সালাহ-ফন ডাইকদের কাছে কেন এই শিরোপা এত বিশেষ
একসময় ইংলিশ ফুটবলে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল লিভারপুলের। ষাটের দশকের মাঝামাঝি থেকে আশির দশকের শেষ পর্যন্ত প্রথম বিভাগে (বর্তমানে প্রিমিয়ার লিগ) তারা শাসন করেছে। তখনকার লিভারপুল ছিল ইংল্যান্ডের ফুটবলের এক কিংবদন্তি নাম। তবে ১৯৯২ সালে প্রিমিয়ার লিগ চালু হওয়ার পর থেকেই যেন ছন্দপতন শুরু হয় তাদের। যেখানে তারা প্রথম বিভাগে ১৮টি শিরোপা জিতেছিল, সেখানে প্রিমিয়ার লিগে এসে সেই জয়ের ধারায় বড়সড় ছেদ পড়ে।
এই সময়টাতেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের নেতৃত্বে রাজত্ব শুরু করে। ২০টি লিগ শিরোপা জিতে ইউনাইটেড হয়ে ওঠে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে সফল ক্লাব, পেছনে ফেলে লিভারপুলকে। ফার্গুসন অবসরে গেলে ইউনাইটেডের আধিপত্য কিছুটা কমে, কিন্তু লিভারপুলও তখনো সেই পুরোনো রাজকীয় জায়গায় ফিরতে পারেনি। নতুন করে ইংল্যান্ডের মঞ্চে আবির্ভাব ঘটে ম্যানচেস্টার সিটির, বিশেষ করে পেপ গার্দিওলার অধীনে তারা হয়ে ওঠে অপ্রতিরোধ্য।
মাঝে ২০১৯-২০ মৌসুমে লিভারপুল অবশ্য ৩০ বছরের অপেক্ষা ভেঙে লিগ জেতে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, করোনার মহামারির কারণে তখন অ্যানফিল্ডে ছিল না সেই চেনা উল্লাসের আবহ। ভরা গ্যালারি, সমর্থকদের চিৎকার—সবই ছিল অনুপস্থিত।
২০২৫ সালে, আর্নে স্লটের প্রথম মৌসুমেই লিভারপুল আবার চ্যাম্পিয়ন। তাও আবার অ্যানফিল্ডে, সমর্থকদের সামনে, চার ম্যাচ হাতে রেখেই। এ নিয়ে তাদের লিগ শিরোপা সংখ্যা ২০, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে যৌথভাবে এখন শীর্ষে তারা।
শিরোপা জেতার পর লিভারপুল তারকাদের অনুভূতি:
কোডি গাকপো (ফরোয়ার্ড):
"এই বছর আমাদের পরিশ্রমের ফল আজকের এই মুহূর্ত। চ্যাম্পিয়নস লিগে কিছু হতাশার মুহূর্ত ছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত লিগ শিরোপা পাওয়া অসাধারণ। ভবিষ্যতে আরও উন্নতির লক্ষ্য নিয়েই এগোব।"
অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার (মিডফিল্ডার):
"বিশ্বকাপ জয়ের পর প্রিমিয়ার লিগ জয় আমার ক্যারিয়ারে নতুন মাত্রা যোগ করলো। সতীর্থদের ছাড়া এটা সম্ভব হতো না। আমরা সত্যিই দারুণ একটা দল।"
অ্যান্ডি রবার্টসন (ডিফেন্ডার):
"শেষবার যখন আমরা লিগ জিতেছিলাম, তখন সময়টা ছিল অন্যরকম। এবার সমর্থকদের সামনে উল্লাস করতে পারাটা এক অনন্য অভিজ্ঞতা। এটা অতুলনীয়।"
মোহাম্মদ সালাহ (ফরোয়ার্ড):
"অবিশ্বাস্য অনুভূতি! সমর্থকদের সামনে প্রিমিয়ার লিগ জেতাটা পাঁচ বছর আগের চেয়েও বেশি আনন্দের। এটার কোনো তুলনা হয় না।"
আলিসন বেকার (গোলকিপার):
"আজকের জয় ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। কোচ পরিবর্তন, চোট, নানা চ্যালেঞ্জ পেরিয়ে আমরা যা অর্জন করেছি, তা স্বপ্নের মতো।"
কার্টিস জোন্স (মিডফিল্ডার):
"আমি বাকরুদ্ধ! এবার আমি দলের অংশ হয়ে মাঠে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছি। গোল, অ্যাসিস্ট, সবকিছু দিয়েই দলে অবদান রেখেছি। এই অনুভূতি সত্যিই অসাধারণ।"