জুমার দিন ইসলামে অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ ও মর্যাদাপূর্ণ একটি দিন। এই দিনটি ‘সপ্তাহের ঈদ’ হিসেবেও বিবেচিত। হাদীস ও কুরআনে এই দিনের বিশেষ মর্যাদা ও কিছু আমল সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে বলা হয়েছে।
জুমার দিনের ফজিলত
১. সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“সপ্তাহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমার দিন।”
(মুসলিম: ৮৫৪)
২. আদম (আ.)-এর সৃষ্টি ও জান্নাতে প্রবেশের দিন
তিনি আরও বলেন:
“এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছিল, এই দিনেই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং এই দিনেই তাকে জান্নাত থেকে বের করা হয়।”
(মুসলিম: ৮৫৪)
৩. দোয়া কবুলের বিশেষ সময়
জুমার দিনে এমন একটি মুহূর্ত আছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যেটাই চায়, আল্লাহ তা কবুল করেন।
রাসূল (সা.) বলেন:
"জুমার দিনে এমন একটি সময় রয়েছে, যখন কোনো মুসলিম বান্দা নামাজে দাঁড়িয়ে আল্লাহর কাছে কোনো ভালো কিছু চাইলে, নিশ্চয়ই তিনি তা তাকে দান করেন।”
(বুখারী: ৯৩৫, মুসলিম: ৮৫২)
---
জুমার দিনের গুরুত্বপূর্ণ আমল
১. গোসল করা ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা
হাদীসে আছে, জুমার দিনে গোসল করা, ভালোভাবে পরিষ্কার হওয়া ও সুন্দর কাপড় পরিধান করা সুন্নত।
(বুখারী: ৮৮০)
২. সুবাস ব্যবহার করা
রাসূল (সা.) জুমার দিন আতর বা সুগন্ধি ব্যবহার করতেন।
(বুখারী: ৮৮৭)
৩. জুমার নামাজ আদায় করা ও খুতবা শ্রবণ করা
জুমার নামাজ ফরজ (পুরুষদের জন্য)। খুতবা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে, কথা বলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
(মুসলিম: ৮৫৭)
৪. সূরা কাহফ পড়া
রাসূল (সা.) বলেছেন:
“যে ব্যক্তি জুমার দিনে সূরা কাহফ পাঠ করে, তার জন্য দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ে নূর জ্বলে।”
(হাকিম: ৩৪০৯)
৫. দুরুদ শরীফ অধিক পরিমাণে পাঠ করা
রাসূল (সা.) বলেন:
“তোমরা জুমার দিনে আমার উপর অধিক পরিমাণে দুরুদ পাঠ করো।”
(আবু দাউদ: ১৫৩১)
৬. অধিক দোয়া ও ইস্তেগফার
এ দিন দোয়া কবুলের সময় থাকে, তাই বেশি বেশি দোয়া করা ও ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত।
---
অতিরিক্ত করণীয় (সুন্নত ও মুস্তাহাব)
সুন্দর কাপড় পরা
মসজিদে আগেভাগে যাওয়া
ক্বব্লার দিকে মনোযোগ দিয়ে বসা
খুতবার সময় একদম চুপ থাকা
নফল ইবাদত, যেমন—তাহলীল, তাসবিহ, ইস্তেগফার ইত্যাদি
আরও পড়ুনঃ আন্দোলনের প্রস্তুতি? গোপনে ঢাকামুখী হচ্ছেন আওয়ামী নেতাকর্মীরা