মঙ্গলবার, ১৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ঈদ উপলক্ষে সারাদেশে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার

অনলাইন ডেস্ক

আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে সারাদেশে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ছাড়াও আনসার সদস্যরা এসময় মাঠে থাকবে। ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বেশকিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. নাসিমুল গনি সোমবার সচিবালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চেয়ে আরো অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে ঈদকে সামনে রেখে সারাদেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক মনিটরিং করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা নিয়োজিত রয়েছেন।

পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, এবার ঈদকেন্দ্রিক নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ সংখ্যক পুলিশ সদস্য দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে।

এছাড়া সারাদেশে র‌্যাবের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। র‌্যাবের বিপুলসংখ্যক সদস্য ঈদকেন্দ্রিক নিরাপত্তায় মাঠে থাকবে। এছাড়া বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তায় মাঠে থাকবে।

রাজধানী ঢাকাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি প্রতিরোধে পুলিশি টহল ও চেকপোস্ট বৃদ্ধি করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বাসস’কে বলেছেন, ঈদ উপলক্ষে সরকারি ছুটিতে বিপুল সংখ্যক মানুষ রাজধানী ছেড়ে ঘরমুখো হবেন। এ সময়ে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, অজ্ঞান ও মলম পার্টির তৎপরতা, চাঁদাবাজির আশঙ্কা রয়েছে। সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেছেন, ঈদকে কেন্দ্র করে আমাদের নিয়মিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে টহল কার্যক্রম অনেকটা বাড়িয়েছি। এছাড়া অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন ও গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।

তালেবুর রহমান বলেন, পুলিশকে সহায়তা করার জন্য ইতোমধ্যে অক্সিলারি পুলিশ নিয়োগ করা হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তারা কার্যকর ভূমিকা রাখবে। ডিএমপি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে পুলিশের গৃহীত পদক্ষেপের পাশাপাশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে নিরাপত্তা সচেতনতাবোধ তৈরি করা গেলে, সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে ও অপরাধ দমনে অধিকতর সফল হওয়া সম্ভব।

আরও পড়ুন  নববর্ষে আউটসোর্সিং কর্মীদের জন্য বড় সুখবর, জারি হলো ‘সেবা গ্রহণ নীতিমালা ২০২৫’

র‌্যাবের পক্ষ থেকেও নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখা থেকে জানানো হয়েছে, ঈদে মানুষের নিরাপত্তায় গোয়েন্দা কার্যক্রম ও টহল জোরদার করা হয়েছে। এ সময় ইউনিফর্মের পাশাপাশি সাদা পোশাকে র‌্যাব সদস্যরা তৎপর থাকবে।

র‌্যাব আরো জানিয়েছে, ঈদে নিরাপত্তায় গোয়েন্দা, ফুট প্যাট্রোল, মোবাইল প্যাট্রোল, সাইবার ওয়ার্ল্ডের নজরদারি থাকবে। এছাড়াও র‌্যাবের মোবাইল টিম মাঠে থাকবে।

ঈদুল ফিতর নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে উদযাপনের লক্ষ্যে পুলিশ নিরাপত্তা বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছে।

পরামর্শগুলোর মধ্যে রয়েছে, পর্যাপ্ত সময় নিয়ে ঈদে ভ্রমণ করা। ভ্রমণকালে নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনায় রাখা। চালককে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালাতে তাগিদ না দেয়া। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে বাসের ছাদে কিংবা ট্রাক, পিকআপ ও অন্যান্য পণ্যবাহী যানবাহনে ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকা।

রাস্তা পারাপারের ক্ষেত্রে জেব্রা ক্রসিং অথবা ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার করা। যেখানে জেব্রা ক্রসিং বা ফুট ওভারব্রিজ নেই সেখানে যানবাহনের গতিবিধি দেখে নিরাপদে রাস্তা পার হওয়া। প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা নেওয়া। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি না চালানো । অপরিচিত কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে খাবার কিংবা পানীয় গ্রহণ থেকে বিরত থাকা।

বাস মালিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে অদক্ষ, অপেশাদার, ক্লান্ত বা অসুস্থ চালককে যাত্রীবাহী বাস ও গাড়ি চালাতে না দেয়ার কথা বলা হয়েছে।

ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় বের না করা এবং চালক যাতে নিয়ম মেনে গাড়ি চালায় এবং ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেকিং না করে সেজন্য চালককে নির্দেশ দেয়ার কথা বলা হয়েছে।

একইসঙ্গে লঞ্চ/স্টিমার/স্পিডবোটের যাত্রীদের প্রতি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে নৌযানে না উঠা, নৌযানের ছাদে যাত্রী হয়ে ভ্রমণ না করা, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌযানে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ট্রেন যাত্রীদের প্রতি ট্রেনের ছাদে, বাফারে, পাদানিতে ও ইঞ্জিনে ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন  শাবনূরের কষ্ট ও প্রশান্তি

সূত্র-বাসস

WhatsApp
Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
Telegram