| ১৬ জুলাই ২০২৫
শিরোনাম:

নড়াইলে হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন

নড়াইলে হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন

নড়াইলের কালিয়ায় আব্দুল আহাদ মল্লিক হত্যা মামলায় ইলিয়াছ সরদার নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। নড়াইলের বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার বুধবার সকাল ১১টার দিকে এ রায় ঘোষণা করেন।

উপজেলার নড়াগাতী থানার কলাবাড়িয়া ইউনিয়নের আইচপাড়া গ্রামে আব্দুল আহাদ মল্লিককে ২০১৮ সালের ৪ জুলাই রাত ১০টার দিকে হত্যা করা হয়েছিল বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত ইলিয়াছ সরদার খুলনা জেলার তেরখাদা থানার পারখালি গ্রামের সবুর সরদারের ছেলে। রায় প্রদানের সময় দন্ডপ্রাপ্ত ইলিয়াছ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। নড়াইল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পূর্ব শত্রæতার জেরে কালিয়া উপজেলার নড়াগাতী থানার কলাবাড়িয়া ইউনিয়নের আইচপাড়া গ্রামের আহাদ মল্লিককে ২০১৮ সালের ৪ জুলাই রাত ১০টার দিকে ইলিয়াছ সরদার মোবাইল ফোন করে তার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। ওইরাতে আহাদ মল্লিক বাড়িতে আর ফিরে আসেনি। পরেরদিন ৫ জুলাই সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পারোখালী গ্রামের একটি পাট ক্ষেতে দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়।

পরে নড়াগাতি থানা পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ৭ জুলাই নিহতের ভাই আবুল বাশার মল্লিক বাদি হয়ে ইলিয়াছ সরদারসহ ৫জনকে আসামি করে নড়াগাতি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিজ্ঞবিচারক আসামি ইলিয়াছ সরদারকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন। বাকি ৪ আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দোহাতীতভাবে প্রমাণীত না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।

শ্যামনগরে চিংড়ি ঘের দখলের অভিযোগে জমির মালিকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি

নড়াইলে হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় চিংড়ি ঘের দখলের অভিযোগে ক্ষুব্ধ জমির মালিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা মানববন্ধন করেছেন।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুর ১২টায় শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

 

অভিযোগে জানা যায়, প্যান্ডামিক ফিজারিজের মালিক এ.এম. সাইদুর রহমান ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে প্রায় ১০০০ বিঘা জমির লিজের টাকা পরিশোধ না করে দখল করে রেখেছেন। জমির মালিকরা পাওনা টাকা চাইলে তাদের নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে, এমনকি মিথ্যা মামলায় হয়রানি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।

 

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘লিজ চুক্তির মেয়াদ শেষ হলেও আমাদের জমি ফেরত দেওয়া হচ্ছে না। উল্টো টাকা চাইলে মামলা আর হুমকি ধামকি! আমরা আমাদের পৈত্রিক জমি ফেরত চাই, ন্যায্য পাওনা বুঝে পেতে চাই।’

 

মানববন্ধনে অংশ নেন মুন্সিগঞ্জ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মোড়ল, মো. আব্দুল হালিম, রফিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ আবু হামজা, ওমর ফারুক, হাবিবুর রহমান, সিরাজুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, আরশাদ আলীসহ অনেকে।

 

পরে ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছে লিখিতভাবে স্মারকলিপি প্রদান করেন এবং দ্রুত দখলমুক্তির দাবি জানান।

আবাসন নিউজ২৪-এর অনুসন্ধানে ‘মেগা টাউন’ প্রকল্প বন্ধ, প্লট কিনে প্রতারিত না হতে রাজউক চেয়ারম্যানের কড়া সতর্কবার্তা

নড়াইলে হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) অবশেষে বহুল আলোচিত ‘মেগা টাউন’ প্রকল্পের সকল কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে। আবাসন নিউজ২৪-এর একের পর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে আসে অনুমোদনহীন প্লট বিক্রি, ভুয়া জমির মালিকানা ও গ্রাহক প্রতারণার চাঞ্চল্যকর তথ্য—যার প্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নেয় রাজউক।

 

রাজউক-এর স্মারক নং-২৫.৩৯.০০০০.০৩১.২৭.০০১.২১-৭৯১, তারিখ ১৫/০৭/২০২৫ ইং, স্বাক্ষরিত নবায়ন খীসা, উপনগর পরিকল্পনাবিদ-২, নগর পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন শাখা, রাজধানী উন্নয়ন কর্পোরেশন থেকে এ নির্দেশনা জারি করা হয়।

রাজউক কর্তৃপক্ষ মেগা বিল্ডার্সের "মেগা টাউন" প্রকল্প বন্ধের জন্য চিঠি দিয়েছে।
রাজউক থেকে অবৈধ অনুমোদনহীন “মেগা টাউন” বন্ধের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।

বিশ্বাস বিল্ডার্সের জমিতে মেগা টাউনের সাইনবোর্ড’

স্থানীয় দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক শিকদার আবাসন নিউজ২৪-কে বলেন—

ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এই প্রকল্পের কোনো অনুমোদন দেওয়া হয়নি। উপরন্তু বিশ্বাস বিল্ডার্সের ক্রয়কৃত জমিতে মেগা টাউনের সাইনবোর্ড বসিয়ে মানুষকে প্রতারিত করা হচ্ছে—এটা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।

রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্টের হুঁশিয়ারি

রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট হাজী দেলোয়ার হোসেন বলেন—

