মঙ্গলবার, ১৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

রাজাপুরে পরকীয়ায় বাঁধা দেওয়ায় শিক্ষার্থীকে নির্যাতন , সমঝোতায় ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ

সামীর আল মাহমুদ ঝালকাঠি প্রতিনিধি

রাজাপুরে পরকীয়ায় বাঁধা দেওয়ায় শিক্ষার্থীকে নির্যাতন

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় পরকীয়ার ঘটনায় বাঁধা দেওয়ায় এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। আহত শিক্ষার্থীর নাম মো. রিয়াজ হোসেন (১৯)।
পরকীয়ার ঘটনায় শাস্তির বদলে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সবুর ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে সমঝোতার করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।আহত মো. রিয়াজ হোসেন উপজেলার পশ্চিম বাদুরতলা এলাকার আব্দুল সোবাহান হাওলাদারের ছেলে এবং আব্দুল মালেক ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
সোমবার (২৪ মার্চ) দুপুরে উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নের পুথরীজনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত রিয়াজের বাবা রাজাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযুক্তরা হলেন মো: সজিব (৩০), মো:রাজিব (২২), মো: হৃদয় (২০) ও মো:শাহাদাৎ (২০)।

রাজাপুরে পরকীয়ায় বাঁধা দেওয়ায় শিক্ষার্থীকে নির্যাতন
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, প্রায় ৮-১০ দিন আগে পশ্চিম বাদুরতলা এলাকায় মো: সজিবকে আপত্তিকর অবস্থায় এক মেয়ের সঙ্গে একটি ঘরের ভেতরে পাওয়া যায়। তখন রিয়াজসহ স্থানীয় লোকজন তাদের আটক করে এবং ইউপি সদস্য সবুরসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে সালিশের ব্যবস্থা করা হয়। সালিশ বৈঠকে ইউপি সদস্য সবুর শাস্তির বদলে ঘটনার সমাধান হিসেবে মেয়েটির পরিবারকে ২০ হাজার টাকা এবং ছেলেটির পরিবারকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর ছেলে মেয়ে দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে অভিযুক্ত সজিব এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে রিয়াজকে প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকেন। সোমবার বিদ্যুৎ বিল দিতে কৃষি ব্যাংকে যাওয়ার পথে সজিব ও তার সহযোগীরা রিয়াজকে আটক করে এবং লোহার রড, লাঠি ও অন্যান্য অস্ত্র দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। রিয়াজের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এসে তাকে উদ্ধার করে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ভর্তি রাখেন।

তবে ইউপি সদস্য মো. সবুর ৫০ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমাকে স্থানীয়রা ডাকার পর ঘটনাস্থলে যাই। যেহেতু ছেলে-মেয়ের আগে বিয়ে আছে, তাই নতুন করে তাদের বিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে উভয়ের অভিভাবকদের ডেকে বুঝিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেই। এখানে কোনো টাকার লেনদেন হয়নি।”
বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন বলেন , “আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। যথাযথ তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তারা অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন  কাঁঠালিয়ায় সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর দখল ও মাদক কারবারের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর মানববন্ধন
WhatsApp
Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
Telegram