
নির্বাচনেই চোখ, সংস্কার নিয়ে ভাবার সময় নয়ঃ সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) আর কোনো রাজনৈতিক ঐকমত্যের অপেক্ষায় থাকবে না। বরং নিজেদের আইনগত ক্ষমতার মধ্যেই সম্ভাব্য জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূত সুসান রাইলির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান সিইসি।

তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব ভোটের প্রস্তুতি নেওয়া এবং তা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা। রাজনৈতিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব ঐকমত্য কমিশনের। আমাদের কাজ নির্বাচন আয়োজন, আর সে লক্ষ্যেই কাজ করছি।”
অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতার আশ্বাস
সাক্ষাতে অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে নির্বাচন সংক্রান্ত যেকোনো সহায়তায় আগ্রহ প্রকাশ করে অস্ট্রেলিয়ার সহায়তার আশ্বাস দেন হাইকমিশনার সুসান রাইলি।

সিইসি বলেন, “আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক, ভোটার তালিকা হালনাগাদসহ নির্বাচন-সংক্রান্ত নানা বিষয়ে অস্ট্রেলিয়া তাদের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমরা তাদের সার্বিক সহযোগিতা আশা করছি।”
পূর্ণোদ্যমে প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন
সিইসি আরও জানান, নির্বাচন আয়োজনের জন্য কমিশন ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। এর মধ্যে রয়েছে নির্বাচন উপকরণ কেনা, ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ, সীমানা পুনর্নির্ধারণ এবং রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের সময়সীমা বাড়ানো।
তিনি বলেন, “সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে আইন পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে। এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় থেকে ভেটিং হয়ে এলেই কার্যক্রম শুরু হবে।”
ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজও জোরেশোরে চলছে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজতর করতে আবেদনের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন সিইসি নাসির উদ্দীন।
রাজনৈতিক আলোচনা নয়, দায়িত্বপূর্ণ প্রস্তুতির দিকে নজর
নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক আলোচনায় জড়াতে চায় না, এমন মন্তব্য করে সিইসি বলেন, “রাজনৈতিক সমঝোতা কিংবা ঐকমত্য গঠনের দায়িত্ব কমিশনের নয়। আমরা দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা হিসেবে আমাদের অধিকার ও ক্ষমতার মধ্যে থেকেই কাজ করছি, করব।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা প্রত্যাশা করি, সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে কেউ অংশ না নিলে ইসি তার দায়িত্ব থেকে পিছু হটবে না।”
জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এমন স্পষ্ট বার্তা রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বার্তা দিচ্ছে। সংলাপ ও সমঝোতার অপেক্ষায় না থেকে নিজেদের দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকায় কমিশনের অগ্রসর হওয়া, দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
অন্যদিকে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের আগ্রহ এবং উন্নত দেশের সহায়তার আশ্বাস, আসন্ন নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করার জন্য বড় ধরনের ইতিবাচক ইঙ্গিত হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।
এই ধরনের একটি প্রস্তুতিমূলক কর্মকাণ্ড যদি সফলভাবে বাস্তবায়ন হয়, তাহলে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় নতুন মাত্রা যুক্ত হবে – এমনটাই প্রত্যাশা দেশবাসীর। see more