
প্রাকৃতিক উপায়ে ছুরি শুঁটকি উৎপাদন করেন কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার কয়েক হাজার জেলে।
উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ উপকূলে সামুদ্রিক শুঁটকি মাছের মৌসুম শেষের দিকে। সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবর্তন হওয়ায় এবার শুঁটকি মৌসুম শেষ হচ্ছে এক মাস আগেই।
প্রতি বছর নয় মাস শুঁটকি উৎপাদন করা গেলেও এবার থেকে সেই সময় কমিয়ে আট মাস করা হয়েছে।

উপকূলে পুরোদমে চলছে মাছ শিকার ও শুঁটকি উৎপাদন। এই শুষ্ক মৌসুমে চলছে শুঁটকি উৎপাদনের ধুম।
ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার জেলে পল্লীর মৎস্যজীবীরা। আর এসব শুঁটকি মধ্যে ছুরি শুঁটকি যাচ্ছে সারাদেশে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাবরাং ও শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিমপাড়া বেড়িবাঁধের পাশে গড়ে উঠেছে ছুরি শুঁটকি পল্লী। এসব পল্লীতে বাঁশের ছাউনি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মাচা। এসব মাচায় ছোট-বড় সামুদ্রিক ছুরি মাছ কিনে এনে শুকানো হয়। এগুলো পাঁচ-ছয়দিন মধ্যে পুরোপুরি শুকিয়ে যায়।

শাহপরীর দ্বীপ শুঁটকি মহালের মালিক শাহাব উদ্দিন বলেন, “এসব ছুরি শুঁটকি মাছ পর্যাপ্ত আলো বাতাস এবং রোদে শুকালে কোনো কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না।
সমুদ্রের তীরবর্তী এলাকা হওয়ায় এখানে রোদের প্রচণ্ড তাপ রয়েছে। এ ছাড়া বায়ু চলাচলেও নেই কোনো প্রতিবন্ধকতা। তাই রোদ ও বাতাসের সংমিশ্রণে দ্রুত কাঁচা মাছ শুঁটকি হিসেবে রূপান্তরিত হয়।
আর মাছে কীটনাশক মেশালে শুঁটকির প্রকৃত স্বাদ পাওয়া যায় না বলেও জানান শাহাবুদ্দিন।
শুঁটকি ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিন বলেন, “এখানকার ছুরি শুঁটকি লবণ ও কীটনাশকমুক্ত। পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে পাঁচ-ছয় দিনের মধ্যে শুঁটকি তৈরি করা হয়েছে। প্রতি কেজি শুঁটকি ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকায় বিক্রি করা হয়।
মাসে দুই থেকে তিনবার শুঁটকি নিয়ে চট্টগ্রামে বিক্রি করা হয়। শাহপরীর দ্বীপের এই ছুরি শুঁটকির বেশ চাহিদা রয়েছে। পাইকাররা আগে থেকে অর্ডার দিয়ে থাকেন।
এ বিষয়ে উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, “টেকনাফ উপকূলের শুঁটকি কোনো রকম রাসায়নিকের প্রয়োগ ছাড়াই প্রক্রিয়াজাত করা হয়। প্রক্রিয়াজাতের সময় মাঝে মধ্যে লবণ ছাড়া কিছু মেশানো হয় না। ফলে এ শুঁটকি স্বাস্থ্যসম্মত। এটা অত্যন্ত সুস্বাদু হওয়ায় সারাদেশে এর চাহিদা আছে।
তিনি বলেন, উপকূলীয় অধিকাংশ লোকজন শুঁটকি মাছের ব্যবসা করে লাভবান হচ্ছেন। আমাদের পক্ষ থেকে তাদের পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হয়।
তারা সামুদ্রিক কাঁচা মাছ সংরক্ষণ করে সাত থেকে ১০ দিন শুকিয়ে বিক্রি করছেন। এটি ভালো উদ্যোগ বলে জানান এই মৎস্য কর্মকর্তা
আরও পড়ুনঃ আজ এবং আগামীকাল থেকে সারা দুনিয়া বাংলাদেশকে চিনবে