপনিও আবাসননিউজ২৪.কম-এ ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি নিয়ে লিখতে পারেন।

আপনার লেখা পাঠানোর ঠিকানাঃ [email protected]