কাশ্মিরে ২৬ বেসামরিক হ’ত্যা’র জবাব: অভিযানে তিন জঙ্গি নি’হ’ত

কাশ্মিরের পেহেলগামে ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত তিন জঙ্গিকে হত্যার দাবি করেছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদে বলেন, ‘অপারেশন মহাদেব’-এ শ্রীনগরের দাচিগাম পাহাড়ি বনে তিন জঙ্গিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। অভিযানে নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় সুলেমান শাহ, আফগান ও জিবরান হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এদের সবাই পাকিস্তানি নাগরিক এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়্যবা (LET)-র সদস্য বলে দাবি করেন তিনি।
পেহেলগাম গণহত্যার পেছনের গল্প ২০২৪ সালের ২২ এপ্রিল পেহেলগামে এক নারকীয় হামলায় ২৬ জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন হিন্দু পর্যটক। হামলাটি ঘটে তাদের পরিবারের সামনেই। একজন স্থানীয় মুসলিম ঘোড়াচালক, যিনি পর্যটকদের সাহায্য করতে গিয়েছিলেন, তাকেও গুলি করে হত্যা করা হয়।
ভারতীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ জানায়, হামলার আগে স্থানীয় দুই ব্যক্তি ওই তিন জঙ্গিকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তারা গ্রেফতার হন এবং স্বীকার করেন, তারা পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
অস্ত্র ও ফরেনসিক প্রমাণ অমিত শাহ বলেন, অভিযানে মার্কিন এম-৯ রাইফেল এবং দুটি একে-৪৭ উদ্ধার করা হয়েছে। চণ্ডীগড়ের কেন্দ্রীয় ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষায় প্রমাণ মেলে যে, এসব অস্ত্র দিয়েই ওই ২৬ জনকে হত্যা করা হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, “ছয়জন বিজ্ঞানী ভিডিও কলে নিশ্চিত করেছেন—এই অস্ত্রগুলোর গুলিই হামলায় ব্যবহৃত হয়েছে।”
🇮🇳 ভারতের প্রতিক্রিয়া ও সীমান্ত উত্তেজনা হামলার পর ভারত ও পাকিস্তান সীমান্তে কয়েক দিনের সামরিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এতে বেশ কয়েকজন হতাহত হন। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হয়।
বিরোধীদের সমালোচনা ও প্রশ্ন ভারতীয় পার্লামেন্টে বিরোধীদল কংগ্রেস প্রশ্ন তোলে কেন এত দেরিতে হামলাকারীদের শনাক্ত করা হলো। এমপি গৌরব গগৈ বলেন, “১০০ দিনের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও কেন এত দেরিতে অভিযান হলো?” কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, “হামলার সময় নিরাপত্তা বাহিনী কোথায় ছিল?” তিনি সরাসরি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
জবাবে অমিত শাহ বলেন, “হামলার পরপরই তদন্ত এনআইএ-এর হাতে তুলে দেওয়া হয় এবং সীমান্তে কড়া নজরদারি বসানো হয়েছিল।”তবে বিরোধী দলগুলোর অনেকেই এই জবাবে সন্তুষ্ট নন। কাশ্মিরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় চরম ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা।