
বিএনপি চায় অংশগ্রহণমূলক সংসদ ও প্রাণবন্ত গণতন্ত্র: আমীর খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আগামী দিনে একটি অংশগ্রহণমূলক সংসদ ও শক্তিশালী বিরোধী দল গঠনের মাধ্যমে সংসদে প্রাণবন্ত বিতর্ক ফিরিয়ে আনা বিএনপির মূল লক্ষ্য। প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি দলীয় সংস্কার, নির্বাচন, নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন।
আমীর খসরু জানান, বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতি করবে না। অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশে নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে দলটি। তিনি বলেন, “ভিন্নমতের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে এবং তার অধিকারকে সমুন্নত রাখতে হবে। প্রতিশোধের রাজনীতি করলে বাংলাদেশ একই স্থানে ফিরে যাবে।”

তিনি আরো বলেন, বিএনপি তার ৩১ দফা রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক সংস্কারের রূপরেখা দিয়েছে। যারা এখন সংস্কারের কথা বলছেন, তাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, “সংস্কারের ভিত্তি বিএনপিই রেখেছে, আজ বাংলাদেশ যেখানে দাঁড়িয়ে আছে তার ভিত্তি আমরা গড়েছি।”
জামায়াতের আমিরের সঙ্গে লন্ডনে খালেদা জিয়ার সাক্ষাৎ নিয়ে আমীর খসরু জানান, এটি কেবল সৌজন্যমূলক দেখা হয়েছিল, কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। তবে তিনি বলেন, রাজনৈতিক আলোচনাকে নেতিবাচকভাবে না দেখে সমাধানের পথে এগোতেই হবে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে বিষয়গুলোতে ঐকমত্য হয়েছে, তা নির্দিষ্ট করে একটি জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করে দ্রুত নির্বাচন আয়োজন সম্ভব। ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন আয়োজনের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্নে আমীর খসরু জানান, বিএনপি বহুপাক্ষিক (মাল্টিলেটারাল) আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ধারায় বিশ্বাসী। ভারতের গণতন্ত্রপন্থী অবস্থানকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠায় ভারতের সদিচ্ছা আমাদের জন্য ইতিবাচক।”
বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে জমি দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, “অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে দুই হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপি রাজনৈতিক সংস্কারের জন্য সময় নিচ্ছে এবং ধীরে ধীরে সঠিক পথে এগোচ্ছে।”
অধ্যাপক রেহমান সোবহানের সতর্কবার্তার প্রতি একমত প্রকাশ করে আমীর খসরু বলেন, বিএনপি ইতিমধ্যে ৩১ দফার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় কাঠামো সংস্কারের রূপরেখা দিয়েছে। তিনি মনে করেন, ভুল স্বীকার করে সমাধানের দিকে এগোনোই বিএনপির শক্তি, এবং সেটিকে ভিত্তি করে ভবিষ্যতে আরও ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে।