শুক্রবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সেন্টমার্টিনে পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ডঃ সাবেক এমপি বদিসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

মোহাম্মদ ইউনুছ অভি কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ

ছবিঃ ফাইল ছবি

পর্যটন স্বর্গখ্যাত সেন্টমার্টিন দ্বীপে পরিবেশ ধ্বংস করে গড়ে ওঠা অবৈধ হোটেল-রিসোর্টের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিয়েছে আদালত। বহুল আলোচিত আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও সানরাইজ রিসোর্টের মালিক আব্দুর রহমান বদিসহ মোট ১৯ জন হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়ের করা মামলার চার্জশিট গ্রহণ করে আদালতের বিচারক মো. আসিফ এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আশেক ইলাহী শাহজাহান নূরী।

কারা রয়েছেন এই তালিকায়?

পরোয়ানাভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে রয়েছেন:

আব্দুর রহমান বদি, সাবেক সংসদ সদস্য ও সানরাইজ রিসোর্টের মালিক

মো. ইসহাক, বাংলা রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী

আবু জাফর প্রিন্স, ফ্যান্টাসি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের মালিক

আব্দুর রহমান, সি প্রবাল বিচ রিসোর্টের মালিক

আব্দুল মালেক ও আব্দুর রহিম, আব্দুর রহমানের ভাই

নজরুল ইসলাম চৌধুরী, লাবিবা আটলান্টিক রিসোর্টের মালিক

আমজাদ হোসেন ও সুলাইমান চৌধুরী, ইনচার্জ ও ম্যানেজার

মো. ইসহাক, সানরাইজ রিসোর্টের ব্যবস্থাপক

জাহিদ হোসেন, রয়েল বিচ রিসোর্টের মালিক

আবুবকর ছিদ্দিক ও নিজাম উদ্দিন সুমন, রূপসী বাংলা রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী ও পরিচালক

হেলাল উদ্দিন ও সরোয়ার উদ্দিন ভুট্টো, নিঝুমবাড়ি রিসোর্টের মালিক ও তার ভাই

ফেরদৌস আহমেদ তুষার, ব্লু রেইন রিসোর্টের মালিক

মোস্তাক আহম্মদ ও আবু সাদাত লাভলু

অধ্যাপক আব্দুর রশিদ, ড্রিমারস প্যারাডাইস রিসোর্টের মালিক

কী অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে?

২০২১ সালের ২৭ এপ্রিল পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে টেকনাফ থানায় মামলা করা হয়। অভিযোগপত্রে বলা হয়, সেন্টমার্টিন দ্বীপে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘন করে হোটেল-রিসোর্ট নির্মাণ করা হয়েছে। এতে করে সংরক্ষিত উদ্ভিদ ও প্রাণীর আবাসস্থল ধ্বংস, বিচ থেকে বালু উত্তোলন, সরকারি জমি দখল ও অবৈধ নির্মাণ কাজ চালিয়ে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করা হয়েছে।

শুরুতে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হলেও তদন্ত শেষে আরও ৯ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট জমা দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর। দীর্ঘ শুনানি ও তদন্ত শেষে ২৪ এপ্রিল আদালত ১৯ জনের বিরুদ্ধেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

পরিবেশ বিপর্যয়ের প্রভাব

বিশেষজ্ঞদের মতে, সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ, যা দেশের জীববৈচিত্র্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন, হোটেল-রিসোর্ট নির্মাণ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ লুন্ঠন দ্বীপের অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছে। আদালতের এই পদক্ষেপকে পরিবেশবাদীরা স্বাগত জানিয়ে বলছেন, এটি পরিবেশ রক্ষায় একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত।

পাঠক প্রিয়,

আপনিও আবাসননিউজ২৪.কম-এ ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি নিয়ে লিখতে পারেন।

আপনার লেখা পাঠানোর ঠিকানাঃ abasonnewsfeature@gmail.com