রিহ্যাবের সদস্য হলেই কোনো কোম্পানি দুর্নীতি করবে না—এটা ভুল ধারণা। মেগা বিল্ডার্স লিমিটেডের কোনো ল্যান্ড প্রজেক্ট সম্পর্কে আমরা অবগত নই। রাজউক যখন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে, তার মানেই এখানে প্রতারণার প্রমাণ আছে। সকল গ্রাহককে অনুরোধ করব—ভুলেও অনুমোদনহীন প্রকল্পে বিনিয়োগ করবেন না, বৈধ কাগজপত্র যাচাই করে তবেই টাকা দেবেন।

 

বিএলডিএ ও ভূমি অফিসের সাফ বক্তব্য

বাংলাদেশ ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিএলডিএ)-এর তথ্য অনুযায়ী মেগা বিল্ডার্স লিমিটেড তাদের সদস্য নয়।

নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা, খ অঞ্চল) টিএম রাহসিন কবির বলেন—

মেগা বিল্ডার্স কোনো জমি অধিগ্রহণের আবেদন করেনি বা অনুমোদন নেয়নি। অনুমোদন ছাড়া কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া সম্পূর্ণ বেআইনি—এ অভিযোগ পেলে সাথে সাথেই আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

বন অধিদপ্তরের পদক্ষেপ

নারায়ণগঞ্জের বন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এ এইচ এম রাশেদ বলেন—

লিখিত অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেব। রাজউক যখন প্রকল্প বন্ধ করেছে, তখন আমাদের দায়িত্বও নিশ্চিত করা যে আর কোনো অবৈধ কর্মকাণ্ড এখানে না চলে।

 

আইনজীবীর পরামর্শ

ব্যারিস্টার এস এম শাকিল পারভেজ বলেন—

রাজউকের নির্দেশেই প্রমাণিত, প্রকল্পটি অবৈধ। গ্রাহকদের উচিত দ্রুত টাকা ফেরতের উদ্যোগ নেয়া, নইলে কোম্পানি ‘প্রকল্প বন্ধ’ অজুহাতে অর্থ আত্মসাৎ করতে পারে।

 

‘বিশ্বাস বিল্ডার্স’ বলছে কী?

বিশ্বাস বিল্ডার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন—

এই জায়গা আমাদের বহু আগেই ক্রয়কৃত। কিছু অসাধু চক্র সাইনবোর্ড বসিয়ে প্রতারণা করছে। প্রকৃত মালিকানা যাচাই না করে কেউ যেন টাকা না দেন।

 

কেন অনুমোদন জরুরি?

আসল আবাসন প্রকল্প পরিচালনার জন্য ভূমি অফিস, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা, জেলা প্রশাসন ও বিএলডিএ থেকে  অনুমোদন ও NOC নিতে হয়। পাশাপাশি সাইট অফিস, বৈধ দলিলপত্র ও সঠিক ক্রয়-দখল নিশ্চিত করতে হয়—এসব ছাড়া কোনো প্রকল্পকে বৈধ ধরা যায় না। অথচ মেগা বিল্ডার্স লিমিটেডের মেগা টাউন প্রকল্পের কোনো অনুমোদন নেই। পাশাপাশি এক শতাংশ জমিও নেই।

 

রাজউক চেয়ারম্যানের স্পষ্ট বার্তা

রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোঃ রিয়াজুল ইসলাম আবাসন নিউজ২৪-কে বলেন—

রাজউক কখনো অনুমোদনহীন কোনো প্রকল্পের বৈধতা দেয় না। তাই মেগা টাউনের কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চকচকে বিজ্ঞাপন দেখে নয়—রাজউকের অনুমোদনপত্র যাচাই করে তবেই বিনিয়োগ করুন। নইলে প্রতারিত হবেন।

দুদকের নজরে হাসিনার ছেলে জয় ও মেয়ে পুতুলের দান-অনুদান, এনবিআরকে নথি তলবের চিঠি

নড়াইলে হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন

গণঅভ্যুত্থানের মুখে ভারত আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও মেয়ে—সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল—এখন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানের মুখে।

 

দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জয় প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) এবং পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশন যে বিপুল দান ও অনুদান পেয়েছে, তার হিসাব-নিকাশে জটিলতার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দিয়ে সব নথি ও ব্যাংক লেনদেনের তথ্য দ্রুত সরবরাহ করতে বলা হয়েছে।

 

দুদকের উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম রোববার এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, “রাষ্ট্রীয় অর্থের অপব্যবহার এবং ব্যাংকের সিএসআর তহবিল থেকে অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। এজন্য গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র জব্দ করা প্রয়োজন।”

 

দুদক বলছে, রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে রাষ্ট্রীয় অর্থ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও অভিযোগ এসেছে। একইসঙ্গে, পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধেও রয়েছে অনুদান আত্মসাতের অভিযোগ।

 

এ বিষয়ে সুষ্ঠু অনুসন্ধান করতে উপপরিচালক মনিরুল ইসলামকে প্রধান করে সাত সদস্যের অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়েছে। দলে রয়েছেন সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া, মুবাশ্বিরা আতিয়া তমা, এস এম রাশেদুল হাসান, এ কে এম মুর্তজা আলী সাগর, মনিরুল ইসলাম ও উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন।

 

উল্লেখ্য, গত মার্চে পুতুলের বিরুদ্ধে ৩৩ কোটি টাকার অনিয়ম ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অঞ্চলের পরিচালক পদ ‘বাগিয়ে নেওয়া’র অভিযোগে দুদক দুইটি মামলা করেছে। এর আগেও পূর্বাচলে তথ্য গোপন করে প্লট বরাদ্দের অভিযোগে জয় ও পুতুলের বিরুদ্ধে মামলা হয়।

×