
কুয়াকাটা, ৩১ মার্চ: ঈদুল ফিতরের ছুটি কাটাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকদের ঢল নেমেছে কুয়াকাটায়। সোমবার (৩১ মার্চ) সকালে ঈদের নামাজ শেষে সৈকতে ভ্রমণপিপাসুদের ভিড় বাড়তে থাকে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টানে সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ে গা ভাসিয়ে পর্যটকরা আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠেছেন। সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে ও নির্মল বাতাসে সময় কাটাতে সকাল থেকেই পর্যটকরা ছুটে আসছেন।
শুঁটকিপল্লি, গঙ্গামতি সৈকত, রাখাইন পল্লি, ইকোপার্ক, ইলিশ পার্ক, লেম্বুর বন ও সৈকতের ঝাউবাগানসহ কুয়াকাটার অধিকাংশ পর্যটন স্পট এখন পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত। সৈকতের বালুকাবেলা থেকে শুরু করে আশপাশের দর্শনীয় স্থানগুলোতে ভ্রমণপিপাসুরা আনন্দে সময় কাটাচ্ছেন।
কুয়াকাটার হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরাও পর্যটকদের আগমনে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। হোটেল লাইট হাউজ এর ম্যানেজার জানান, “ঈদ উপলক্ষে আমাদের হোটেলের ৭০ শতাংশ রুম আগেই বুকিং হয়ে গেছে। পর্যটকদের সাড়া ভালো পাচ্ছি। আশা করছি, পুরো মাসজুড়ে পর্যটক সমাগম ভালোথাকবে।”
কুয়াকাটার পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত ১৬টি পেশার মানুষ ঈদে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ইজিবাইক ও অটোরিকশা চালক মো. মুছা বলেন, “গত বছরের তুলনায় আয় কিছুটা কম হলেও মোটামুটি ভালো ইনকাম হচ্ছে। স্থানীয় পর্যটকদের পাশাপাশি আগামীকাল (১ এপ্রিল) দূরদূরান্তের পর্যটকরা বেশি আসবেন বলে আশা করছি।”
এদিকে, সৈকতের সৌন্দর্য রক্ষায় কিছু চ্যালেঞ্জের কথাও বলছেন স্থানীয়রা। মো. আরিয়ান নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, “সৈকতের ঢেউ থেকে রক্ষা পেতে রাখা বালুভর্তি বস্তাগুলো এলোমেলো হয়ে পড়েছে, যা পর্যটকদের জন্য ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া কিছু অসচেতন পর্যটকের কারণে সৈকতে চিপসের প্যাকেট ও পলিথিন ছড়িয়ে পড়ছে, যা সৈকতের সৌন্দর্য নষ্ট করছে। সৈকতের পরিবেশ সুন্দর রাখতে সবাইকে সচেতন হতে হবে।”
রাতের কুয়াকাটা সৈকতেও পর্যটকদের আনাগোনা অব্যাহত রয়েছে। আলো ঝলমলে সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে হাজারো পর্যটক রাতেও বিচে হাঁটছেন। বিভিন্ন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ও ব্লগারদের দেখা গেছে সৈকতের সৌন্দর্য ক্যামেরাবন্দি করতে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, ঈদের ছুটির ফলে পর্যটনের বিকাশ আরও ত্বরান্বিত হবে। আচার, শুঁটকি ও সামুদ্রিক পণ্যের দোকানগুলোতে পর্যটকদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি করলে কুয়াকাটা পর্যটনের জন্য আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।
পর্যটকদের আনন্দ মুখর উপস্থিতিতে এবারের ঈদ উপলক্ষে কুয়াকাটা আরও একবার প্রাণ ফিরে পেয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা